ফারাক্কার বেশিরভাগ গেট খুলে দেয়ায় বাংলাদেশে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভারতের বিহার রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য দেশটির পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় পশ্চিমবঙ্গের ফারাক্কা বাঁধের ১০৪টি গেটের মধ্যে ৯৫টি গেট খুলে দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার ফারাক্কা বাঁধ ভেঙ্গে দেয়ার প্রস্তাবের একদিন পর আজ বুধবার বিতর্কিত এ বাঁধটি বেশিরভাগ গেটই খুলে দেয়া হয়। এর ফলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলায় বন্যার সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলার এক খবরে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে ফারাক্কা বাঁধের গেটগুলো খুলে পানি ছেড়ে দেওয় ১১ লাখ কিউসেক পানি সরে যাবে যাতে করে বিহারের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
দেশটির কেন্দ্রীয় পানিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের মুখপাত্র সমীর সিনহা ব্রিটিশ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বর্ষাকালে এমনিতেই অন্য সময়ের তুলনায় ফারাক্কায় বেশি গেট খোলা থাকে। কিন্তু বিহার প্রদেশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এখন প্রায় ১০০টি গেট খুলে দেবার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ভারতের কর্মকর্তারা বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলা জানিয়েছে, এ গেটগুলো খুলে দিলে ১১ লাখ কিউসেক পানি সরে যাবে যাতে করে বিহারের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে। বিহার রাজ্যে গত এক সপ্তাহে ১০ লাখের বেশি মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশের বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র এবং যৌথ নদী কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, বছরের এ সময়টিকে ফারাক্কায় গেটগুলো খোলা থাকার কথা। নতুন করে গেট খুলে দেবার কিছু নেই বলে কর্মকর্তারা মনে করেন। তারা বলছেন সাধারনত শুষ্ক মৌসুমে পানি ধরে রাখার জন্য এ গেটগুলো তৈরি করেছে ভারত। কিন্তু এখন নদীতে পানি প্রবাহ এমনিতেই বেশি থাকায় গেটগুলো বন্ধ থাকার কথা নয় বলে উল্লেখ করেন কর্মকর্তারা।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, ১১ লাখ কিউসেক পানির প্রবাহ যদি বাংলাদেশের ভেতরে আসে তাহলে বাংলাদেশ অংশে পদ্মায় পানি বাড়বে কিন্তু বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হবে না। যেহেতু এখন ব্রহ্মপুত্র-যমুনায় পানি কমছে সেজন্য পদ্মার পানি বাড়লেও সেটি কোন বন্যা পরিস্থিতির তৈরি করবে না বলে মনে করেন কর্মকর্তারা।
যেহেতু এখন ব্রহ্মপুত্র-যমুনায় পানি কমছে সেজন্য পদ্মার পানি বাড়লেও সেটি কোনো বন্যা পরিস্থিতির তৈরি করবে না বলে মনে করেন কর্মকর্তারা। ফারাক্কায় গেটগুলো খুলে দিলে বাংলাদেশে আবারো বন্যা পরিস্থিতির আশংকা থেকেই যাচ্ছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ খন্দকার জানিয়েছেন, দেশের ভেতরে ব্রহ্মপুত্র-যমুনার ভেতর দিয়ে সবচেয়ে বেশি পানি প্রবাহিত হয়।
গত দু’সপ্তাহ ধরে ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে বিহার ছাড়াও মধ্য প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, এবং ঝাড়খ-েও বন্যা পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। এসব এলাকায় নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সোমবার রাতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে বিহার এবং উত্তর প্রদেশে জরুরি সহায়তা দল পাঠানো হয়েছে।