অর্থনীতি প্রতিবেদক : ২০১৪-১৫ অর্থবছরের তুলনায় ২০১৫-১৬ অর্থবছরে অর্থনীতির সব সূচকে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। এ সময়ে দেশে মাথাপিছু জাতীয় আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, আমদানি-রফতানির পরিমাণ, সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের (এফডিআর) পরিমাণ এবং রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ও পরিমাণ বেড়েছে।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকের নিয়মিত সভায় ‘সরকারের মন্ত্রণালয় ও বিভাগসমূহের ২০১৫-১৬ অর্থবছরের কার্যাবলী সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদন’ উপস্থাপন করা হয়। এ প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই প্রতিবেদন অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের প্রতিবেদন অনুমোদনের বিষয়টি জানান।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারের বিভিন্ন আর্থ সামাজিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের ফলে দেশে মাথাপিছু আয় ৭ দশমিক ০৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল এক হাজার ৩১৬ মার্কিন ডলার। আর ২০১৫-১৬ অর্থবছরে তা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৪৬৬ মার্কিন ডলারে।
এছাড়া পণ্যের বহুমুখীকরণ, সরকারের বাস্তবমুখী পদক্ষেপ ও প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদান এবং রফতানিরকারকদের নিরলস চেষ্টার ফলে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রফতানি আয় বেড়েছে ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রফতানি আয় হয়েছে ৩৪ হাজার ২৫৭ দশমিক ১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এছাড়া ২০১৫-১৬ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে এক লাখ ৭১ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা। যা আগের অর্থবছরের (২০১৪-১৫) তুলনায় ১৯ দশমিক ০১ শতাংশ বেশি।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিদেশে শ্রমশক্তি পাঠানো হয়েছে ৬ লাখ ৮৪ হাজার ৫৩৭ জনকে। যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৪৮ দশমিক ১৯ শতাংশ বেশি।
এছাড়াও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩০ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যার আগের অর্থবছরের চেয়ে ২০ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিবি) সংশোধিত বরাদ্দ ৯৩ হাজার ৮২৩ কোটি টাকার মধ্যে ৮৬ হাজার ৯৬৭ কোটি টাকা (৯৩ শতাংশ) ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের আওতায় গৃহীত সমাপ্তিযোগ্য ২৭৭টি প্রকল্পের মধ্যে ২৪৫টি প্রকল্প শেষ হয়েছে। এর ফলে আগের বছরের চেয়ে এডিবিতে ব্যয়ের পরিমাণ ৯ হাজার ৩১ কোটি টাকা বেড়েছে।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে দারিদ্র্যের হার অব্যাহতভাবে কমে ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশে এবং হত দরিদ্রের হার ১২ দশমিক ১০ শতাংশে নেমে এসেছে। এ সময়ে প্রবৃদ্ধির হার যেমন বেড়েছে, তেমনি কমেছে সামাজিক বৈষম্যও।
২০১৫-১৬ অর্থবছরে বিদ্যুতের উৎপাদন ও চাহিদার পরিমাণ উভয়ই গত অর্থবছরের তুলনায় এক দশমিক ২১৯ মেগাওয়াট বেড়েছে। ৩১ হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ বিতরণ লাইন ও ১৯৮ সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে।
আগের অর্থবছরের তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে ১৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ, লোডশেডিং কমেছে ৩২ শতাংশ এবং বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালন সিস্টেম লস ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ থেকে কমে ১৩ দশমিক ১০ শতাংশ হয়েছে।