শুক্রবার, ২৯শে জুন, ২০১৮ ইং ১৫ই আষাঢ়, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

একটি আমের দাম দেড় হাজার টাকা!

কটি কোহিতুর আম খাওয়ার জন্য খরচ করতে হবে দেড় হাজার টাকা। বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজ উদ-দৌলার রাজত্বকালে শুধুমাত্র রাজবংশীয়রা এই আম খাওয়ার অধিকার পেতেন। এবার সেই আমকেই পশ্চিমবঙ্গ সরকার ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) তকমা দেওয়ার চেষ্টা করছে।

দুর্লভ কোহিতুর প্রজাতির আম গাছ রয়েছে শুধুমাত্র ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে। নয়াদিল্লির জনপথে পশ্চিমবঙ্গের হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যোগে আম উৎসব চলছে। সেখানেই এই দুর্লভ আম প্রদর্শিত হচ্ছে। খবর মানিকন্ট্রোল।

অষ্টাদশ শতকে নবাব সিরাজ উদ-দৌলার রাজত্বকালে এই আমের কথা প্রথম জানা যায়। এই আমের যত্নআত্তিটাও রাজকীয়। আমটি এতই নাজুক যে তা তুলার ওপর রেখে যত্ন সহকারে কাটতে হয়, নয়তো মুহূর্তের মাঝেই তা গলে যেতে পারে।

বনদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা করতে সেই আম সবসময় নিরাপত্তায় ঘেরা থাকত। আর আম খাওয়ার সুযোগ পেতেন শুধুমাত্র রাজ পরিবারের সদস্যরাই।

তবে বর্তমান সময়ে নবাব ছাড়াও প্রচুর মানুষ এই আম কেনার ক্ষমতা রাখেন; সে কথা মাথায় রেখে মুর্শিদাবাদের এই নবাবী আমকে জিআই (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন বা ভৌগোলিক নির্দেশক) দেওয়ার চেষ্টা করছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।

মুর্শিদাবাদ জেলার হর্টিকালচার সেন্টারের উপ-পরিচালক গৌতম রায় বলেন, ‘আমরা এই বিশেষ এবং দুর্লভ আমকে ভৌগোলিক নির্দেশক হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি।’

নয়াদিল্লির জনপথে পশ্চিমবঙ্গের হর্টিকালচার সেন্টারের উদ্যোগে আম উৎসব চলছে। সেখানেই এই দুর্লভ আম প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রথম দিকে এই আমের ১৪৮ টি ভ্যারাইটি বা প্রকার ছিল। বর্তমানে মাত্র ৪২টি প্রকার রয়েছে।

গৌতম রায় বলেন, ‘সিরাজ উদ-দৌলা আমের বড় গবেষক ছিলেন। তিনি পুরো দেশ থেকে বিভিন্ন ধরনের আম গাছের চারা সংগ্রহ করে মুর্শিদাবাদে রোপণ করতেন। পরে এসব গাছের সঙ্গে মিলিয়ে নতুন প্রজাতির আম গাছ তৈরি করতেন। তার এই কাজে কিছু খাস লোকও নিয়োগ করেছিলেন, যারা আকবরের নবরত্ন হিসেবে সম্মান পেতেন। আর সেই সময়ই তিনি কোহিতুর আম আবিষ্কার করেছিলেন।’

Print Friendly, PDF & Email