‘মনে হচ্ছে খুব কাছের আপন কেউ মরে গেছে’
রাত সাড়ে ১০টা। ধানমন্ডি মেডিনোভা হাসপাতালের উল্টোদিকে ধানমন্ডি লেকের পাড় থেকে পায়ে হেটে বের হয়ে আসছিল আনুমানিক ২০/২৫ বছরের এক তরুণ দল। অধিকাংশের গায়ে আকাশি-সাদা আর্জেন্টিনার জার্সি। পাশাপাশি হেটে এলেও কারও মুখে রাগ নেই। ওরা প্রায় সবাই মুখ লুকিয়ে দ্রুত পায়ে হেটে রাস্তা পার হচ্ছিল আবার কেউ দ্রুত মোটরসাইকেল স্ট্যার্ট দিয়ে স্থান ত্যাগ করছিল।ওদেরই একজন রাজধানীর জিগাতলা মনেশ্বর রোডের বাসিন্দা ধানমন্ডির আইডিয়াল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মনোয়ার জাহান।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, আজ সন্ধ্যার পর ওরা কয়েকজন বন্ধু দল বেঁধে রবীন্দ্র সরোবরে জায়ান্ট স্ক্রিনে খেলা দেখতে গিয়েছিল। খেলায় আর্জেন্টিনা অবশ্যই জয়ী হবে এমন আত্মবিশ্বাস ছিল তাদের। জয়ের পর ওরা চার বন্ধু মিলে মোটরসাইকেল নিয়ে শহর ঘুরে বেড়াবে এবং রাতে কোনো একটি চাইনিজ হোটেলে ডিনার খেয়ে তবেই বাসায় ফিরবে। কিন্তু আর্জেন্টিনার পরাজয়ে সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে। মন ভেঙে গেছে তার ও বন্ধুদের।মনোয়ার জানান, ‘ফ্রান্সের সঙ্গে হেরে আর্জেন্টিনার বিদায়ে মনে হচ্ছে খুব কাছের আপন কেউ মরে গেছে।’
আজিমপুর, নীলক্ষেত, পলাশী, মিরপুর রোড, ধানমন্ডি, কলাবাগান ও জিগাতলা ঘুরে দেখা গেছে, আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে তাদের সমর্থকরা বিশেষ করে তরুণরা এখানে সেখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিমূর্ষ হয়ে বসে আছে।
সন্ধ্যার পর থেকেই বিভিন্ন পাড়া মহল্লায় অলিগলি থেকে শুরু করে পাঁচ তারকা হোটেলে প্রজেক্টরে আর্জেন্টিনা-ফ্রান্সের খেলা দেখার আয়োজন করা হয়। সন্ধ্যার পর রাস্তাঘাট ফাঁকা হতে থাকে। অনেকেই ঘরে বসে পরিবার পরিজন নিয়ে খেলা দেখে। কিন্তু ফ্রান্সের সঙ্গে ৪-৩ গোলে পরাজয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ে হাজারো আর্জেন্টাইন সমর্থক।