চোখ-নাক-কান দিয়ে রক্তক্ষরণের রোগী জিনাতের চিকিৎসা বাংলাদেশে কিছুটা হলেও সম্ভব
কলেজ শিক্ষার্থী জিনাতের দেহে ‘হ্যামোল্যাক্রিয়া’ নামক যে বিরল রোগ বাসা বেঁধেছে, সে রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা কিছুটা হলেও বাংলাদেশে সম্ভব। প্রখ্যাত চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ শুক্রবার বিকালে এ প্রতিবেদককে বলেন, তবে রোগীর বর্তমান অবস্থা খুব ভালমতন পর্যবেক্ষণ ও প্রচুর পরীক্ষা-নীরিক্ষা করতে হবে। আমরা যদি না পারি তাহলে বিদেশে চিকিৎসা গ্রহণে পরামর্শ দেব। এমনও হতে পারে- আমরাই তাকে সারিয়ে তুলতে পারি। রোগীকে আমার কাছে নিয়ে আসুক।
জিনাতের বাবা মামুন বিশ্বাস জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসা গ্রহণে সুফল আসেনি। ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে পরীক্ষার মাধ্যমে ধরা পড়ে হ্যামোল্যাক্রিয়ার বিষয়টি। তিনি আরও জানান, জিনাতের চোখ-নাক-কান এমনকি নাভি দিয়েও রক্ত বের হয়। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারায় জিনাত। দিনে ৪-৫ বার এমন ঘটনা ঘটে।
অধ্যাপক শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যেহেতু আমি এখনও দেখিনি, সেহেতু বলতে পারছি না মেয়েটি হ্যামোল্যাক্রিয়ায়-ই আক্রান্ত কি-না। কেননা লিউকোমিয়া, রাইনোস্পেরোসিসসহ কিছু রোগ আছে, যাতে আক্রান্ত হলে চোখসহ দেহের বিভিন্ন স্থান দিয়ে দিয়ে রক্ত বের হতে পারে। আবার চোখ দিয়ে মাঝে মধ্যে পানি ও মাঝে মধ্যে রক্ত বের হতে পারে।
আরও : ২৫ বছরে যেসব টুর্নামেন্টে ব্যর্থ হয়েছে আর্জেন্টিনা
প্রখ্যাত জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা কেন্দ্রের প্রাক্তন পরিচালক ড. মাহমুদুর রহমান বলেন, এটা আসলে হিমোফিলিয়া-ই। পার্থক্য হলো- চোখ দিয়ে রক্ত বের হওয়া। এজন্যই এটাকে হ্যামোল্যাক্রিয়া বলা হয়।
প্রশ্ন করা হলে প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ বলেন, এটা খুব বিরল রোগ। এটা সম্পর্কে আসলে আমাদের খুব একটা ধারণা নেই। এ কেস তো সচরাচর পাওয়া যায় না। ভালমতন পড়াশোনা করে মন্তব্য করতে হবে।
বর্তমানে জিনাত আছেন নানার বাসা নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানাধীন পাগলা এলাকায়। নারায়ণগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী জিনাতের বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়ায়। কলেজ হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করেন তিনি।