৮ই নভেম্বর, ২০১৬ ইং, মঙ্গলবার ২৪শে কার্তিক, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ


দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে মনোসেক্স তেলাপিয়া চাষে লাভবান মৎস্য চাষীরা


Amaderbrahmanbaria.com : - ০৫.১১.২০১৬

এস.এম. সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট অফিস : দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাগেরহাট সহ ১০ জেলার মনোসেক্স তেলাপিয়া মাছ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন মৎস্য চাষীরা। হেক্টর প্রতি৩০ টন পর্যন্ত মাছ উৎপাদন করছেন তারা। অন্যান্য প্রজাতি মাছের তুলনায় এটি দ্রুত বেড়ে উঠার পাশাপাশি চাহিদা থাকায় চাষীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এ মাছের উৎপাদন।

দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাগেরহাট সহ ১০ জেলার  জেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানা গেছে, ২০০৫ সালের দিকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জেলায় মনোসেক্স চাষ শুরু হয়। এর পর থেকে প্রসার হতে থাকে উৎপাদন। বর্তমান জেলার সবকটি উপজেলাতেই ব্যাপক হারে চাষ হচ্ছে মনোসেক্স।

সুত্র আরও জানায়, চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছর সাতক্ষীরার সাতটি উপজেলার ৯০ হাজারের অধিক ঘেরে  ১ লক্ষ্য ৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে মনোসেক্স চাষ করা হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৭৫ হাজার মেট্রিকটন।

বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ কয়েকজন প্রবীন ব্যাক্তি জানিয়েছেন, তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে চিংড়ি চাষ করে আসছেন। কিন্ত ভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগবালাইয়ের ক্রমাগত ভাবে লোকসান দেখা দেয়ায় তিনি চিংড়ি চাষ কমিয়ে মনোসেক্স চাষ করছেন ৫/৬ বছর যাবত। চলতি মৌসুমেও ৮ বিঘা পরিমান জমিতে এ প্রজাতি মাছের চাষ করেছেন তিনি।

তিনি জানান, গত বছর একই পরিমান জমিতে মনোসেক্স চাষ করে ৪লাখ টাকা লাভ করেন তিনি। বিঘা প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা লাভ হয় মনোসেক্স চাষে। তবে এবছর বাজারে মাছের যে চাহিদা ও দাম পাওয়া যাচ্ছে তাতে করে ৫ লাখ টাকা লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

একই ভাবে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বাগেরহাট সহ  এলাকায় মনোসেক্স পোনা উৎপাদনকারী একাধিক হ্যাচারী গড়ে উঠেছে। এসব হ্যাচারীর মধ্যে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁশঘাটা এলাকার কোয়ালিটি সাইন্টিফিক হ্যাচারী এন্ড ফিসারিজ অন্যতম। সেখানে উৎপাদন করা হচ্ছে মনোসেক্স, জেনোয়ার ও সুপ্রীম তেলাপিয়া মাছের পোনা। হ্যাচারীটি ২০১০ প্রতিষ্টিত হলেও তারা উৎপাদনে যায় ২০১৩ সালের শুরুর দিকে। ব্যাপক চাহিদা থাকার কারনে প্রথম বছরেই লাভে যায় এই হ্যাচারীটি।

বাগেরহাটের  বাধালে নাজমল হ্যাচারীর সত্বাধিকারী মো.  আল আমীন জানান, তাদের উৎপাদিত মনোসেক্স, জেনোয়ার ও সুপ্রীম তেলাপিয়া মাছের পোনার গুনগতমান ভালো হওয়ায় উৎপাদন চাহিদা বেড়েই চলছে। চলতি মৌসুমে উৎপাদন চাহিদা রয়েছে ৪ কোটির উপরে। তবে প্রতি বছরই এর চাহিদা বাড়ছে বলেও জানান তিনি।

বাগেরহাটের  মোড়েলগঞ্জ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি  জানান, বাজারে প্রতিদিন হাজার হাজার মন মনোসেক্স মাছ উঠছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও জেলার বাইরে চলে যাচ্ছে এসব মাছ। ঢাকার পাইকারী মাছ ব্যবসায়ীরা সাতক্ষীরা থেকে অন্যান্য সাদা মাছের পাশাপাশি এ প্রজাতিও মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া অন্যসব মাছের তুলনায় এ মাছটির দাম সাধারন ক্রেতাদের হাতের নাগালে থাকার কারনে মধ্যবিত্ত ও নিম্মবিত্ত মানুষের কাছে এ মাছটি ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

বাগেরহাট  জেলা মৎস্য অফিসার  জানান, গত এক দশকের ব্যবধানে  বাগেরহাটের    অঞ্চলের মৎস্য চাষীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মনোসেক্স উৎপাদন। এলাকার চাষীরা হেক্টর প্রতি ৫০ টন পর্যন্ত উৎপাদন করছেন এ প্রজাতির মাছটি। তবে অন্যান্য সাদা মাছের তুলনায় মনোসেক্স চাষে খরচের পরিমানটা বেশি। তবে এখন চিংড়ি ঘেরের সাথে এ প্রজাতের মাছ চাষ করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছে চাষীরা।





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদক : বিশ্বজিত পাল বাবু
চেয়ারম্যান : আলহাজ্ব নুরুজ্জামান
ঠিকানা : ৬০৩ ফুলবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563


close