৫০ বছর পর কেন মাটি খুঁড়ে বের করা হলো গাড়িটি?
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমার অঙ্গরাজ্যটির স্বীকৃতির সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে একটি টাইম ক্যাপসুল তৈরির সিদ্ধান্ত হয় ১৯৫৭ সালে। তখনকার জনপ্রিয় সেডান গাড়ি ‘প্লাইমাউথ বেলভেডিয়ার’কেই বেছে নেয়া হয় টাইম ক্যাপসুল হিসেবে। গাড়িটির নাম দেয়া হয় ‘মিস বেলভেডিয়ার’। খবর আনন্দবাজার।
অঙ্গরাজ্যটির টালসা শহরের একটি আদালতের সামনের লনে সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই করা একটা ভল্টে ভালো করে প্লাস্টিক দিয়ে মুড়ে ভরে রাখা হয় সোনালি রঙের গাড়িটিকে। এর সঙ্গে রেখে দেয়া হয় ১৯ লিটার গ্যাসোলিন ও বিয়ারসহ বেশকিছু জিনিসপত্র।
৫০ বছর পর ২০০৭ সালের জুনে গাড়িটাকে মাটি খুঁড়ে বের করার সিদ্ধান্ত হয়। যিনি শহরটির ২০০৭ সালের জনসংখ্যা অনুমান করে বলতে পারবেন, গাড়িটির মালিক হবেন তিনি। বোনাস হিসেবে সঙ্গে একটা ১০০ ডলারের সেভিংস অ্যাকাউন্টের মালিকানা। ৫০ বছরে এর যা মূল্য হবে, সেই পরিমাণ অর্থ পাবেন তিনি।
প্রায় ১৮ মাস ধরে খননের প্রস্তুতি নেয়া হয়। পঞ্চাশ বছর পর গাড়িটি কেমন দেখাবে তা নিয়ে সবার কৌতূহল ছিল। মাটি খুঁড়তেই দেখা যায় ভল্ট পানিতে ভরে গেছে। দিনের পর দিন পানি চুইয়ে চুইয়ে প্রায় ৭৬০০ লিটার পানি জমেছে। শেষমেশ পানি সরিয়ে গাড়িটাকে বের করা হয়।
এক জমকালো অনুষ্ঠানে গাড়িটাকে উন্মোচন করা হলে সবাই হতাশা হয়! প্লাস্টিকের আবরণ খুলতেই দেখা যায় গাড়িটিতে জং ধরেছে। অবস্থা এতটাই শোচনীয় যে মিস বেলভেডিয়ার আর কোনোভাবেই চলার উপায় ছিল না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রেমন্ড হামবার্টসন নামে যে ব্যক্তি অনেকটাই অনুমান করতে পেরেছিলেন শহরটির জনসংখ্যা, তিনি ১৯৭৯ সালে মার গেছেন। ৫০ বছরে সেই সেভিংস অ্যাকাউন্টের ১০০ ডলার বেড়ে হয়েছে প্রায় ৬৬৭ ডলার। শেষমেশ হামবার্টসনের দূরসম্পর্কের এক আত্মীয়কে সব পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
পরে মিস বেলভেডিয়ারকে আগের চেহারায় ফেরানোর দায়িত্ব নেয় একটি বেসরকারি সংস্থা। কিন্তু দুই বছর ধরে জং ছাড়িয়েও বিশেষ উন্নতি হচ্ছে না দেখে কাজ থামিয়ে দেয় সংস্থাটি। দশ বছর ধরে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যে কাটিয়ে শেষমেশ ২০১৮ সালে মিস বেলভেডিয়ারের জায়গা হয়েছে ইলিনয় প্রদেশের রস্কো শহরের একটি গাড়ির মিউজিয়ামে।