এবার খালার পরকীয়ার বলি ঠাকুরগাঁওয়ের অন্তর
---
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের অন্তর ইসলাম (১৮) হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।
শনিবার ভোর রাতে বিশেষ টেকনোলজি ব্যবহার করে তাদের আটক করা হয় বলে জানান পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ।
আটককৃতরা হলেন গোয়ালপাড়া এলাকার ভূমি অফিসে কর্মরত রফিক, নিহত অন্তরের খালা লুৎফা ও অন্তরের বন্ধু শাহীন।
পুলিশ জানায়, অন্তরের খালা লুৎফার সাথে ঠাকুরগাঁও ভূমি অফিসের কর্মচারি গোয়ালপাড়া এলাকার রফিকের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ছিল। অন্তর এক সময় পরকীয়ার বিষয়টি টের পেলে তাদের অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে। ভিডিও ও মেমোরি কার্ড দিয়ে দেওয়ার শর্তে অন্তর ভূমি অফিসের কর্মচারি রফিকের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। এজন্য টাকার জন্য অন্তর রফিককে প্রায় চাপ সৃষ্টি করে।
এরই জের ধরে রফিক বৃহস্পতিবার ৫০ হাজার টাকা দেনা করে অন্তরকে দেওয়ার জন্য রাজি হয়। কিন্তু টাকা প্রদানের আগেই অন্তরকে হত্যার জন্য তার বন্ধু শাহীনের সঙ্গে পরিকল্পনা করে। রফিক অন্তরকে টাকা প্রদানের জন্য মুঠোফোনে কল দেয় রাতেই।
পরে শাহীন অন্তরকে ডেকে মুন্সিপাড়ার একটি লিচু বাগানে নিয়ে যায়। অন্তর রফিকের কথা মত লিচু বাগানে দেখা করলে প্রথমে ধারণকৃত ভিডিও ও মেমোরি কার্ড নিয়ে ৫০ হাজার প্রদান করেন।
ওই টাকা পেয়ে অন্তর চলে যেতে চাইলে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রফিক ও শাহীন তাকে পথরোধ করে গলায় ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এ সময় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অন্তর। মৃত্যুর নিশ্চিত হলে অভিযুক্ত রফিক ও শাহীন ওই ৫০ হাজার টাকা নিয়ে সটকে পড়ে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় পুলিশ লিচু বাগান থেকে যুবক অন্তরের লাশ উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ ফারহাত আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তাৎক্ষণিক হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদের নেতৃত্বে একটি বিশেষ টিম কাজ শুরু করে। অবশেষে পুলিশের বিশেষ টেকনোলজি ব্যবহার করে হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য ও অভিযুক্ত ৩ জনকে রাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদ জানান, গতকাল সন্ধায় একটি গলাকাটা লাশ পাওয়ার পরে পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমি, এএসপি সার্কেল হাসিব ও সদর থানার ওসিকে নিয়ে একটি টিম করা হয়। সেই টিম বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করি।
পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ হত্যাকাণ্ডের জড়িতদের আটকের স্বীকার করে বলেন, হত্যার মূল রহস্য পুলিশ তাৎক্ষণিক উদঘাটন করতে পেরে দক্ষতা পরিচয় দিয়েছেন। পুলিশ অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রেখেছেন বলে তিনি উল্লেখ্য করেন।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে নরসিংদীর শিবপুরে চাচি বিউটি বেগমের পরকীয়া দেখে ফেলায় পরিকল্পিতভাবে মোবাইল চুরির অপবাদ দিযে কিশোরী আজিজা বেগমকে (১২) হাত-পা বেঁধে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।