দেশের পাঁচ বাম দল ও তরিকত ফেডারেশনের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িতে হামলা করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ ব্যাপারে আরো সতর্ক থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার বাম দল, তরিকত ফেডারেশনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ও বিবৃতির মাধ্যমে তারা এ মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, মন্দিরে ভাংচুরে জড়িত ধর্মীয় উগ্রবাদীদের কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। ধর্মীয় উগ্রবাদীদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা বার বার ঘটছে। তারা বলেন, দেশে যখন একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া চলমান তখন এই ধরনের সাম্প্রদায়িক হামলা আক্রমণ, অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রতি ধর্মীয় উগ্রবাদীরা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বলেন, সাম্প্রদায়িক যে শক্তি বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, এটা তাদেরই কারসাজি। তারা জনসভা করে এ হামলা চালিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে অত্যাচার ও নির্যাতন করেছে। এতে প্রমাণিত হয় একটি দেশের সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য এ ধরণের ঘটানো হয়েছে। তিনি বলেন, যাকে কেন্দ্র করে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হয়েছে-সেই অস্বীকার করেছে। ১৪ দল ও সামাজিক শক্তিগুরো পাহারা দিলে এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ বিবৃতিতে বলেন, জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তিতেই সাম্প্রদায়িক শক্তিকে রুখে দাঁড়াতে হবে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির, হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরবাড়ি ও মানুষজনের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানান।
সিপিবির সাধারণ বলেন, মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক অপশক্তি আবার নতুন করে বিষাক্ত ফনা তুলেছে। বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা তারই আলামত। কিন্তু সরকার সাম্প্রদায়িক অপশক্তি মোকাবেলায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করছে না। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্থানীয় প্রশাসন সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সমাবেশের অনুমতি দিয়ে হামলা চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে।
বাংলাদেশের তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব লায়ন এম এ আউয়াল বলেন, জামায়াত ও হেফাজত একেক সময় এক এক ধরণের নৈরাজ্যকর ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসির নগরে মন্দির ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়িতে জামায়াত ও হেফাজত হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। যাতে তারা এ ধরণের হামলা করতে আর কখনো সাহস না পায়।
সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়–য়া বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যখন দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই দেশি-বিদেশি কায়েমী স্বার্থন্বেষীমহল এ ধরনে হামলা চালাচ্ছে।
গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, দেশে নতুন করে সাম্প্রদায়িক শক্তি অস্থিরতা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। সব কিছুকে মোকাবিলা করে দেশকে অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, তখন আবার এ ধরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে।