g কক্সবাজারে বেপোরোয়া দেশি-বিদেশী এনজিও | AmaderBrahmanbaria.Com – আমাদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া

রবিবার, ১২ই নভেম্বর, ২০১৭ ইং ২৮শে কার্তিক, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

কক্সবাজারে বেপোরোয়া দেশি-বিদেশী এনজিও

AmaderBrahmanbaria.COM
নভেম্বর ৯, ২০১৭

---

নিজস্ব প্রতিবেদক : উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক কর্মরত কতিপয় এনজিও সংস্থা প্রশাসনের নির্দেশ উপেক্ষা করে নো ম্যানস ল্যান্ডে অবস্থান করছে। এসব এনজিও’র কর্মকাণ্ড, আচারণ ও চলাফেরা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত গ্রামবাসীর দাবি এসব এনজিওগুলো নো ম্যানস ল্যান্ডের কাছাকাছি স্থানে মোটা অংকের টাকায় ঘর ভাড়া নিয়ে সেখানে ত্রাণ সামগ্রী মজুদ করছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে উৎসাহীত এবং বিভিন্ন সহযোগিতা করায় রোহিঙ্গা স্রোত থামছেনা।

জেলা প্রশাসকের উদ্বৃত্তি নিয়ে ইউএনও এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সীমান্ত এলাকা থেকে এনজিওদের আগামী রবিবারের মধ্যে নো ম্যানস ল্যান্ড থেকে সরে আসার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

উখিয়া সীমান্তের আঞ্জুমানপাড়ায় বসবাসরত ইউপি সদস্য সুলতান আহমদ অভিযোগ করে জানান, রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক এনজিও সংস্থা এমএসএফ হল্যান্ড নো ম্যানস ল্যান্ডের কাছাকাছি স্থানে মাসিক ১ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিশাল আকার বাড়ী ভাড়া নিয়েছে। সেখানে বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রী মজুদ করছে। ১৮/২০জনের মতো দেশি-বিদেশী কর্মকর্তা-কর্মচারী সেখানে নিয়মিত তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের আচার-আচরণ ও কর্মকাণ্ড নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া।

ওই ইউপি সদস্য আরো বলেন, এনজিও সংস্থার ১২জন কর্মকর্তা সম্প্রতি আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারে গেছেন। সেখান থেকে ৬জন কর্মকর্তা ফিরে আসলেও বাকী ৬জন এখনো সেখানে অবস্থান করছে। তাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত রোহিঙ্গারা আসছে।

পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এনজিও সংস্থা এমএসএফ হল্যান্ডের রোহিঙ্গাপ্রীতি নিয়ে জনমনে প্রচণ্ড ক্ষোভ ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। গ্রামবাসীর অভিযোগ ওই এনজিও সংস্থার কারণে সীমান্তে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ থামছেনা। ইতোমধ্যে সহজ উপায়ে রোহিঙ্গা পারাপারের জন্য আঞ্জুমানপাড়া নো ম্যানস ল্যান্ডে অবস্থিত নাফ-নদীর উপরে একটি বিদেশী এনজিও সংস্থা সাঁকো নির্মাণে কাজ শুরু করলে জেলা প্রশাসন তা বন্ধ করে দেয়।

২৫ আগষ্ট থেকে মিয়ানমারে চলমান সহিংসতার মূখে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মধ্যে বড় একটি অংশ আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করেছে। এর নেপথ্যে একটি এনজিও সংস্থা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ইন্ধন ও সহযোগি রয়েছে বলে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠেছে। আঞ্জুমানপাড়া এলাকায় গত মাসাধিকাল ধরে এনজিও সংস্থা এমএসএফ হল্যান্ড তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। উক্ত এনজিও সংস্থা রোহিঙ্গাদের জন্য বিভিন্ন প্রকার লোভনীয় ত্রাণ সামগ্রী মজুদ করার সহ ভাড়া করা যানবাহন নিয়ে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে নিয়ে আসার বিষয়টি প্রশাসনের নজরে পড়েছে।

গত বুধবার সীমান্তের আঞ্জুমানপাড়া নো ম্যানস ল্যান্ডে সন্দেহজনক ঘুরাঘুরি করার সময় দুইজন ফরাসী নাগরিককে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা আটক করে পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। এর আগের দিন মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে আঞ্জুমান পাড়া সীমান্তের একটি পয়েন্ট সন্দেহজনক ভাবে অবস্থান নিয়ে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গাদের এপারে নিয়ে আসতে তৎপর হতে দেখে গ্রামাবাসী এক ফ্রান্সের নাগরিককে আটক করে পুলিশে দেয়। ওইদিন কুতুপালং শরনার্থী ক্যাম্পে বিনা অনুমতিতে অবস্থানকালে ৫জন বিদেশী নাগরিককে আটক করে প্রশাসন। তৎমধ্যে ৪জন বৃটিশ ও ১জন চায়না নাগরিক। পরে তাদেরকে কাজ থেকে মূচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।

রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ড, যে পথে রোহিঙ্গা আসে ওই সমস্ত এলাকায় সাম্প্রতিক সময়ে দেশি-বিদেশী এনজিও সংস্থা সংশ্লিষ্টদের আনাগোনা, অবাধ বিচরণ, রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশে অন্যতম কারণ বলে দাবি করেছেন উখিয়া উপজেলা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রবেশে ধারাবাহিকতা শূণ্যের কোটায় নিয়ে আসতে হলে এনজিওদের প্রতি প্রশাসনের নজরদারী সহ আইনগত ব্যবস্থা জরুরী হয়ে পড়েছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান জানান, আঞ্জুমানপাড়া সীমান্ত সহ আরো বেশ কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্টে এনজিওদের অপতৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করে নো ম্যানস ল্যান্ডে যে সমস্ত এনজিও অবস্থান করছে তাদেরকে আগামী রবিবারের মধ্যে সরে আসার জন্য বৃহস্পতিবার থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। তাছাড়া স্থানীয় চেয়ারম্যানদের এ বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।

এ জাতীয় আরও খবর