শুক্রবার, ২রা নভেম্বর, ২০১৮ ইং ১৮ই কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

অর্থ দিয়ে সুবিধা নিলে কী এর আয় হালাল হবে ?

ইসলাম ডেস্ক।। অর্থ দিয়ে যে কোনো ধরণের সুবিধা নেয়ার পথ ও পদ্ধতি ইসলাম কোনোভাবেই সমর্থন করে না। ইসলাম বিশেষজ্ঞদের অভিমত হলো, ধোঁকা দিয়ে প্রচলিত আইন ভেঙে কোনো সুবিধা নেয়াও ইসলামের নিষিদ্ধ বিধানের অন্তর্ভুক্ত। কারণ, এখানে ওই প্রতারকের ওপর আইন ভঙ্গ করার অভিযোগ আরোপ করা হবে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার ওপর শাস্তি বর্তাবে।

ধোঁকা ও প্রতারণা প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত হুযায়ফা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোনো মুমিনের জন্য উচিত নয় নিজেকে অপমানিত করা। সাহাবারা বললেন, কিভাবে ব্যক্তি নিজেকে অপমানিত করে? তিনি বললেন, অনুচিত বিপদে নিজেকে জড়িয়ে ফেলার মাধ্যমে।’ – তিরমিজি ও ইবনে মাজাহ

যে সব লোক মিথ্যা কথা বলে কোনো দেশে আশ্রয়গ্রহণ করে বিংবা কোনো অফিস-আদালত থেকে সুবিধা নেয়- তা গ্রহণ করা জায়েজ নয়। কারণ হারাম পন্থায় তা অর্জন করা হয়েছে। কেননা মিথ্যা বলা জায়েজ নয়, কাউকে ধোঁকা দেয়া জায়েজ নয়। সুতরাং এগুলোর মাধ্যমে অর্জিত অর্থও জায়েজ নয়।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা পরস্পরের সম্পদকে অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, তবে ব্যবসায়িক পদ্ধতিতে পারস্পরিক সন্তুষ্টচিত্তে হলে সেটা ভিন্ন কথা।’ -সূরা আন নিসা : ২৯

পবিত্র কোরআনে আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা মুর্তিপূজার নোংরামী থেকে বাঁচো এবং মিথ্যা কথা থেকে বাঁচো।’ –সূরা হজ : ৩০
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে আমার উম্মতের ওপর অস্ত্র উঁচু করে সে আমার উম্মতভুক্ত নয়, আর যে আমাদের সাথে ধোঁকাবাজী করে সেও আমার উম্মতভুক্ত নয়।’ -সহিহ মুসলিম

এ বিষয়ে একটি প্রশ্ন উত্থাপিত হয় যে, মিথ্যা ঘোষণা কিংবা তথ্য দিয়ে কোনো সুবিধা অথবা চাকুরি নেয়ার পর তাকে যদি কোনো হালাল কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়, আর সে কাজের বিনিময়ে তাদের বেতন দেয়া হয়, তাহলে উক্ত কাজের মজুরি হিসেবে পারিশ্রমিক নেয়া জায়েজ হবে। যদিও চাকুরিতে যোগদানের পদ্ধতিটি জায়েজ ছিলো না। -ফাতাওয়ায়ে শামি : ৭/৩০০, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ২৮/৩৭৫

ধোঁকা দিয়ে সুবিধা নিলে কিংবা মিথ্যা বলে চাকুরি নেয়া লোকদের বিষয়ে আরেকটি মাসয়ালা হলো, ধোঁকা দিয়ে কিংবা মিথ্যা ঘোষণা ও তথ্য দিয়ে যে টাকা নিয়েছে কিংবা যে সব সুবিধা গ্রহণ করেছে- সে সব যেহেতু না জায়েজ ছিলো, তাই সে টাকা অফিসে কিংবা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফিরিয়ে দিবে।

কিন্তু ওই ফিরিয়ে দিতে গেলে যদি কোনো বড় ধরনের ঝামেলায় পতিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে উক্ত পরিমাণ টাকা কোনো গরীবকে দান করে দিবে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া। আর ধোঁকাবাজী, প্রতারণার পথ ও পদ্ধতি অবলম্বন করার কারণে আল্লাহ তায়ালার দরবারে ক্ষমা চাইবে এবং তওবা করবে।