নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রকৌশল পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ ধীরে ধীরে ও ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে গেলেও হঠাৎ ছন্দটতন ঘটেছে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে। এই সময় দেশের বিকাশমান এই পণ্যটি রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদে প্রকৌশল সরঞ্জাম রপ্তানিতে আয় হয়েছে আট কোটি ৮৯ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার বা ৬৯৭ কোটি টাকা। যা এ সময়ের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৭ দশমিক ১২ শতাংশ কম। একই সঙ্গে গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ খাতে রপ্তানি আয় ৩২ দশমিক ১১ শতাংশ কমেছে।
বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রকৌশল পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ৫১ কোটি ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। এর মধ্যে প্রথম তিন মাসে এই খাতের পণ্য রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ১৩ কোটি নয় লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। চলতি অর্থবছরে প্রকৌশল পণ্য রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৮ কোটি ৪৯ লাখ মার্কিন ডলার। এর মধ্যে জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৪ কোটি ১৪ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার।
প্রকৌশল পণ্যের মধ্যে আয়রন স্টিল রপ্তানিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আয় হয়েছে ৮৫ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৮ দশমিক ০০ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ খাতের আয় ৪ দশমিক ৪২ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আয়রন স্টিল রপ্তানিতে হয়েছিল ৮১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। আলোচ্য সময়ে তামার তার রপ্তানিতে আয় হয়েছে ৪৭ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার; যা এই সময়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২১ দশমিক ০৩ শতাংশ এবং আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২৭ দশমিক ৪০ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিতে তামার তার রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ৬৫ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার।
২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদে স্টেইনলেস স্টিল তার রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৬ লাখ ৬০ মার্কিন ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ২১ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার; যা এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৮ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং আগের অর্থবছরের এ সময়ের তুলনায় ৩২ দশমিক ০৮ শতাংশ কম। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসে স্টেইনলেস স্টিল তার রপ্তানিতে আয় হয়েছিল ৩১ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার।
প্রকৌশল সরঞ্জাম রপ্তানিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আয় হয়েছে আয় কোটি ৪৯ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫৪ দশমিক ১৯ শতাংশ এবং গত অর্থবছরের এ সময়ের তুলনায় এ খাতের আয় ৫৬ দশমিক ৭১ শতাংশ কম। এ সময়ে বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম রপ্তানিতে আয় হয়েছে এক কোটি ৫৭ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং আগের অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম।
চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মেয়াদে বাইসাইকেল রপ্তানিতেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। আলোচ্য সময়ে এই খাতে আয় হয়েছে দুই কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং আগের অর্থবছরের প্রথম ৩ মাসের তুলনায় ৬ দশমিক ৩১ শতাংশ কম।
অন্য প্রকৌশল পণ্য রপ্তানিতে চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে আয় হয়েছে এক কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার; যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫১ দশমিক ৪৭ শতাংশ কম। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে আয় হয়েছিল এক কোটি ৬৭ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায়ও এবারের আয় ২৩ দশমিক ১১ শতাংশ কমেছে।