আকতার হোসেন ভুইয়া,নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা ॥ কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম বলেন বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। নাসিরনগরের এ হামলা-ভাংচুরের সাথে যারাই জড়িত তাদেরকে খোঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে। অভিযুক্তকারীদের কোন ছাড় দেয়া হবে না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পব্ত্রি কাবা শরীফ অবমাননার করে আপত্তিকর ছবি পোষ্ট করার প্রতিবাদে মিছিল চলাকালে নাসিরনগর উপজেলা সদরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান,বাড়ি ঘর ও মন্দিরে হামলা,ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় আজ মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে স্থানীয় গৌর মন্দির চত্বরে তিনি একথা বলেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্থদের মন্দির পুনঃনিমার্ণসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দেন। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীমের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী,কেন্দ্রীয় কার্য নিবার্হী সংসদের সদস্য গোলাম রাব্বানী চিনু ও মারুফা আক্তার পপিসহ চার সদস্যের প্রতিনিধিদল সকাল ১১ টার দিকে গৌর মন্দির,দত্তবাড়ি মন্দির,কালিবাড়ি মন্দির,জগন্নাথ মন্দিরসহ বিভিন্ন বাড়িঘর পরিদর্শন করেন ও আহত এবং ক্ষতিগ্রস্থ হিন্দু পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন।
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র আল-মামুন সরকার, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ নেতা এম এ করীম, উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক এটিএম মনিরুজ্জামান সরকারউপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ডাঃ রাফিউদ্দিন আহমেদ,কেন্দ্রীয় সাবেক ছাত্র নেতা ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম,শাহজাহান আলম সাজু,জেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন,যুগ্ম-সম্পাদক মইন উদ্দিন মইন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অঞ্জন কুমার দেব,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দা হামিদা লতিফ পান্নাসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।এদিকে আজ মঙ্গলবার বিকালে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার কাযালয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ১১টি মন্দিরে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নগদ পাচঁ হাজার টাকা করে ও উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ৩টি মন্দিরে দশ হাজার টাকার অনুদান তুলে দেন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোঃ রেজওয়ানুর রহমান । এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান এটিএম মনিরুজ্জামান সরকার,উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অঞ্জন কুমার দেব ও সদর ইউপি চেয়ারম্যান আবুল হাসেম উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে পবিত্র কাবা শরীফের উপর শীব মূর্তি স্থাপন করায় রসরাজ দাসের সর্ব্বোচ শাস্তি এবং নাসিরনগর হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দিরে হামলা,ভাংচুর ও নাশকতাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার বিকালে নাসিরনগর প্রেসক্লাবে তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করেছেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা’আত বাংলাদেশ উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দ।
উল্লেখ্য,ফেসবুকে আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অভিযোগে শনিবার উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের জগন্নাথ দাসের ছেলে রসরাজ দাসকে (৩০) আটক করে এলাকাবাসি ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় রাতেই রসরাজের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে মামলা করা হয়। এ ঘটনার জের ধরে রবিবার সকালে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের পাশাপাশি একদল লোক বের হয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর ও মন্দিরে হামলা ও ভাংচুর করে। এসময় হামলাকারীরা ব্যাপক লুটপাটও করে। তাদের হামলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বেশ কয়েক জন আহত হয়।খবর পেয়ে পুলিশ,বিজিবি ও র্যাব সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।