নিজস্ব প্রতিবেদক : ‘আসামিরা আমাকে কোনো রকম খুন্তির ছ্যাঁকা দেননি। আগে মানুষের পরামর্শে এই মামলা করি।’ গৃহকর্মী নির্যাতনের অভিযোগে ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন ও তাঁর স্ত্রী জেসমিন জাহানের বিরুদ্ধে করা মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এ কথা বলেছে নির্যাতিতা গৃহকর্মী মাহফুজা আক্তার হ্যাপি (১১)। রাষ্ট্রপক্ষ তাকে বৈরী সাক্ষী (যে সাক্ষী রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেয় না) ঘোষণা করে জেরা করেছে।
আজ বুধবার দুপুরে ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক তানজিনা ইসমাইল ৩১ আগস্ট পরবর্তী শুনানির জন্য তারিখ ধার্য করেছেন।
আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেন ও তাঁর স্ত্রী জেসমিন জাহান।
গৃহকর্মী মাহফুজা আজ আদালতকে বলে, ‘আমি ক্রিকেটার শাহাদাত হোসেনের বাসায় কাজ করতাম। সাত মাস কাজ করেছিলাম। কাজ করতে ভালো লাগত না। এ জন্য শাহাদাতের স্ত্রী বকাঝকা করত। দুর্ঘটনায় আমার পা ভেঙে যায়। এ জন্য চিকিৎসা নিই। আসামিরা আমাকে কোনো রকম খুন্তির ছ্যাঁকা দেননি। আগে মানুষের পরামর্শে এই মামলা করি। আমাকে কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করে নাই। আমি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডাক্তারের কাছে কিছু বলছি কি না, আমার খেয়াল নেই।’
মাহফুজার এই জবানবন্দির পর রাষ্ট্রপক্ষ তাকে বৈরী ঘোষণা করে জেরা করেন। তাকে জেরা করেন সরকারি কৌঁসুলি আলী আজগর স্বপন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, এর আগে ১৭ আগস্ট হ্যাপির জবানবন্দি রেকর্ডকারী বিচারক স্নিগ্ধা রানী চক্রবর্তী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, হ্যাপি স্বেচ্ছায়, সজ্ঞানে তাঁর কাছে জবানবন্দি দিয়েছে। এতে হ্যাপি স্বাক্ষরও করেছে।
গৃহকর্মী মাহফুজাকে নির্যাতনের অভিযোগে ক্রিকেটার শাহাদাত ও তাঁর স্ত্রী জেসমিনের বিরুদ্ধে গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর মিরপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন খন্দকার মোজাম্মেল হক। ওই বছরের ২৯ ডিসেম্বর এই মামলায় পুলিশি তদন্ত শেষে শাহাদাত ও জেসমিনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
চলতি বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি মামলাটির অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। এই মামলায় জেসমিনকে মালিবাগে তাঁর বাবার বাসা থেকে ৩ অক্টোবর গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন আদালত তাঁর রিমান্ড ও জামিনের আবেদন নাকচ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ৫ অক্টোবর শাহাদাত আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাঁকেও কারাগারে পাঠানো হয়। পরে শাহাদাতকে রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরে এই দম্পতি জামিনে মুক্তি পান।
গৃহকর্মী মাহফুজাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সে আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে তার ওপর নির্যাতনের বর্ণনা দেয়।