সংলাপে কী মেন্যু পছন্দ? জেনে নেওয়ার পরামর্শ প্রধানমন্ত্রীর!
নিউজ ডেস্ক।। সংলাপে বসার আকাঙ্ক্ষা জানানোর ২৪ ঘণ্টা মধ্যেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, তথা খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাচ্ছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। দায়িত্বশীল সূত্র জানাচ্ছে, কেবল সংলাপে বসাই নয়, সে সময় ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সামনে তাদের পছন্দের কোন খাবার পরিবেশন করা যেতে পারে, সেটাও জেনে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
সোমবার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংলাপ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এ সময় তিনি জানান, খুব শিগগিরই ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসা হবে।
এদিকে একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ওই সংবাদ সম্মেলন শেষে দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ফোন আসে তার বিশেষ সহকারী ও দলের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপের মোবাইল ফোনে। সেই ফোনালাপেই তিনি সংলাপে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা কোন মেন্যু পছন্দ করবেন, তা জেনে নেওয়ার পরামর্শ দেন।
দলের দফতর সূত্রে জানা যায়, সংবাদ সম্মেলন শেষে আওয়ামী লীগ নেতারা কার্যালয় ছেড়ে গেলে নিজের দফতরে বসেন দফতর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রী বিশেষ সহকারী ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। হঠাৎ একটি ফোনকল তার ফোন স্ক্রিনে ভেসে ওঠে। কিছুটা তড়িৎ গতিতে সালাম দিয়ে কলটি রিসিভ করেন তিনি। কথা বলার সময় উপস্থিত সবাই বুঝে ফেলেন, ফোনের অপর প্রান্তে ছিলেন স্বয়ং দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ফোন রেখে কথপোকথনের বিষয়টি দফতরে উপস্থিত সবার সঙ্গে শেয়ার করেন আবদুস সোবহান গোলাপ। সেখানে উপস্থিত একটি সূত্র সারাবাংলাকে জানায়, গোলাপের ভাষায়— প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেনে নিতে বলেছেন, সংলাপের টেবিলে মেন্যু কী হবে।
এর আগে, সংবাদ সম্মেলনে ওবায়দুল কাদের বলেন, গতকাল (রোববার) জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে ড. কামাল হোসেনের সই করা একটি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। দলের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ তা গ্রহণ করেন। চিঠিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সংলাপ করতে চেয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, আজ (সোমবার) মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) আমাদের নিয়ে একটি অনির্ধারিত একটি বৈঠক করেন। এসময় তিনি উপস্থিত দলীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং সংলাপ প্রসঙ্গে সবার মতামত জানতে চান। অনির্ধারিত এ আলোচনায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আওয়ামী লীগ সভাপতির দরজা কারও জন্য বন্ধ নয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বলতে চাই, বঙ্গবন্ধুর কন্যার দরজা কারও জন্য বন্ধ থাকে না। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, আমরা সংলাপে বসতে রাজি।
তিনি বলেন, আমরা ও আমাদের নেত্রী ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাবে রাজি এবং তাদের সঙ্গে সংলাপে বসব।
কাদের বলেন, কারও চাপের মুখে কিংবা নতিস্বীকার করে এই সংলাপ নয়। কারণ, আমাদের পক্ষ থেকে কাউকে আমরা ডাকিনি। ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সংলাপ করতে চান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংলাপে রাজি হয়েছেন এটুকুই। খুব শিগগিরই আমরা সংলাপের সময়, স্থান ও আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো তাদের জানিয়ে দেবো।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংলাপ তফসিলের আগেই হবে।
জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফার দাবিগুলো মেনে নেওয়া হবে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়। আলোচনা তো হবে। আলোচনার রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা করুন।
এর আগে, গতকাল রোববার (২৮ অক্টোবর) জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এদিন সন্ধ্যা ৭টার পরে ঐক্যফ্রন্টের একটি প্রতিনিধি দল আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গিয়ে দলের দফতর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপের কাছে এ সংক্রান্ত দুইটি চিঠি হস্তান্তর করেন। সারাবাংলা