‘ভুল ঢাকতে হাসপাতালে ধর্মঘট ডাকা অন্যায়’
নিজস্ব প্রতিবেদক : নিজেদের ভুল ঢাকতে হাসপাতালে ধর্মঘট ডাকা আরো অন্যায়। কিছু দুর্বৃত্তের কারণে চিকিৎসা পেশা ধ্বংস হয়ে গেলে দেশের নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে মন্তব্য করেছে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ।
আজ সোমবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের আদালত অবমাননা সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিকালে বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের দ্বৈত বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে উদ্দেশ করে আদলত আরো বলেন, ডাক্তারদের অবহেলা থাকলে তাঁর যথাযথ শাস্তি হওয়া উচিত। কতিপয় দুর্বৃত্তের জন্য এই পেশা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চট্টগ্রামে ধর্মঘট ডাকা প্রসঙ্গে আদালত বলেন, নিজেদের ভুল ঢাকতে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া আরো অন্যায়। এ সময় আদালত বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থাকতে র্যাবকে কেনো অভিযান চালাতে হবে। তাহলে অধিদপ্তরের কাজ কী? এমন প্রশ্নও রাখেন আদালত।
হাইকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অমিত দাসগুপ্ত বলেন, আদালত বলেছেন যে, আমাদের পুরো ব্যবস্থাগুলো কতিপয় দুর্বৃত্তের জন্য ধ্বংস হতে চলেছে। মানুষ বিপদে পড়লে তিনজনের কাছে যায়- ডাক্তার, অ্যাডভোকেট এবং পুলিশ। কিন্তু সেই বিশ্বস্ততার জায়গায় যদি দুর্বৃত্ত প্রবেশ করে, সেই দুর্বৃত্তের কারণে মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং সাধারণ মানুষের ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের কথা বলেছেন।
চট্টগ্রামে গত ২৯ জুন শিশু রাইফা খান মারা যাওয়ার ঘটনায় ম্যাক্স হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় গঠন করা হয় দুইটি তদন্ত কমিটি। এরপরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করা তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বেরিয়ে আসে হাসপাতালটির নানা ত্রুটি বিচ্যুতির কথা।
তারপরেই গতকাল রোববার র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে ত্রুটি বিচ্যুতির অভিযোগে ম্যাক্স হাসপাতালক ১০ লাখ টাকা ও সিএসসিআর হাসপাতালকে চার লাখ টাকা জরিমানা করেন। এসব অভিযান ও জরিমানার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয় বেসরকারি হাসপাতাল মালিক ও চিকিৎসকদের সংগঠন বিএমএ। এ ধরনের অভিযান বন্ধে প্রশাসনের আশ্বাসে আজ দুপুরে ধর্মঘট সাময়িকভাবে স্থগিত করেন হাসপাতাল মালিক ও চিকিৎসকরা।
এদিকে হাসপাতালগুলো বন্ধ থাকায় গতকাল থেকে দুর্ভোগে পড়ে শত শত রোগী। ভিড় জমায় হাসপাতালগুলোর সামনে। বিশেষ করে হৃদরোগ বিভাগগুলোতে আতঙ্ক দেখা দেয়।