লন্ডন থেকে নিউ ইয়র্ক পৌঁছে দেবে ২ ঘণ্টায় হাইপারসনিক বিমান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আর হয়তো কিছুদিনের অপেক্ষা। অবিশ্বাস্য বিষয়গুলো জেনো সত্যি হয়ে হাতে ধরা দেবে। মানুষ শব্দের চেয়েও পাঁচগুণ দ্রুতগতিতে পাড়ি দিতে পারবে আকাশপথে। অ্যাটলান্টিক মহাসাগর পেরিয়ে নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডন পৌঁছে যাওয়া যাবে মাত্র ২ ঘণ্টায়! এছাড়া এই বিমান পৃথিবীর যেকোনও জায়গায় আপনাকে পৌঁছে দেবে মাত্র তিন ঘণ্টায়। অবিশ্বাস্য মনে হলেও সত্যি এমনটা হতে চলেছে আগামী দিনগুলোতে।
এমনই অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিমান নিয়ে আসতে চলেছে বোয়িং। এই যাত্রীবাহী বিমানের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় প্রায় তিন হাজার আটশ মাইল। বোয়িং’র পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখনও এর ডিজাইন প্রাথমিক স্তরেই রয়েছে । খবর সিএনএন।
দি বোয়িং একটি অ্যামেরিকান মাল্টিনাশানাল করপোরেশন কোম্পানি। যারা বিমান, রোটোরক্রাফট, রকেট তৈরি এবং বিক্রয় করে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমান উৎপাদক এই সংস্থাটির মুখপাত্র ব্রায়ানা জ্যাকসন বলেন, এটি প্রাথমিক স্তরেই রয়েছে। পুরো প্রকল্পটি শেষ হতে বেশ সময় লাগবে।
ব্রায়ানা জ্যাকসন ই-মেইলে সিএনএনকে জানায়, পরিকল্পনাটি বাস্তবে রূপ নিতে সময় লাগতে পারে ২০ থেকে ৩০ বছর।
সেনাবাহিনী ও সাধারণ মানুষ, উভয়ের কাজেই এই বিমান ব্যবহৃত হতে পারে। অ্যাটলান্টায় আয়োজিত অ্যামেরিকান ইনস্টিটিউট অফ অ্যারোনটিকস অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোনটিকস-এর বার্ষিক কনফারেন্সে এই বিমানের কথা জানান বোয়িং-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট নাভিদ হুসেন।
আরও : ২৫ বছরে যেসব টুর্নামেন্টে ব্যর্থ হয়েছে আর্জেন্টিনা
এর আগে ১৯৭৫ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ এবং এয়ার ফ্রান্সের হয়ে আকাশে উড়ত যাত্রীবাহী সুপারসনিক বিমান কনকর্ড। কিন্তু এর খরচ অত্যন্ত বেড়ে যাওয়ায় ২০০৩ থেকে এই বিমান বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকেই বন্ধ সুপারসনিক বিমান সফর। রয়টার্সের নিউজ আর্কাইভ অনুযায়ী, নিউ ইয়র্ক থেকে লন্ডন ২ ঘণ্টা ৫২ মিনিট ৫৯ সেকেন্ডে পাড়ি দিয়েছিল এই প্লেন।
এদিকে একই সময়ে আরেকটি সুপারসনিক বিমান নিয়ে বাজারে প্রতিযোগিতায় নামছে ইউরোপিয়ান এয়ারক্রাফট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘এয়ারবাস’ এবং আমেরিকান ফার্ম ‘এরিওন’। প্রতিষ্ঠান দুটি যৌথভাবে নতুন জ্বালানি সাশ্রয়ী একটি বিমান তৈরি করতে যাচ্ছে।
‘এরিওন এএস২’ (AS2) নামের এই সুপারসনিক বিমানটি যাত্রী বহন করতে পারবে মাত্র ১২ জন। আর এর গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ১২১৭ মাইল (যা কিনা সুপারসনিক কনকর্ডের প্রায় কাছাকাছি । কনকর্ডের ঘণ্টায় গতিবেগ ছিল ১৩৫০ মাইল)। দ্রুতগামী এই বিমান আপনাকে মাত্র ৩ ঘণ্টায় নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন আর মাত্র ৬ ঘণ্টায় লস এঞ্জেলস থেকে টোকিও নিয়ে যেতে পারবে।
এএস-২ যেহেতু তার উড্ডয়নের বেশিরভাগ সময় সমুদ্রের উপরেই কাটাবে তাই এর তীব্র শব্দ নিয়ে নির্মাতারা চিন্তিত নয়। তারা বরং জ্বালানি সাশ্রয়ের দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন। এই বিমানের ডানাগুলো যেভাবে ডিজাইন করা হয়েছে তাতে বাতাসের বাধা ২০ শতাংশ কমে যাবে।
এএস২ এর নির্মাতারা ২০২২ সাল নাগাদ তাদের প্রথম প্লেন উড়াতে পারবে বলে ধারণা করছেন। অন্যদিকে লকহিড মার্টিন ২০২৫ সালের মধ্যে তাদের প্রথম এন+২ বাজারে ছাড়তে পারবে বলে আশা করছেন।