গণভবনের ভেতরে নেতারা, বাইরে মানববন্ধন কর্মীদের
ড. কামালের নেতৃত্বে সংলাপে আমন্ত্রণ পাওয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ২১ সদস্যের প্রতিনিধি দল গণভবনে পৌঁছেছে। তবে গণভবনের বাইরে সংলাপ অর্থবহ করতে ঐক্য প্রক্রিয়ায় নেতাকর্মীরা মোববাতি নিয়ে মানববন্ধন করছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গণভবনের সামনে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।মোমবাতি হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একজন বলেন, আমার চাই দেশে শান্তি ফিরে আসুক। সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করে নির্বাচন হোক। কোন প্রকার হরতার, অবরোধ করে যেন দেশকে অস্থিতিশীল করা না হয়।
অপর একজন বলেন, অনেক প্রতিক্ষার পর অবশেষে সংলাপ হচ্ছে। এই সংলাপের মাধ্যমে যেন দেশে স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করে।এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের গণভবনে ঢুকতে দেখা যায়। এদের মধ্যে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, আ স ম আব্দুর রব, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, সুব্রত চৌধুরী, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রমূখ। এ সময় সংলাপে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদেরও গণভবনে প্রবেশ করতে দেখা যায়।
এর আগে বিকাল ৫টা ২০ মিনিটে ড. কামালের বেইলি রোডের বাসা থেকে রওনা দেন ঐক্যফ্রন্ট নেতারা। তার আগে ড. কামালের বাসায় বৈঠক করেছেন তারা। মোট ১০টি গাড়িতে করে ঐক্যফ্রন্ট নেতারা শান্তিনগর হয়ে গণভবনের উদ্দেশে রওনা হন। প্রথমেই ছিল ড. কামালের গাড়ি, এরপর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্যান্য নেতাদের গাড়ি।
সংলাপের জন্য ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে ১৬ জনের নামের তালিকা পাঠানো হয় আওয়ামী লীগকে। এর মধ্যে বিএনপির পাঁচ প্রতিনিধি হলেন— মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার ও মির্জা আব্বাস। তাদের সঙ্গে থাকছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না ও এস এম আকরাম; গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ও প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরী; জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতন ও সহসভাপতি তানিয়া রব; ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মনসুর ও আ ব ম মোস্তফা আমিন এবং স্বতন্ত্র হিসেবে থাকছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
সংলাপের আড়াই ঘণ্টা আগে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ১৪ দলের সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে শেষ মুহূর্তে যোগ করা হয় আরও পাঁচজনের নাম।নতুন যোগ হওয়া পাঁচ জনের মধ্যে দু’জন বিএনপির ও তিন জন গণফোরামের। বিএনপির দুই নেতা হলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। অন্যদিকে, গণফোরামের তিন জন হলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিকুল্লাহ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ১৪ দলের পক্ষে সংলাপে অংশ নিয়েছেন- ওবায়দুল কাদের, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফর উল্লাহ, দিলীপ বড়ুয়া, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইন, মাঈনুদ্দিন খান বাদল, অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন, মাহাবুব-উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুল মতিন খসরু, আব্দুর রহমান, ড. আবদুস সোবহান গোলাম, ড. হাছান মাহমুদ ও অধ্যাপক শ. ম. রেজাউল করিম।
এই ২১ নেতার মধ্যে আওয়ামী লীগের ১৭ জন, জাসদের দুইজন, সাম্যবাদী দলের একজন এবং ওয়াকার্স পার্টির একজন।গত ২৮ অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংলাপের জন্য চিঠি দিলে পরদিন ২৯ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান, তারা সংলাপে বসতে রাজি। ৩০ অক্টোবর সকালে সংলাপের দিনক্ষণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চিঠি নিয়ে দলের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ যান ড. কামালের বাসায়।