৭৫ লাখ টাকা ভাগাভাগি
সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ মাদিয়ার বিল। খননে বরাদ্দ ছিল এক কোটি টাকা। এক-চতুর্থাংশ কাজ করার পর পুরো টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এই টাকা মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক প্রকল্প কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
প্রকল্পের সদস্যরা জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) অর্থায়নে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির আওতায় সমিতির সদস্যদের দিয়ে খাল খনন করার নিয়ম থাকলেও এগুলো কিছুই করা হয়নি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থার সুফল ভোগ করে ফসল উৎপাদন করে লাভবান হবে। শ্রমিক কাজের বিনিময়ে অর্থ পাবে। জমির মালিকরা অনাবাদি জমি আবাদি করার সুযোগ পাবেন। কিন্তু এ যেন সবই শুভংকরের ফাঁকি।
মেহেরপুর জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সস্পাদক ও চিত্লা গ্রামের বাসিন্দা ওয়াসিম সাজ্জাদ লিখন বলেন, ‘মাদিয়ার বিল খনন প্রকল্প পুরোটা পরিবারকরণ করেছেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক। এ প্রকল্পের ১৯ জন শ্রমিক সর্দারের মধ্যে ১২ জন তাঁর রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়, একই পরিবারের চারজন এবং অন্য পরিবারের তিনজন সদস্য রয়েছে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আব্দুর রাজ্জাক কয়েক দিন আগে ২২ লাখ টাকা দিয়ে জমি কিনে রেজিস্ট্রি করেছেন। এ টাকার উৎস কী? এত টাকার মালিক তিনি কিভাবে হলেন? এগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত হলে সব দুর্নীতি বেরিয়ে আসবে।’
সমিতির সভাপতি বিকাশ মণ্ডল বলেন, ‘আমি পুতুল সভাপতি।’
ধানখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান বলেন, ‘মাদিয়ার বিল খননের নামে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করেছেন সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক। বিল খনন নিয়ে সমিতির কয়েক জন সদস্য ছাড়া বাকি কেউ কিছুই জানে না।’
অভিযুক্ত ধানখোলা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আাামি এর কিছুই জানি না।’
প্রকল্প দেখভালের দায়িত্বে থাকা এলজিইডির সহকারী প্রকৌশলী নুর আলম বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। বিল খনন করে গরিব-অসহায় মানুষগুলো শ্রমের বিনিময়ে মজুরিসহ অন্য সব সুযোগ-সুবিধা পেত তা থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে।’
গাংনী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিষ্ণুপদ পাল বলেন, ‘এ ধরনের একটি অভিযোগ শুনেছি। তবে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’