৪ঠা নভেম্বর, ২০১৬ ইং, শুক্রবার ২০শে কার্তিক, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ
পূর্ববর্তী কুষ্টিয়ায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ জেএমবি নেতা নিহত


৩০ নতুন চৌকি স্থাপন করবে মিয়ানমার


Amaderbrahmanbaria.com : - ৩১.১০.২০১৬

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিয়ানমারের ঘরোয়া সমস্যার কারণে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে এখনও বিরাজ করছে থমথমে অবস্থা। দেশটির স্বাধীনতাকামী আরাকান আর্মি ও আরাকান মুজাহিদিন গোষ্ঠীর সাথে সে দেশের সেনাবাহিনী ও পুলিশের অব্যাহত সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

যে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলা ও রোহিঙ্গা শরণার্থীর অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পুরো এলাকায় বর্ডার গার্ড পুলিশও (বিজিপি) বেশ সতর্ক রয়েছে। পাশাপাশি সীমান্ত এলাকায় টহল দিচ্ছে মিয়ানমার সেনাবাহিনীও। ইতিমধ্যে মিয়ানমার সরকার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সীমান্তে আরো এক তৃতীয়াংশ বা ৩০টি সীমান্ত চৌকি বাড়াবে।

বিজিবিও বিষয়টি পর্যবেক্ষণসহ সীমান্তে বাড়তি নিরাপত্তা ও অতিরিক্ত সতর্কাবস্থা জারি করেছে। গত ৯ অক্টোবর ভোররাতে বর্ডার গার্ড পুলিশের ৩টি সীমান্ত চৌকিতে হামলা চালায় সেখানকার অজ্ঞাত সশস্ত্র গোষ্ঠী। এতে বিজিপির ৯ সদস্য নিহত ও ৭ জন হামলাকারী মারা যান। এই ঘটনায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের নেতৃত্বাধীন রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনকে (আরএসও) দায়ী করছে মিয়ানমার সরকার। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের দুর্গম এলাকায় অবস্থান করে আরএসও তাদের কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ করছে মিয়ানমার।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে রোহিঙ্গা মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামগুলোতে যৌথ অপারেশন চালাচ্ছে সেনাবাহিনী ও বিজিপি সদস্যরা। এতে এসব গ্রামে এখন আতংক দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে অন্তত ২০ হাজার মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়া হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে।

এছাড়া এই ঘটনায় ইতিমধ্যে শতাধিক সন্দেহভাজনকে আটকের পর হত্যা করা হয়েছে বলেও দাবি রোহিঙ্গা গণমাধ্যমের। তাছাড়া কয়েকশ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলেও জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থায় অভিযোগ করেন রোহিঙ্গা নেতারা। এ কারণে আতংকিত রোহিঙ্গারা গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে। অনেকেই সেনাবাহিনীর ভয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালানোর সময় পানিতে ডুবে মারা গেছেন। পালিয়ে যাওয়া রোহিঙ্গাদের অধিকাংশই বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য এখন সীমান্তে অপেক্ষা করছেন। তবে বিজিবির কড়া নজরদারির কারণে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না পেরে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পালানোর চেষ্টা করছে।

বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থানকারীরা সুযোগ পেলেই দলে দলে বাংলাদেশে প্রবেশ করবে। ইতিমধ্যে অনেকেই সীমান্তরক্ষীদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বলে সীমান্তের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ মার্চ মিয়ানমারের বুচিদংয়ে আরাকান আর্মির হামলায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একজন মেজরসহ ৩০ সেনাসদস্য নিহত হন। এসময় তাদের দুটি সাজোয়া যানও ধ্বংস করে দেয়া হয়। এই হামলার ক্ষত না শুকাতেই আরাকান মুজাহেদিনদের হামলায় গত ৯ অক্টোবর মারা যান বিজিপির ৯ সদস্য। এ বছরের মে মাসে টেকনাফের একটি আনসার ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে একজনকে হত্যা এবং ১১টি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি লুটের ঘটনায় আরাকান মুজাহিদিনদের গ্রুপ জড়িত ছিল বলে বাংলাদেশ পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল।

এরপর থেকেই কার্যত সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করে বিজিবি। বর্তমানে মিয়ানমারের বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জনপদে নতুন করে অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়ায় বাংলাদেশেও সৃষ্টি হয়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।

বর্তমানে বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের ৯৬টি সীমান্ত চৌকি রয়েছে।





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদক : বিশ্বজিত পাল বাবু
চেয়ারম্যান : আলহাজ্ব নুরুজ্জামান
ঠিকানা : ৬০৩ ফুলবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563


close