শুক্রবার, ২৯শে জুন, ২০১৮ ইং ১৫ই আষাঢ়, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

চা বিক্রেতার মেয়ে আঁচল হলেন যুদ্ধবিমানের পাইলট!

কিছু কিছু ঘটনা আসলেই অবাক করার মতো। যেমন এই চা দোকানদারের মেয়ে যেভাবে হলেন যুদ্ধবিমানের পাইলট। ভারতীয় বিমানবাহিনীর পাইলট হলেন চা বিক্রেতার মেয়ে। সেই অসাধ্য ঘটনাটি ঘটিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের নিমাচের ২৪ বছর বয়সী আঁচল গঙ্গওয়াল।

দেশটির বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমানের পাইলট হিসেবে ২২ জন নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হলো আঁচল গঙ্গওয়াল। আঁচলের বাবা চা বিক্রি করেন। কিন্তু আঁচলের পড়ালেখায় কোনো কমতি রাখেননি তিনি। আঁচল ছোটবেলা থেকেই স্কুলের সেরা। পড়ালেখাতেই শুধু নয়, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্কেটবল এবং ৪০০ মিটার দৌড়েও সফল তিনি।

আঁচলের সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার স্বপ্ন সেই দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়া কালীন সময় থেকে।

২০১৩ সালের উত্তরাখণ্ডে ভয়াবহ বন্যায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সে সময় নিখোঁজ হয়েছিলেন আরও সংখ্যক মানুষ। সেই ঘটনা আঁচলকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। ওই সময় আঁচল দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে। তখন সেনা জওয়ানরা যেভাবে উদ্ধার কাজ চালিয়ে ছিল, সেটাই আঁচলের জীবনের প্রেরণা হয়ে দাঁড়ায়। আর তখন থেকেই সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার দৃঢ়সঙ্কল্প শুরু হয় আঁচলের।

এরপর স্কুলের পাঠ শেষ করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডিও পার হন। তারপর চাকরির জন্য প্রস্তুতি। কিন্তু তখনও হারিয়ে যায়নি তার সেই স্বপ্ন। তিনি পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টরের চাকরিও পেয়ে যান। নিজের স্বপ্ন পূরণ হবে বিধায় চাকরিটা ছেড়ে দেন। এরপর ঘটনাচক্রে লেবার ইন্সপেক্টরের চাকরি হয় আঁচলের। এই চাকরি করার পাশাপাশি বিমানবাহিনীর পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেন তিনি।

এয়ারফোর্স কমন অ্যাডমিশন টেস্ট-এ পাস করেন আঁচল। তিনি জানান, এই পরীক্ষাটি মোটেই সহজ ছিল না। ৫ বার ইন্টারভিউ দিয়েও সাফল্য আসেনি। তবুও হাল ছাড়েননি আঁচল। ৬ বারে তিনি সফল হন। এখন তিনি ভারতীয় বায়ুসেনার একজন পাইলট।

আগামী ৩০ জুন থেকে ভারতের হায়দরাবাদে আঁচলের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। সেই সঙ্গে শুরু হবে তার স্বপ্ন পূরণ।

প্রসঙ্গত, আঁচল গঙ্গওয়ালের বাবা সুরেশ গঙ্গওয়াল নিমাচ বাসস্ট্যান্ডের সামনে একটি দোকানে চা বিক্রি করেন। তার এক ছেলে, দুই মেয়ে। ভাইবোনের মধ্যে আঁচল মেজো। সুরেশ গঙ্গওয়াল বলেন, ‘আর্থিক সংকটের মধ্যেও সন্তানদের পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছি। ঋণ নিয়ে আঁচলকে কোচিংয়ের জন্য ইনদওরে পাঠিয়েছি। বড় ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়িয়েছি।’

Print Friendly, PDF & Email