১লা নভেম্বর, ২০১৬ ইং, মঙ্গলবার ১৭ই কার্তিক, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ
  • প্রচ্ছদ » slider 4 » পপুলারের টয়লেটে তরুণীর ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার করেছে সুমন


পপুলারের টয়লেটে তরুণীর ভিডিও ধারণের কথা স্বীকার করেছে সুমন


Amaderbrahmanbaria.com : - ৩০.১০.২০১৬

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : অভিযুক্ত হাসিবুর রহমান সুমনটয়লেটে থাকা এক তরুণীর (২৭) ভিডিও ধারণের কথা প্রাথমিকভাবে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মচারী হাসিবুর রহমান সুমন (২৮)। ভিডিওসহ তার মোবাইল ফোনটি জব্দ করেছে পুলিশ। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের আবেদনে দু’দিনের রিমান্ড দিয়েছে আদালত।

শনিবার সকালে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের টেলিফোন অপারেটর হাসিবুর রহমান সুমনকে আটক করে পুলিশে দেন ভুক্তভোগীরা।ঘটনার শিকার ওই তরুণী ধানমণ্ডি থানায় বাদী হয়ে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২ এর ৮ (১) ধারায় মামলা দায়ের করেন। এরপর পুলিশ সুমনকে আদালতে হাজির করে তিনদিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ভুক্তভোগী ওই তরুণী জানান,তার বাসা রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকায়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শনিবার সকালে ‘ইউরিন টেস্টের’ জন্য তিনি ধানমণ্ডির পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আসেন। এসময় তার সঙ্গে আরও দু’নারী ছিলেন। সকাল ৮টার দিকে তৃতীয় তলার একটি টয়লেটে গিয়ে তিনি ইউরিনের নমুনা সংগ্রহ করছিলেন। এসময় টয়লেটের দরজার নীচ থেকে কেউ একজন মোবাইলে ভিডিও করার চেষ্টা করেন। তিনি তা দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করেন। এসময় তার সঙ্গে থাকা অপর দু’নারী দৌড়ে টয়লেটে গিয়ে দেখতে পান, টেলিফোন অপারেটর সুমন টয়লেট থেকে বের হয়ে যাচ্ছে। তারা সুমনকে ধরে ফেলেন এবং তার মোবাইলটি চাইলে সে দিতে অস্বীকার করে।

ওই তরুণী জানান,সুমন তার মোবাইল থেকে ভিডিওটি ডিলিট করার চেষ্টা করে।এক পর্যায়ে তিনি জোর করে সুমনের কাছ থেকে মোবাইলটি নিয়ে নেন এবং বিষয়টি পপুলারের কর্তৃপক্ষকে জানান। পাশাপাশি পুলিশকেও খবর দেওয়া হয়। পরে পুলিশ এসে সুমনকে আটক করে ধানমণ্ডি থানায় নিয়ে যায়। এরপর তরুণী মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ১৩ (২৯ অক্টোবর ২০১৬)।
ধানমণ্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ওই তরুণীর অভিযোগটি এজাহার হিসেবে নেওয়া হয়েছে। আমরা অভিযুক্ত সুমনকে গ্রেফতার করেছি।আদালত তাকে দু’দিনের রিমান্ড দিয়েছে। তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। প্রাথমিকভাবে সে ভিডিও ধারণের বিষয়টি স্বীকার করেছে।’

এ বিষয়ে পপুলার ডায়াগনস্টিকের মহাব্যবস্থাপক (গ্রাহক সেবা) মোসাদ্দেক হোসাইন বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ডায়াগনস্টিকে ছিলাম না। সকাল ৮ টার দিকে ম্যানেজার বিপ্লব ফোনে আমাকে বিষয়টি জানান। অভিযুক্ত সুমনের আইডি কার্ডদ্রুত আমি ডায়াগনস্টিকে চলে আসি।পরিস্থিতি দেখে অবাক হই। ৩৪ বছরের এ প্রতিষ্ঠানে এমনটা আর কখনও ঘটেনি। সে কেন এটা করল বুঝতে পারছি না। ভুক্তভোগীরাই পুলিশকে খবর দিয়েছেন। আমরা তাদের সহযোগিতা করেছি। এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার কিছু নেই। এমন ঘটনার শিকারতো আমার স্বজনরাও হতে পারে। অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।।’
তিনি বলেন, ‘টয়লেট একই জায়গায় হলেও নারী ও পুরুষের জন্য আলাদা করা আছে। টয়লেটগুলো অত্যন্ত সংরক্ষিতও আধুনিক।তবে প্রতিটি টয়লেটের দরজার নীচ থেকে ছয় ইঞ্চির মতো ফাঁকা। আলো-বাতাস প্রবেশের জন্য এটা করা হয়েছে। সেখান থেকেই সুমন ভিডিও ধারণ করার চেষ্টা করেছে। সকালে লোকজন কম থাকায় সে এই কাজে সাহস পেয়েছে।’
পপুলার ডায়াগনস্টিকের মহাব্যবস্থাপক আরও বলেন, ‘সুমন তিনবছর ধরে এখানে কাজ করে। সে কেন এমন অপকর্ম করল বুঝতে পারছি না। তবে আমাদের এখানে প্রতিটি রোগীর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) খায়রুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা আলামত হিসেবে সুমনের মোবাইলটি জব্দ করেছি। তার মোবাইলে সাত থেকে ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও রয়েছে। এ আলামত যাচাইয়ের জন্য পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এর ল্যাবে পাঠানো হবে।’

তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, ‘এটা অস্বীকার করার কিছু নেই। সুমন প্রাথমিকভাবে ভিডিও করার বিষয়টি স্বীকার করেছে। আদালতের কাছে আমি তিনদিনের রিমান্ড চেয়েছিলাম, আদালত দুদিনের রিমান্ড দিয়েছে। এখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সে অতীতে এমন কাজ আরও করেছে কিনা তাও জানতে চাওয়া হবে।’

জানা গেছে,অভিযুক্ত হাসিবুর রহমান সুমনের গ্রামের বাড়ি চুয়াডাঙ্গার জীবন নগর থানার মনোহরপুর গ্রামে।
পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারএদিকে,এ ঘটনায় পপুলার ডায়াগনস্টিকে উপস্থিত সাধারণ রোগীদের মধ্যে ভীতির সৃষ্টি হয়েছে। তারা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। যাতে ভবিষ্যতে এধরনের ঘটনা আর না ঘটে। সেখানে আসা কয়েকজন রোগীর সঙ্গে শনিবার বিকালে বাংলা ট্রিবিউনের এই প্রতিবেদকের কথা হয়।
রাফিউল আহসান নামে এক তরুণ অভিযোগ করেন, ‘বিপদে পড়ে মানুষ চিকিৎসা নিতে আসে, সেখানের স্টাফরাই যদি এমন কাজ করে, তাহলে মানুষ যাবে কোথায়? সুমনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও আরও সতর্ক হওয়া দরকার।’
আব্দুল হাকিম নামে এক ব্যক্তি বলেন, ‘এসব জায়গায় চরিত্রবান ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। কর্মচারী কর্মকর্তা নিয়োগের আগে তাদের বিষয়ে আরও ভালো করে খোঁজ নেওয়া দরকার।’
পপুলার ডায়াগনস্টিকের মহাব্যবস্থাপক মোসাদ্দের হোসাইন বলেন, ‘আমরা সতর্ক আছি। প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী সুমনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। রোগীদের নিরাপত্তার বিষয়েও আমরা সচেতন আছি।’





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদক : বিশ্বজিত পাল বাবু
চেয়ারম্যান : আলহাজ্ব নুরুজ্জামান
ঠিকানা : ৬০৩ ফুলবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563


close