কিশোরীকে অর্ধনগ্ন করে গ্রাম ঘোরানো হলো!
---
অনলাইন ডেস্ক : ১৬ বছর বয়সী এক কিশোরীকে অর্ধনগ্ন করে গ্রাম ঘোরানো হয়েছে। একদল সশস্ত্র যুবক এ ঘটনা ঘটায়। ওই কিশোরীর ভাইয়ের সঙ্গে সশস্ত্র যুবকদের পরিবারের এক নারীর সঙ্গে গোপন সম্পর্ক ছিল—তার প্রতিশোধ নিতে এমনটা করা হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানে। খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের ডেরা ইসমাইল খান শহরের ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) পশ্চিমে চৌধাওয়ানের প্রত্যন্ত এলাকায় ওই কিশোরীর পরিবারের বসবাস। গত সপ্তাহে এ ঘটনা ঘটলেও গত বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়। এরই মধ্যে পুলিশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বরাত দিয়ে বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, সশস্ত্র যুবকদের পরিবারের এক নারীর সঙ্গে ওই কিশোরীর ভাইয়ের গোপন সম্পর্ক ছিল। এর শোধ নিতেই ওই কিশোরীর ওপর এ নির্যাতন চালানো হয়। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কিশোরীর সঙ্গে এ আচরণ করার পর গ্রামবাসীর মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে।
স্থানীয় সাংবাদিকদের ওই কিশোরী বলে, ‘আমি এবং আমার চাচাতো বোনেরা পুকুর থেকে পানি নিয়ে ফিরছিলাম। তখন ওই যুবকেরা আমাদের ধরে ফেলে। তারা আমাকে ঘিরে ধরে ধাক্কা দিলে আমি মাটিতে পড়ে যাই। তখন তারা কাঁচি দিয়ে আমার পরনের কাপড় কেটে ফেলে। আমার এক চাচাতো বোন তার দোপাট্টা দিয়ে আমাকে ঢাকার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা সেটি ছিনিয়ে নিয়ে দূরে ফেলে দেয়। তখন চাচাতো বোনেরা সেখান থেকে পালিয়ে পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নিতে যায়। আমি ছুটে গিয়ে একটি কুঁড়েঘরে আশ্রয় নিই। কিন্তু তারা আমাকে সেখান থেকে টেনে বের করে আনে। একজন প্রতিবেশী তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু তারা তাদের বন্দুক দিয়ে তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।’
কিশোরীটি আরও বলে, ‘কাছেই আমার এক চাচার বাড়ি ছিল। আমি সুযোগ বুঝে দৌড়ে সেখানে চলে যাই এবং কাপড় গায়ে দিই।’
ওই কিশোরীর মা স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানান, ‘রাস্তায় আমি কয়েকজন সশস্ত্র লোককে দেয়ালের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখি। আমি তাদের কাছে জানতে চাই, তারা আমার মেয়ের সঙ্গে কেন এমন করেছে? কিন্তু তারা আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে, উল্টো আমাকে জিজ্ঞেস করে, আমার ছেলে কোথায়।’ ওই সময় রাস্তায় তিনি তাঁর মেয়ের জামার ছেঁড়া অংশ পড়ে থাকতে দেখেন বলেও জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন বিবিসিকে জানান, তিন বছর আগের এক ঘটনার পর থেকে হামলাকারীদের পরিবারের সঙ্গে কিশোরীর পরিবারের দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। ওই কিশোরীর ভাই তখন তাদের পরিবারের একটি মেয়েকে একটি মোবাইল ফোন উপহার দিয়েছিল। সেটি তাদের গোপন যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।