৫ই নভেম্বর, ২০১৬ ইং, শনিবার ২১শে কার্তিক, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ


বাবার লাশটিও দেখতে পাইনি: লিটন


Amaderbrahmanbaria.com : - ০৩.১১.২০১৬

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : জাতীয় চার নেতার একজন শহীদ এএইইচএম কামারুজ্জামানকে হত্যার পর তার লাশটিও দেখতে পাননি ছেলে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। ১৯৭৫ সালে খায়রুজ্জামান লিটন ও তার ছোট ভাই কোলকাতায় থেকে পড়াশোনা করতেন। বাবার মৃত্যুর পর তাদের নিরাপত্তার কথা ভেবে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাদের দেশে ফিরতে দেয়নি। বুধবার রাতে এক সাক্ষাতকারে খায়রুজ্জামান লিটন এসব কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আমি তখন নবম শ্রেণির ছাত্র। পত্রিকার মাধ্যমে খবরটি পাই। খবর শুনে আমার ছোট ভাই কেঁদে ওঠে। আমিও কান্নায় ভেঙে পড়ি। কেউ কাউকে সান্ত্বনা পর্যন্ত দিতে পারছিলাম না। তখন কোলকাতায় আমাদের কোনো অভিভাবকও ছিলেন না। আমরা শুধু দুই ভাই। বাসায় আসতে চাইলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ আমাদের জীবনের কথা ভেবে ঝুঁকি নেয়নি। তারা আমাদের দেশে আসার অনুমতি দেয়নি। পরে ঢাকা থেকে রাজশাহীতে লাশ নিয়ে এসে দাফন করা হয়। তখনও আমাদের দেশে ফেরা হয়নি। হত্যার পর বাবার লাশটিও দেখতে পাইনি।’

লিটন জানান, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়লে তার বাবা ধানমণ্ডির একটি বাসায় আশ্রয় নেন। পাকিস্তানের দোসররা তাকেসহ চার নেতাকেই ওই বাসা থেকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাদের কারাগারে রাখা হয়। এর পর ‘৭৫ এর ৩ নভেম্বর খন্দকার মোশতাকের নেতৃত্বে তাদের তাদের কারাগারের ভেতর নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।’

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক এই মেয়র বলেন, ‘সেদিন ভোরের আলো ফোটার খানিক আগে বাবাসহ চার নেতাকে একই সেলের ভেতর নেয়া হয়। এরপর তাদের গুলি করা হয়। গুলিতে বাবা, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সঙ্গে সঙ্গেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। তাজউদ্দিন আহমেদ গুলির পরও অনেক সময় বেঁচে ছিলেন। রক্তক্ষরণের ফলে তিনিও আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে মারা যান।’

খায়রুজ্জামানের ভাষায়, ‘জেলহত্যার খুনিদের বিচার সম্পন্ন করার মধ্য দিয়েই দেশ কলঙ্কমুক্ত হবে। জেলহত্যার বিচার বর্তমানে আদালতে প্রক্রিয়াধীন। আশা করছি, দ্রুততার সঙ্গে এই বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সম্পন্ন করছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের বিচার করেছেন। জেল হত্যার বিচারও তিনি করবেন।’

১৯৭৫ সালের আজকের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি অবস্থায় হত্যা করা হয় মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনাকারী বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রিসভার সদস্য ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এএইচএম কামরুজ্জামানকে।

শহীদ কামারুজ্জামানের ছেলে খায়রুজ্জামান লিটন ২০১৩ সাল থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। তার রাজনৈতিক জীবন শুরু তৃণমূল থেকে। ১৯৮১ সালে রাজশাহী মহানগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন লিটন। ১৯৮৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগের রাজশাহী মহানগর শাখার কার্যনির্বাহী কমিটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে মহানগর অ্যাডহক কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।

২০১৪ সালে তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। এর আগে ১৯৯৬ সালে সপ্তম ও ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রর্থী হিসেবে রাজশাহী-২ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২০০৮ সালে বিপুল ভোটে রাসিকের মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদক : বিশ্বজিত পাল বাবু
চেয়ারম্যান : আলহাজ্ব নুরুজ্জামান
ঠিকানা : ৬০৩ ফুলবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563


close