আন্তর্জাতিক ডেস্ক :স্থায়ী সদস্য হয়েও জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য পদ হারিয়েছে রাশিয়া। সিরিয়ায় ‘যুদ্ধাপরাধে’র ফলে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ হাঙ্গেরি ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। ২০০৬ সালে মানবাধিকার কাউন্সিল গঠনের পর এবারই প্রথম কোনও ভোটে হারল রাশিয়া। অবশ্য ইয়েমেনে একই ধরনের অভিযোগ থাকলেও কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে সৌদি আরব। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্র নিয়ে গঠিত সাধারণ পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রগুলো ভোটের মাধ্যমে মানবাধিকার কাউন্সিলের ১৪ সদস্য রাষ্ট্রকে নির্বাচন করে। মোট ৪৭টি দেশ নিয়ে এ কাউন্সিল গঠিত। রাশিয়া পেয়েছে ১১২টি। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে রাশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো ক্রোয়েশিয়া ও হাঙ্গেরি। যথাক্রমে ১১৪ ও ১৪৪ ভোট পেয়ে কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে দেশ দুটি।
সিরিয়ার যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ওঠার পর মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদ রাশিয়া হারালেও যেসব দেশ নির্বাচিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনে অভিযুক্ত যেসব দেশ কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে সেগুলো হলো, ইরাক, সৌদি আরব, মিসর, চীন, ব্রাজিল, রুয়ান্ডা, হাঙ্গেরি, ক্রোয়েশিয়া, কুইবা, দক্ষিণ আফ্রিকা, জাপান, তিউনিশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। গুয়াতেমালা একমাত্র দেশ যে রাশিয়ার মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেও নির্বাচিত হয়নি।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো নির্দিষ্টভাবে রাশিয়া ও সৌদি আরবকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল। সৌদি আরব পার্শ্ববর্তী ইয়েমেনে বোমা ফেলে সাধারণ মানুষ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত। আঞ্চলিকভাবে সৌদি আরবের কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় মনোনীত হয় দেশটি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্যবেক্ষক দলের পরিচালক লুইস চারবোনেও বলেন, ‘মানবাধিকার কাউন্সিলের পুনঃনির্বাচনে সদস্যপদ বাতিল করে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো রাশিয়াকে একটি কড়া জবাবা দিয়েছে। এ ভোটের মাধ্যমে বলা হয়েছে, সিরিয়া সরকারকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে যুদ্ধের ভয়াবহতা বাড়িয়ে তুলেছে রাশিয়া।’
লুইস আরও বলেন, ‘আগামী বছর জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো নিশ্চিত করবে সত্যিকার প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমেই প্রার্থী নির্বাচন করা হবে। কেউই নিশ্চিত জয় পাবে না।’
যুক্তরাজ্যের মানবাধিকারমন্ত্রী বারোনেস অ্যানেলে বলেন, ‘এই পুনঃনির্বাচনে নিজের দেশকে নিয়ে গর্বিত।’ তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য সবসময় থেকে কাউন্সিলের সঙ্গে কাজ করে এসেছে। যুক্তরাজ্য আবারও কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় আমরা গর্ববোধ করছি।’
যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ায় যুদ্ধ বন্ধ করতে আলোচনা চালিয়ে আসছে। দীর্ঘ প্রায় ৫ বছরের গৃহযুদ্ধে সিরিয়ায় এ পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সর্বশেষ সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত আলেপ্পোর একটি স্কুলে বিমানহামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে রাশিয়ার বিরুদ্ধে।