প্রথম টেস্টে জয়ের খুব কাছাকাছি গিয়েও হতাশ হতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। মাত্র ২২ রানের জন্য ইতিহাস গড়তে পারেননি মুশফিকরা। তবে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আর হতাশ হতে হয়নি বাংলাদেশকে। মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসানের দারুণ বোলিংয়ে দুই দিন বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে গেছে মুশফিক বাহিনী। পেয়েছে ১০৮ রানের ইতিহাসগড়া জয়। টেস্টে প্রথমবারের মতো হারিয়েছে ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ডকে।
২৭৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতেই ১০০ রান সংগ্রহ করে ফেলেছিল ইংল্যান্ড। বেশ সাবলীলভাবেই ব্যাটিং করছিলেন দুই ওপেনার অ্যালিস্টার কুক ও বেন ডাকেট। সেসময় ফিকেই হয়ে আসছিল বাংলাদেশের জয়ের আশা। তবে চা বিরতির পর মিরাজ ও সাকিবের দারুণ বোলিংয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ের শিকার হয়েছে ইংল্যান্ড। তৃতীয় সেশনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে ইংল্যান্ডের ইনিংস। ৬১ রান সংগ্রহ করতেই হারিয়েছে সব কয়টি উইকেট। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
তৃতীয় সেশনের প্রথম ওভারে ডাকেটকে বোল্ড করে সাজঘরে ফিরিয়েছেন মিরাজ। টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতক পূর্ণ করে আউট হয়েছেন ডাকেট (৫৬)। পরের ওভারে ইংল্যান্ডের তারকা ব্যাটসম্যান জো রুটকেও সাজঘরমুখী করেছেন সাকিব। কয়েক ওভার পর ইংল্যান্ডকে জোড়া ধাক্কা দিয়েছেন মিরাজ। এক ওভারেই তুলে নিয়েছেন গ্যারি ব্যালান্স ও মইন আলীর উইকেট। ৫৯ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশের জন্য ক্রমেই বিপদজনক হয়ে উঠছিলেন অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক। কিন্তু দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে সেই বাধাও সরিয়েছেন মিরাজ। খুব বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি জনি বেয়ারস্টোও। তাঁকেও সাজঘরমুখী করেছেন মিরাজ। ইংল্যান্ডকে শেষ জোরালো ধাক্কাটা দিয়েছেন সাকিব। এক ওভারে নিয়েছেন তিন উইকেট। একে একে সাজঘরের পথ ধরেছেন বেন স্টোকস (২৫), আদিল রশিদ (০) ও জাফর আনসারি (০)।
বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট জিততে হলে নতুন রেকর্ডই গড়তে হতো ইংল্যান্ডকে। এশিয়ায় এত বেশি রান তাড়া করে কখনোই জিততে পারেননি ইংলিশ ক্রিকেটাররা। ২০০-এর বেশি রান তাড়া করে জিতেছিল মাত্র একবারই, ২০১০ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে। সেবার ইংল্যান্ডের জয়ের লক্ষ্য ছিল ২০৯ রান।
৩ উইকেটে ১৫২ রান নিয়ে আজ তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। তৃতীয় দিনের প্রথম ১৪ ওভার নির্বিঘ্নেই কাটিয়েছিলেন ইমরুল ও সাকিব। কিন্তু ১৫তম ওভারে মইন আলীর শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ইমরুল। আউট হওয়ার আগে ৭৮ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। দুইবার জীবন পেয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি সাকিব আল হাসান। আদিল রশিদের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন ৪১ রান করে। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমও খুব বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি উইকেটে। করেছেন ৯ রান। দ্রুত রান সংগ্রহের তাগিদে ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করেছিলেন সাব্বির রহমান। তিনটি চার মেরে করেছিলেন ১৫ রান। কিন্তু সাব্বিরকে সেখানেই থামিয়ে দিয়েছেন রশিদ। শেষপর্যায়ে শুভাগত হোমের ২৫ রানের অপরাজিত ইনিংসে ভর করে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা হয়েছে ২৯৬ রান।
ইংল্যান্ডের পক্ষে দারুণ বোলিং করে চারটি উইকেট নিয়েছেন রশিদ। তিনটি উইকেট পেয়েছেন বেন স্টোকস। দুটি উইকেট গেছে জাফর আনসারির ঝুলিতে।