স্পোর্টস ডেস্ক : খুলনার ‘পোলা’। তিন সপ্তাহ আগে মেহেদি হাসান নামের কোনও ক্রিকেটারের নাম জানতো না বিশ্ব। সেই ডান হাতি অফ স্পিনারই একেবারে ঘোল খাইয়ে ইংল্যান্ডকে জিততে দিল না। দু’ইনিংস মিলিয়ে ১২ উইকেট। তিনিই ম্যান অফ দা ম্যাচ। লিখতে ভাল লাগছে যে এই অফ স্পিনারই পেয়েছেন সিরিজ সেরা ক্রিকেটারের সম্মান।
জেতার পর বাংলাদেশি ক্রীড়া সাংবাদিকদের জোরাজুরিতে কোনওরকমে বলেছেন, ভাবিইনি এতগুলো উইকেট পেয়ে যাব। ভেবেছিলাম, গোটা দু-তিনেক উইকেট, সঙ্গে বিশ–তিরিশ রান, সে জায়গায় যা পেয়েছি, তা একেবারে অপ্রত্যাশিত।
ভীষণ লাজুক এবং একইসঙ্গে বিনয়ী। তাই নিজেকে, এমন অসাধারণ সাফল্যের পরও গুটিয়ে রাখতে চান। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করা এই ছাত্রের মুখের দিকে তাকালেই ভাল লাগে। একেবারে নিষ্পাপ।
মেহেদী বলেছেন, ‘চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট খেলতে গিয়ে খুব নার্ভাস ছিলাম।’ দলের তিন সিনিয়র ক্রিকেটার মুশফিকুর রহমান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং সাকিব আল হাসান ওকে আশ্বস্ত করতে গিয়ে বলেছিলেন, তুই তোর মত বল করে যা। রান গেলে ভাবিস না। মনে কর আর একটা ম্যাচ খেলছিস।
এসব কথাবার্তায় আশ্বস্ত হয়ে চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে ছয় ইংলিশ ব্যাটসম্যানকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে পেয়েছিলেন একটি। মিরপুরে, পরের টেস্টে দু’ইনিংসেই ছয় উইকেট। সব মিলিয়ে দুটো টেস্ট থেকে ঝুলিতে পেলেন ১৯টি ইংলিশ ব্যাটসম্যানের উইকেট।
বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে মেহেদীকে বলা হয় ‘জুনিয়র সাকিব’। স্পিনার বলে নয়, ব্যাটিং অলরাউন্ডার বলে নয়, আগ্রাসী মানসিকতার প্রশ্নে ছোট মেহেদি এখন থেকেই সাকিবকে অনুসরণ করেছেন। কলাবাগান ক্রিকেট ক্লাব থেকে উঠে এসেছেন। কোচের নাম সোহেল। অখ্যাত কোচের হাতে অতীতে বিখ্যাত ক্রিকেটার তৈরি হয়েছেন বহু। সেই তালিকায় কোচ সোহেল এবং তার বাধ্য ছাত্র মেহেদির নাম উঠল।
টেস্ট জয়কে কেন্দ্র করে গোটা দেশে শুরু হয়েছে আনন্দের ঢেউ। সাকিব নিজে ভাল বোলিং করেছেন। উল্টোদিক থেকে মেহেদিকে খেলতে গিয়ে ইংলিশরা অস্বস্তিতে পড়েছেন। শেষ পর্যন্ত পা পিছলে প্রথম হেরে বসল ইংল্যান্ড, বাংলাদেশের কাছে। বাংলাদেশে ক্রিকেট এগোচ্ছে, নিঃশব্দে।
সূত্র : কলকাতার আজকাল পত্রিকা