মোবাইল কেসের ছবি থেকে নিখোঁজ ব্যাক্তির সন্ধান জানা গেলে যেভাবে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গত ২৯ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ার বিধ্বস্ত লায়ন এয়ার বিমান ও তার আরোহীদের খোঁজে জাভা সাগর চষে বেড়াচ্ছেন উদ্ধারকারীরা। অনেক ডুবুরি সাগরের তলদেশে ডুব দিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছেন যদি কোন একটি ক্লু খুঁজে পাওয়া যায় এই আশায়। এজন্যে পানির নিচে ড্রোন এবং শব্দ সনাক্তকারী যন্ত্র দিয়েও অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিমানটির কোন খোঁজ পাওয়া যায় নি। বিবিসির বাংলার এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
তবে উদ্ধারকারীরা ইতোমধ্যেই জাভা সাগরের বুক থেকে কিছু ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করেছেন। এর মধ্যে আরোহীদের ব্যবহার করা কিছু ব্যক্তিগত জিনিসও রয়েছে।
উদ্ধারকরা এসব ব্যক্তিগত সামগ্রীর ছবি তোলেন ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা। এর মধ্যে একটি ছবি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে সোশাল মিডিয়াতে। ওই ছবিটিতে ছিল একটি মোবাইল ফোনের কেস।মোবাইল ফোনের ওই কেসটিতে ছাপানো এক ছবিতে দেখা যায় এক দম্পতি হাত ধরাধরি করে একটি সেতুর ওপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। কিন্তু সমস্যা হলো ওই ছবিটি দম্পতিদের পেছন থেকে তোলার কারণে তাদের মুখ দেখা যাচ্ছে না। ফলে তারা কারা সেটা বোঝার কোন উপায় ছিল না।
সোশাল মিডিয়াতে যে ছবিটি ভাইরাল হয় তাতে মোবাইল ফোনের ওই কেসের পাশেই ছিল কালো রঙের একটি ব্যাগ এবং কিছু বোর্ডিং পাসের টুকরো।সোমবার ১৮৯ জন যাত্রী নিয়ে লায়ন এয়ারের ওই বিমানটি বিধ্বস্ত হয় এবং সেদিনই দিনের আরো পরের দিকে উদ্ধার করা এসব সামগ্রীর এই ছবিটি ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ মোকাবেলা সংস্থার একজন কর্মকর্তা টুইটারে শেয়ার করেছিলেন।
জাকার্তা থেকে উড়ান শুরু করার কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিমানটি নিখোঁজ হয়ে যায় এবং সেটি জাভা সাগরে বিধ্বস্ত হয়। ধারণা করা হচ্ছে যে, আরোহীদের সবাই হয়তো মারা গেছেন।ধারণা করা হয়- মোবাইল কেস, কালো ব্যাগ, বোর্ডিং পাস এসব হয়তো হতভাগ্য ওই যাত্রীদেরই, কিন্তু এসবের মালিক কারা সেটা জানা সম্ভব হচ্ছিল না।কিন্তু সোশাল মিডিয়াতে ছবিটি ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পর লোকজন এসব জিনিসপত্রের মালিককে খুঁজে বের করতে তৎপর হয়ে ওঠে।
মোবাইল কেসে দম্পতির ছবির সূত্র ধরে তাদেরকে চিহ্নিত করার চেষ্টা শুরু হয়ে যায় ইন্টারনেটে।এজন্যে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি। খুব দ্রুতই মোবাইল কেসের দম্পতির ছবিটি পাওয়া যায় ইন্সটাগ্রামে। দেখা যায় এই ছবিটি ইনে ইওনিতা সাভিত্রি নামে এক নারীর।মিস সাভিত্রি বিমানের আরোহী ছিলেন না কিন্তু ছিলেন তার স্বামী ওয়াজো নোগ্রোহানতরো। এবং জানা গেল ওই ফোন কেসটি আসলে তারই।
তারই এক আত্মীয় এন্টোনিয়াস হারতোনো বলেছেন, তার মায়ের কাছে শুনেছেন যে তার এক আঙ্কেল ওই বিমানে ছিলেন। তখনই তিনি ফোন কেসের ছবিটি ধরে তাকে চিনতে পারেন।তিনি বলেন, “আমি যখনই ছবিটি দেখি আমার খুব খারাপ লাগে। আমি বুঝতে পারি তার স্ত্রী এবং সন্তানদের মনের কী অবস্থা!”তিনি বলেন, মাত্র সপ্তাহ-খানেক আগে ওই আত্মীয়ের সাথে একটি অনুষ্ঠানে তার দেখা হয়েছিল। “কিন্তু এর মধ্যেই যে এরকম হয়ে যাবে” তিনি সেটা ভাবতেও পারেন নি!
সুত্র : বিবিসি বাংলা