ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে মন্দির ও হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনার পর আতঙ্কে ৬টি পরিবার ভারতে আশ্রয় নিয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটির একটি সংবাদ মাধ্যম। সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ১৯৭১-র মুক্তিযুদ্ধের সময়ও বাংলাদেশ ছাড়েনি অনেক হিন্দু পরিবার। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে, সেই সমস্ত পরিবারও প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশ ত্যাগ করছে।
এনাডু ইন্ডিয়া নামের একটি পত্রিকার খবরে বলা হয়, গত রোববার বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত ১৫টি মন্দিরে ভাঙচুর করা হয়। ভেঙে ফেলা হয় দেবদেবীর মূর্তি। দুষ্কৃতীদের হাত থেকে রেহাই পায়নি হিন্দু পরিবারগুলি। সবথেকে বেশি আক্রমণ চালানো হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে। সেখানে বসবাসকারী হিন্দুদের বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি মারধর করা হয় সদস্যদের। অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পায়নি শিশু ও মহিলারাও। প্রায় ১০০ জন আহত হযেছেন। তাঁদের বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। প্রাণ বাঁচাতে অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে পালায়। নাম না প্রকাশের শর্তে এক হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাঁদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নিরুপায় সাধারণ মানুষ যে যেখানে পারছে চলে যাচ্ছে। তাদেরই মধ্যে ৬টি পরিবার সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে ভারতে এসেছে।
পত্রিকাটি জানায়, পরপর হামলার জেরে উত্তেজনা রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। হিন্দু পরিবারের পাশাপাশি প্রবল নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানাচ্ছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। এরকম অস্থির পরিস্থিতি আগে কখনও দেখেননি বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। নাসিরনগরের বাসিন্দা বুলু মিঞার বক্তব্য, কয়েকদিন আগে পর্যন্ত সেখানে হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে থাকত। কিন্তু হামলার পর থেকে পরিস্থিতি বদলে গেছে। অনেকে ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না।
গত শুক্রবার একটি ফেসবুক পোস্টকে ঘিরে গন্ডগোলের সূত্রপাত। সেদিন নাসিরনগর এলাকার হরিপুর গ্রামের বাসিন্দা রসরাজ দাস ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন। সেই পোস্টে ইসলাম ধর্মের অবমাননা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। রসরাজের বিরুদ্ধে মামলাও হয়। কিন্তু, গোলমাল বন্ধ করা যায়নি। ভাঙচুর করা হয় মন্দির, হিন্দুদের বাড়ি।