শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫ম দিনের অনশনে ১১ জন হাসপাতালে
দফায় দফায় বৃষ্টিতে ভিজে টানা ৫ম দিনের মতো শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি চালাতে গিয়ে ১১ জনকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করতে হয়েছে। এ ছাড়াও ৯২ জন শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে ৬৯ জনকে স্যালাইন দেয়া হয়েছে। স্বীকৃতপ্রাপ্ত নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচির শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণ রায় শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছেন।
ড. বিনয় ভূষণ রায় গণমাধ্যমকে জানান, সংসদে বাজেট পাশ হয়েছে। যদি আমাদের দাবি মেনে না নেয়া হয় তাহলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে। যত ঝড়-তুফান আসুক না কেন আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব। অনশনে অংশ নেয়া শিক্ষকরা বলেন, তারা ১৫ থেকে ২০ বছর যাবত সারাদেশে পাঁচ হাজারের অধিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থীকে বিনা বেতনে পাঠদান দিয়ে আসছেন। অনেকের চাকরির মেয়াদ আছে ৫-১০ বছর। বেতন-ভাতা না পাওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীরা অত্যন্ত কষ্টকর ও মানবেতর জীবনযাপন করছেন। গত ১২ জুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (স্কুল-কলেজ) এর জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা ২০১৮ জারি করা হয়েছে।
এই নীতিমালা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পাঠদান অনুমতি ও স্বীকৃতির সময় আরোপিত শর্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। চলতি ২০১৮-১৯ বাজেটে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দের কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা নেই। যার ফলে নন-এমপিও শিক্ষক কর্মচারীর অত্যন্ত হতাশ ও আশাহত হয়ে পড়েছেন। এ অবস্থায় মহামান্য রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপে সারাদেশের নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একযোগে এমপিওভুক্তি হলে সকলেই সন্তুষ্ট চিত্তে বাড়ি ফিরে যাবে। এর আগে এমপিওভুক্তির দাবিতে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ডাকে টানা ওই অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে গত ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীরর পক্ষ থেকে তার তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে তাদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন।
এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়েছে আসন্ন অর্থ বছরে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেন, সেখানে নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি বলে জানান তারা।