ডেস্ক রির্পোট : নাসিরনগরে হামলার ঘটনার আগের দিন মাইকিং করা হয়। যাতে উস্কানিমূলক স্লোগান দেয়া হয়, কিছু স্লোগানের ভাষাও ছিল অশালীন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাসিরনগর সদরে অবস্থিত দত্ত বাড়িতে গিয়ে জানা যায়, হামলার আগের দিন ছিল সে বাড়ির মন্দিরে কালীপূজা। সন্ধ্যা সাতটা থেকে রাত আটটার মধ্যে স্থানীয় একটি ক্বওমী মাদ্রাসার দুইজন ছাত্র, যাদের বয়স ২০-২২এর মধ্যে, তারা মাইকিং করে বলতে থাকেন, ‘মালাউনের কেল্লা (মাথা) চাই, মালাউনের বাচ্চারা হুঁশিয়ার সাবধান, ইসলামের শত্রুরা হুঁশিয়ার সাবধান, রসরাজের ফাঁসি চাই’।
দত্ত বাড়ির মাঝ বয়সী গৃহিনী নীলিমা দত্ত জানান, সেদিন রাতে বাড়িতে কালী পূজা চলাকালে এসব স্লোগান দিতে দিতে আমাদের বাড়ির সামনের সড়ক দিয়ে কলেজ মোড়ের দিকে মোটর চালিত রিকশা দিয়ে যাচ্ছিল দুই ছাত্র। তারা নাসিরনগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পথ ধরে আসে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নাসিরনগরের একজন শিক্ষক জানান, মাইকিং করা হয়েছিল সকালে। এসময় একজন ব্যক্তি ব্যাক্তিগতভাবে ওই ছাত্রদের কাছে জোরালোভাবে জানতে চান তাদের পরিচয়। ছাত্ররা উত্তর দেন- তারা ক্বওমী মাদ্রাসার ছাত্র। এরপরই দ্রুত তারা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।
এ শিক্ষকের ধারণা- দুই ছাত্র নাসিরনগর সদরের পূর্বদিকে অবস্থিত চাপরতলার একটি ক্বওমী মাদ্রাসার ছাত্র।
প্রত্যক্ষদর্শী দত্ত বাড়ির একজন মালিক ও নাসিরনগর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি কাজল জ্যোতি দত্ত জানান, রাতে মাইকিং এর ভাষা শুনে তারা ঘাবড়ে যান। এসময় তিনি নাসিরনগর থানার ওসি (তদন্ত) শওকতের কাছে বিষয়টি জানান। শওকত উত্তর দেন, কিছু হবে না।
এরপর কাজল দত্ত সরাসরি ওসি আবদুল কাদেরকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে বলেন, আমাদের বাঁচাবেন কি-না। এসময় ওসি দ্রুত পুলিশসহ দত্ত বাড়িতে হাজির হন।
অবশ্য কাজল দত্ত প্রথমে আবদুল কাদেরকে না পেয়েই ওসি তদন্তকে ফোন দিয়েছিলেন। তার কাছ থেকে ঢিলেমি উত্তর পেয়েই ফোন দেন আবদুল কাদেরকে।
কাজল জোত্যি দত্ত জানান, মাইকিং এর ভাষা শুনে তাদের পূজার আনন্দে ভাটা পড়ে যায়। কোনোমতে পূজা শেষ করা হয়।
তার অভিযোগ- ঘটনাটি ঘটতে প্রশাসনিক গাফিলতি ছিল সেটা স্পষ্ট। আমি যখন ওসি তদন্তকে ফোন দিই, তিনি সেটা সঙ্গে সঙ্গে আমলে নিলে আশঙ্কা কমে যেত।
আমাদের সময় ডটকম