অ্যাম্বুলেন্সে লাশ, তবুও দয়া হয়নি শ্রমিকদের
সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনের দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও সারা দেশে দূরপাল্লার বাস ও পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।পরিবহন বন্ধ রাখায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বড় শহরগুলোতে অব্যাহত রয়েছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। পাশাপাশি শ্রমিকদের ডাকা ধর্মঘটে চলছে নৈরাজ্য।
রোববার ধর্মঘটের প্রথম দিন মৌলভীবাজারে অ্যাম্বুলেন্স আটকানোর ফলে এক শিশুর মৃত্যু, নারায়ণগঞ্জে শিক্ষার্থীর গায়ে পোড়া মবিল, ঠাকুরগাঁওয়ে পোড়া মবিলের হোলি খেলার ক্ষোভের মধ্যে সোমবারও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন স্থানে অ্যাম্বুলেন্স এমনকি বরযাত্রীর গাড়ি আটকানোর ঘটনা ঘটেছে।
দুপুরে মৌলভীবাজারের মোকাম বাজারে অসুস্থ শিশু বহনকারী একটি ভ্যান আটকে দেয় পরিবহন শ্রমিকরা। এ সময় শিশুর বাবা ভ্যানটি ছেড়ে দিতে শ্রমিকদের কাছে অনেক আকুতি-মিনতি করে। কিন্তু এতে বিন্দুমাত্র দয়া হয়নি শ্রমিকদের। একপর্যায়ে ভ্যানের চাকা পাংচার করে চলে যায় তারা।বিকেল ৩টার দিকে হবিগঞ্জের বাহুবল থানার মিরপুরে ঢাকা থেকে সিলেটগামী একটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখে শ্রমিকরা। গাড়িতে লাশ আছে দেখার পরও দয়া হয়নি তাদের। দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা আটকে রাখা হয় অ্যাম্বুলেন্সটি। পরে সাংবাদিক ও স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধে অ্যাম্বুলেন্সটি যেতে দেয় শ্রমিকরা।
এ বিষয়ে বাহুবল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুক আলী জাগো নিউজকে বলেন, এমন কোনো ঘটনার খবর আমরা পাইনি। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য মিরপুরসহ বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছে পুলিশ। তবে দু’একটি স্থানে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটতে পারে।এর মধ্যে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের মতিগঞ্জে বরযাত্রীবাহী গাড়ির বহর আটকে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। অনেক অনুরোধ করলেও বরযাত্রীবাহী গাড়ি ছাড়েনি শ্রমিকরা। দেড় ঘণ্টা পর তাদের গাড়ি ছাড়া হয় বলে জানান বরযাত্রীরা।
এদিকে, শ্রীমঙ্গল উপজেলার মৌলভীবাজার সড়কের ৬নং পুলের সামনে দুপুর ১টার দিকে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন পরিবহন শ্রমিক অনেক রিকশা আটকে রেখেছে। চালকদের কাছ থেকে ২০-৫০ টাকা করে নিয়ে রিকশা ছাড়ছে তারা। খবর পেয়ে পুলিশের গাড়ি ঘটনাস্থলে এলে শ্রমিকরা রাস্তা ছেড়ে চলে যায়।
রিকশাচালক জলিল বলেন, মৌলভীবাজার সড়ক দিয়ে রিকশা চালিয়ে শ্রীমঙ্গল শহরে আসার সময় ৬নং পুলে এলে আমার রিকশা আটকায় শ্রমিকরা। এ সময় অনেকের রিকশা আটকে চাকা পাংচার করে দেয়া হয়। পরে আমরা কয়েকজন ৩০-৫০ টাকা করে শ্রমিকদের দিলে রিকশা ছেড়ে দেয়।বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন সিলেট বিভাগীয় কমিটি সহ-সভাপতি সঞ্জিত কুমার দেব বলেন, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ব্রিগেড, প্রশাসনিক গাড়ি, ওষুধের গাড়ি, বিদেশি পর্যটকদের গাড়ি ধর্মঘটের আওতামুক্ত আছে। কেউ যদি এসব গাড়ি আটকায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।