১৬ই নভেম্বর, ২০১৬ ইং, বুধবার ২রা অগ্রহায়ণ, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ


জলবায়ু চুক্তি থেকে সরে আসার পাঁয়তারা করছেন ট্রাম্প


Amaderbrahmanbaria.com : - ১৪.১১.২০১৬

 

নিজস্ব প্রতিবেদক : জলবায়ুর পরিবর্তন মোকাবেলার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিকভাবে যে চুক্তি হয়েছে তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে দ্রুত বের করে আনার উপায় খুঁজছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সদ্য জয় পাওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিমের এক সূত্রের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স খবরটি জানিয়েছে।


যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে অনানুষ্ঠানিকভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয় পাওয়ার পর চীন থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোকে ২০১৫ সালের প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে নতুন করে সমর্থন নিশ্চিত করতে দেখা গেছে। মরক্কোর মাররাকেশে ২০০টি দেশের মধ্যে চলমান জলবায়ু আলোচনায় এ সমর্থন জানানো হয়। ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত সম্মেলনটি চলবে।
তবে এ জলবায়ু চুক্তিকে সমর্থন করেন না ট্রাম্প। তার প্রশাসনের এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানায়, গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে কিভাবে প্যারিস জলবায়ু চুক্তি কার্যকর করা যাবে তা নিয়ে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন চুক্তির উদ্যোক্তারা। শেষ পর্যন্ত প্যারিস জলবায়ু চুক্তি কার্যকর করতে যে সংখ্যক সমর্থনের প্রয়োজন ছিল তা ৪ নভেম্বরেই অর্থাৎ নির্বাচনের আগেই নিশ্চিত হয়েছে এবং চুক্তিটি কার্যকর হতে শুরু করেছে।
ওই সূত্র রয়টার্সকে জানান, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বের হয়ে আসতে অঙ্গীকারবদ্ধ ট্রাম্প বিভিন্ন উপায় খুঁজছেন। চুক্তিটি থেকে বের হয়ে আসতে চার বছরের একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। কিন্তু সে প্রক্রিয়াকে কিভাবে পাশ কাটানো যাবে এখন তা নিয়ে ভাবছেন ট্রাম্প। ওই সূত্রের নাম প্রকাশ না করলেও রয়টার্স জানিয়েছে তিনি ট্রাম্পের ট্রানজিশন দলে আন্তর্জাতিক জ্বালানি ও জলবায়ু নীতিমালা নিয়ে কাজ করেন। ওই সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্পের বিকল্প উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে, প্যারিস চুক্তির প্যারেন্ট ট্রিটি বলে পরিচিত কনভেনশন ১৯৯২ থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেওয়া, এক বছর সময়ের মধ্যে দুটোর সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা বাতিল করা কিংবা প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বাক্ষর বাতিলের জন্য একটি প্রেসিডেন্সিয়াল আদেশ ইস্যু করা।
এদিকে মরক্কোর সম্মেলনে অনেক রাষ্ট্রই আশা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তির সঙ্গে থাকবে। মরক্কোর দাবি, শতাব্দীর মাঝামাঝি নাগাদ গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্মূলের জন্য যে চুক্তিটি করা হয়েছে তা অনেক মজবুত।

এক সংবাদ সম্মেলনে মরক্কোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী সালাহ এদ্দিন মেজোয়ার বলেন, ‘যদি কোনও দল এ চুক্তি থেকে বের হয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয় তবে তা চুক্তিকে প্রশ্নের মুখে ফেলতে পারবে না।’

এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক প্রধান প্যাট্রিসিয়া এসপিনোসা বলেন, ‘প্যারিস চুক্তির প্রচুর গুরুত্ব ও বিশ্বাসযোগ্যতা রয়েছে।’ ট্রাম্পের সঙ্গে একটি দৃঢ় ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে জাতিসংঘ আশাবাদী বলেও দাবি করেন তিনি।

প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশের এই বিপন্নতার প্রেক্ষিতে গত বছরের ডিসেম্বরে প্যারিসে কপ ২১ নামের একটি সম্মেলনে প্রথমবারের মতো একটি জলবায়ু চুক্তির ব্যাপারে সম্মত হন বিশ্বনেতারা। গত এপ্রিলে ১৭৫টি দেশ ওই সমঝোতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। চুক্তির আওতায় বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধির হার ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে বিশ্বজুড়ে কার্বন নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। চুক্তির লক্ষ্যমাত্রায় আরও রয়েছে- গাছ, মাটি ও সমুদ্র প্রাকৃতিকভাবে যতটা শোষণ করতে পারে, ২০৫০ সাল থেকে ২১০০ সালের মধ্যে কৃত্রিমভাবে গ্রিনহাউজ গ্যাসের নিঃসরণ সেই পর্যায়ে নামিয়ে আনা। প্রতি ৫ বছর অন্তর ক্ষতিকর গ্যাস নিঃসরণ রোধে প্রত্যেকটি দেশের ভূমিকা পর্যালোচনা করা। জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে এবং নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করতে গরিব দেশগুলোকে ধনী দেশগুলোর ‘জলবায়ু তহবিল’ দিয়ে সাহায্য করা। চুক্তিটি বাস্তবায়ন করতে কমপক্ষে ৫৫টি দেশের আইনসভার (পার্লামেন্ট) অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়, যারা নিঃসরিত কার্বনের অর্ধেকেরও বেশির জন্য দায়ী। অর্থাৎ অন্তত ৫৫ শতাংশ কার্বন নির্গতকরণের জন্য দায়ী এমন ৫৫টি দেশে অভ্যন্তরীণভাবে চুক্তিটি অনুমোদনের বাধ্যবাধকতা রাখা হয়। সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ কার্বন নির্গতকারী দুটি দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীন প্যারিস চুক্তির ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দেয়। এ দুটি দেশ পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে যৌথভাবে ৪০ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ করে থাকে।

ট্রাম্প-এর ট্রানজিশন টিমের ওই সূত্র চুক্তি নিয়ে সম্ভাব্য কূটনৈতিক সংকট তৈরির জন্য বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে দায়ী করেছেন। সিনেট থেকে অনুমোদন না নিয়ে ওবামা নির্বাহী আদেশে চুক্তিটির অনুমোদন দেওয়ায় সমালোচনা করেন তিনি। ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিমের ওই সূত্র বলেন, ‘ওবামা যদি এত তাড়াহুড়া করে চুক্তির অনুমোদন না দিতেন তবে আন্তর্জাতিক এজেন্ডায় এত বড় ধরনের কূটনৈতিক সংকট তৈরি হতো না।’





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদক : বিশ্বজিত পাল বাবু
চেয়ারম্যান : আলহাজ্ব নুরুজ্জামান
ঠিকানা : ৬০৩ ফুলবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563


close