আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী প্রতারণা করেছেন : রিজভী
প্রধানমন্ত্রী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের দাবি মেনে নেয়াটা ছিল প্রধানমন্ত্রীর তামাশা। সমগ্র জাতি এখন সেই রঙ-তামাশার দৃশ্য অবলোকন করছে।
দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য বারবার দাবি করা সত্ত্বেও সরকারের এড়িয়ে যাওয়াতে মনে হয় দেশনেত্রীকে বন্দী করে হাতের মুঠোয় নিয়ে কোন অশুভ মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
রোববার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর পৈশাচিক হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ। বেছে বেছে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারীদেরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত করা হয়েছে। ছাত্রলীগের মন শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার রঙ রাঙ্গানো।
তিনি বলেন, এই সময়ের ছাত্রলীগ প্রকৃত কোন ছাত্র সংগঠন নয়, এটি প্রধানমন্ত্রীর ভাড়াটিয়া বাহিনী। এদের মধ্যে নেই জ্ঞানের আলো, শিক্ষার আদর্শ, সহমর্মিতা ও সহিষ্ণুতা। প্রতিবাদের আওয়াজকে গুঁড়িয়ে দিতেই গুন্ডামীর চেতনায় এদেরকে তৈরী করা হয়েছে। শিক্ষাঙ্গনকে বাকশালী খাঁচায় বন্দী করার জন্যই বর্তমান প্রজন্মের ছাত্রলীগকে তৈরী করা হয়েছে আতঙ্কের অপর নাম হিসেবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, শিক্ষাঙ্গনের গণতন্ত্রবিরোধী বিপজ্জনক শক্তি হচ্ছে ছাত্রলীগ। বর্তমানে খুন, জখম, হাঙ্গামা, হল দখল, সীট বাণিজ্য, শিক্ষক-ছাত্রছাত্রীকে লাঞ্ছিত করার প্রতীকে পরিণত হয়েছে বর্তমান ছাত্রলীগ। আর সেজন্যই পুলিশের পাশাপাশি ছাত্রলীগও নেমে পড়েছে কোটা সংস্কার আন্দোলনে আন্দোলনরত কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ক্ষত-বিক্ষত করতে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানান রিজভী।
বর্তমান সরকার খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় রেখে তাঁর শারীরিক অবস্থাকে এক অমানবিক পর্যায়ে নিয়ে গেছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, গতকাল দেশনেত্রীর স্বজন’রা তাঁর সাথে দেখা করতে গিয়েছিলেন, সেখানে তাঁর শারীরিক অবস্থা দেখে তারা বেদনাহত ও ব্যথিত হয়েছেন। ইতোপূর্বে দেশনেত্রীর ব্যক্তিগত এমনকি সরকারী হাসপাতালের চিকিৎসকরা তাঁর সুচিকিৎসা’র জন্য যে পরামর্শ দিয়েছিলেন সেটির বিন্দুবিসর্গও পালন করা হয়নি। বরং সুচিকিৎসার দাবি করাটাও যেন দেশনেত্রীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি সরকার প্রধানের আচরণ লজ্জাজনকভাবে নিম্নরুচির।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ক্রমাগত কষ্ট দিয়ে তাঁর জীবনকে বিপন্ন ও বিপর্যস্ত করা। আমরা আবারও দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলতে চাই বেগম জিয়ার প্রতি এই অন্যায় বরদাস্ত করা হবে না। তাঁর ন্যুনতম কোন ক্ষতি হলে সরকার জনগণের ক্রোধ থেকে রেহাই পাবে না। আবারও দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি এবং ইউনাইটেড হাসপাতালে সুচিকিৎসার জোর দাবি জানান রিজভী।