আন্তর্জাতিক ডেস্ক :ইরাকের মসুল ও সিরিয়ার মধ্যকার আইএসের সরবরাহ লাইন বন্ধে অভিযান শুরু করেছে ইরাকের আধাসামরিক বাহিনী। ইরান সমর্থিত শিয়া মিলিশিয়া নিয়ন্ত্রিত আধাসামরিক বাহিনী হাশেদ আল-শাবির সদস্যরা এ অভিযান পরিচালনা করছে। গত শনিবার থেকে তারা মসুলের পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত তাল আফার শহরের দিক থেকে অগ্রসর হতে শুরু করেছে। মসুলের এই অংশে এখনও স্থল সেনা মোতায়েন করা হয়নি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
হাশেদ-এর মুখপাত্র আহমেদ আল-আসাদি বলেন, ‘মসুল ও রাকার মধ্যকার সরবরাহ লাইন বিচ্ছিন্ন করে দিতে এবং মসুল ও আল আফার শহরে আইএস এর বিরুদ্ধে অবরোধ জোরদার করতে অভিযানটি চালানো হচ্ছে।’ আল আফার সিরিয়ায় আইএস-এর একটি প্রধান ঘাঁটি।
আসাদী বলেন, হাতরা ও তাল আবতা শহরের পাশাপাশি তাল আফার শহরটিও পুনরুদ্ধার করতে মসুলের দক্ষিণাঞ্চলীয় এলাকা সিন আল-ধাবান থেকে অভিযানটি শুরু হয়।
তাল আফার শহরে অভিযানের ফলে ভয়াবহ এই সংঘর্ষ প্রাচীন নগরী হাতরায়র কাছে ছড়িয়ে পড়তে পারে। হাতরা ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্বের অন্যতম ঐতিহ্যময় প্রাচীন নগরী। আইএস জঙ্গিরা নগরীটির বেশ কিছু এলাকার প্রাচীন স্থাপত্য ধ্বংস করে দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা হলেও নিমরুদের পাশ দিয়েও অভিযানটি চালানো হতে পারে। এটি আরেকটি প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক শহর। আইএস-এর হামলায় শহরটি অধিকাংশ এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে।
মসুল অভিযানে শিয়া মিলিশিয়াদের অন্তর্ভূক্তি নিয়ে জোর বাদানুবাদ হয়েছে। যদিও হাশেদের শীর্ষ বেশ কয়েকজন কমান্ডার জানিয়েছেন যে সুন্নি প্রধান নগরীটিতে প্রবেশের কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই।
ইরাকের কুর্দি ও সুন্নি আরব রাজনীতিবিদরা এই অভিযানে তাদের অন্তর্ভূক্তির বিষয়টির জোরালোভাবে বিরোধিতা করেছে।
এদিকে তুরস্ক মসুলের পূর্বাঞ্চলে সেনা মোতায়েন করেছে। যদিও বাগদাদের পক্ষ থেকে বারবার তুরস্কের সেনা প্রত্যাহারের দাবি করা হচ্ছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান শনিবার তাল আফারের তুর্কি বাসিন্দাদের ওপর হামলার ব্যাপারে শিয়া মিলিশিয়াদের হুঁশিয়ার করেছে।
এরদোয়ান তুরস্কের রাষ্ট্র পরিচালিত বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে বলেন, ‘যদি হাশেদ আল-শাবি সেখানে কোনও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে লিপ্ত হয়, তবে তার জবাব দেয়া হবে।’ তবে কি ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হবে সে ব্যাপারে তিনি কিছু জানাননি।
আইএসএর বিরুদ্ধে অভিযানে অংশ নেয়া মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর ও হাশেদ যোদ্ধাদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে।
শনিবার আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থা জানিয়েছে, মসুলে এই অভিযান শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোর দিকে পালিয়েছে।