নিজস্ব প্রতিবেদক : আল্লামা শফী ও ফরীদ উদ্দীন মাসঊদবাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (বেফাক) বোর্ডের সভাপতি আল্লামা শাহ আহমদ শফীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চান ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে কওমি সনদের স্বীকৃতির বিষয়ে সুপারিশ জমা দেওয়ার আগে আহমদ শফীকে দেখিয়ে তার পরামর্শ নিতেই দেখা করতে চান তিনি। আহমদ শফীর অনুমতি পেলেই সাক্ষাৎ করবেন বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ।
জানা গেছে, কওমি শিক্ষা সনদের সরকারি স্বীকৃতির জন্য ‘বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশন’-এর খসড়া আইন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সুপারিশ দিতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর শোলাকিয়া ঈদগাহের খতিব মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদকে চেয়ারম্যান ও গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মহাপরিচালক মুফতি রুহুল আমিনকে সদস্যসচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। এদিকে ৯ অক্টোবর কওমি মাদ্রাসা শিক্ষাসনদের সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার লক্ষ্যে বেফাক সভাপতি ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসার মহাপরিচালক মাওলানা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন ‘বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কমিশন’কে আবারও সক্রিয় করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয় এই কমিশনের মেয়াদ। পাশাপাশি এই কমিশনের তৈরি আগের খসড়া প্রতিবেদন বর্তমান সময়ের আলোকে যুগোপযোগী করে সুপারিশ দিতে বলা হয়। আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন এই কমিশনের কো-চেয়ারম্যান ফরিদ উদ্দীন মাসউদ।
জানা গেছে, ফরীদ উদ্দীন মাসঊদকে চেয়ারম্যান করে গঠিত কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন বেফাক। গত ১৭ অক্টোবর রাজধানীর মিরপুরের আরজাবাদ মাদ্রাসায় বেফাক আয়োজিত উলামা মাশায়েখ সম্মেলনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের নেতৃত্বাধীন কমিটি বাতিলের দাবিসহ বেফাকের পক্ষ থেকে ৯টি প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়। ওই সম্মেলনে অনেকেই ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের সমালোচনা করে বক্তব্য রাখেন।
আহমদ শফীর সঙ্গে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে মঙ্গলবার রাতে ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ বলেন, ‘কওমি সনদের স্বীকৃতি নিয়ে এখন পর্যন্ত সরকারের মনোভাব ইতবাচক। আমরা স্বীকৃতির জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কমিটির রিপোর্টের কাজ শেষ হয়েছে, দেশের বিভিন্ন স্থানের আলেমদের মতামতের জন্য পাঠানো হয়েছে। সরকার আহমদ শফীর নেতৃত্বাধীন কমিশনের মেয়াদ বাড়িয়েছে। তিনি সবার অভিভাবক। আমি মনে করি, নৈতিকভাবে কমিশনের চেয়ারম্যান আহমদ শফী সাহেবের কাছে রিপোর্ট তুলে ধরা উচিত। শুনেছি আহমদ শফী চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে গেছেন। তিনি দেশে এলে অনুমতি পেলে সাক্ষাৎ করব।’
জানা গেছে, চিকিৎসা শেষে শাহ আহমদ শফী ২৯ অক্টোবর রাতে দেশে ফিরেছেন। চিকিৎসকের পরামর্শে গত ১৯ অক্টোবর তিনি মালয়েশিয়া যান। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের প্রিন্স কোর্ট মেডিক্যাল সেন্টার হসপিটালে হাট, কিডনি ও স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে ১০ দিনের চিকিৎসা নেন তিনি।
ফরীদ উদ্দীন মাসঊদের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আহমদ শফীর প্রেস সেক্রেটারি মাওলানা মুনীর আহমদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আল্লামা আহমদ শফীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে প্রতিদিন অনেকেই আসেন। হুজুরের (শফী) সঙ্গে যে কেউ সাক্ষৎ করতে পারেন। ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ সাহেব দেখা করতেও কোনও বাধা নেই।