মঙ্গলবার, ১০ই জুলাই, ২০১৮ ইং ২৬শে আষাঢ়, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

‘আজকে আমার ছেলে, কালকে আপনার ছেলে… এভাবেই দেশটা চলবে’

ডেস্ক রিপোর্ট : কোটা সংস্কার আন্দোলনে ছাত্রলীগের হামলায় আহত নুরুল হকের বাবা ইদরিস হাওলাদার বলেছেন, সচেতন নাগরিক হিসেবে তার ছেলে কোটা সংস্কার আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল। তাকে তার বিশ্ববিদ্যালয়ে পেটানো হয়েছে। ছেলের ওপর হামলা হামলা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আজকে আমার ছেলে, কালকে আপনার ছেলে, পরশু দিন তার ছেলে– এভাবেই দেশটা চলবে। আমরা মরে যাবো তারাই বেঁচে থাকবে।’

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে উদ্বিগ্ন অভিভাবক ও নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত সমাবেশে এভাবেই নিজের ছেলের কথা বলছিলেন নুরুলের বাবা ইদরিস হাওলাদার। এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। হামলাকারীদের বিচার ও গ্রেপ্তার ছাত্রনেতাদের মুক্তি দাবি করে সমাবেশে বক্তব্য দেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ আনু মোহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, লেখক ও নৃবিজ্ঞানী রেহনুমা আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হাসনাত কাইয়ুম, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।

পেশায় কৃষক ইদরিস বলেন, ছেলের ওপর হামলার খবর পেয়ে পটুয়াখালী থেকে তিনি ঢাকায় এসেছেন। জমি বিক্রি করে ছেলেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি করিয়েছেন। আন্দোলনে যোগ দেওয়ায় ডিবি পুলিশ নুরুকে তুলে নিয়ে যায়। এক ঘণ্টা পরে তারা তাকে ছেড়ে দেয়। নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে পেটানো হয়েছে। তার সারা শরীরে এত ব্যথা যে নিজে উঠেও দাঁড়াতে পারছে না। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

এখন গাজীপুরে একটি হাসপাতালে নুরুলের চিকিৎসা চলছে বলে তিনি জানান। ছেলের চিকিৎসার জন্য জমি বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে এসেছেন।

গত ৩০ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিল কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নেওয়ার সময় সকাল ১১টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। এসময় সংগঠনটির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হককে বেধড়ক মারধর করা হয়। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়নি বলে আন্দোলনকারীদের অভিযোগ রয়েছে। পরে আনোয়ার খান মর্ডান হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখান থেকেও তাকে মধ্যরাতে বের করে দেওয়া হয় বলে তার পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। সূত্র : ডেইলি স্টার