২৭শে আগস্ট, ২০১৬ ইং, শনিবার ১২ই ভাদ্র, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ


দুনিয়া দাপাচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প


Amaderbrahmanbaria.com : - ২৪.০৮.২০১৬

 
নিজস্ব প্রতিবেদক : সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ রফতানি শুরুর পর বিশ্ববাসীর কাছে বাংলাদেশের ইমেজ আরো ইতিবাচকভাবে ফুটে ওঠে। বিকাশমান অর্থনীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে এখন সমীহ করছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

বুধবার ভারতের প্রভাবশালী দৈনিক আনন্দবাজার ‘প্রত্যাখ্যানের ‘বদলা! এখন দুনিয়া দাপাচ্ছে বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ওষুধশিল্প এখন আর পেছনের কাতারের নয়।

অমিত বসুর করা এই প্রতিবেদনে বিস্ময়ের সঙ্গে বলা হয় ‘কী ছিল আর কী হল। মাঝের চার দশকে আমূল পরিবর্তন। একাত্তরে স্বাধীন হওয়ার পর মুমূর্ষু বাংলাদেশ। অন্নের সঙ্গে ওষুধের সংকট। বাঁচতে হলে দুটোই দরকার। সুজলা সুফলা বাংলাদেশের মাটিতে তখনও রক্তের দাগ। বিপন্ন চাষীদের মাঠে যেতেই ভয়। প্রতিবেশী দেশের বদন্যতায় অন্ন সংস্থান যদিও বা হল, ওষুধ কোথায়।

রোগশয্যার রোগীর পাশে দাঁড়িয়ে প্রেসক্রিপশন লিখতে লিখতে ডাক্তার জানিয়ে দিচ্ছেন, এ সব ওষুধ আপনাদের যোগাড় করতে হবে। না পেলে কিছু করার নেই। ওষুধ তো আকাশের মেঘ নয় যে বৃষ্টি হয়ে টুপটাপ ঝরবে। অনেক কষ্টে ২০ শতাংশ ওষুধ দেশে তৈরি। বাকি ৮০ শতাংশ আসবে কোত্থেকে। পাকিস্তান দিতে পারত। তারা দেয়া বন্ধ করেছে। প্রকারান্তরে বলতে চাইছে, বোঝ এবার স্বাধীন হওয়ার জ্বালা। ইউরোপ, আমেরিকার বহুজাতিক ওষুধ কোম্পানিও ওষুধ দিতে নারাজ। তাদের সাফ কথা, ডলার দাও, ওষুধ নাও।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সদ্য স্বাধীন দেশে ডলারের রিজার্ভ তখন শূন্য। দুঃসময়ে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ায় পূর্ব ইউরোপের দেশ হাঙ্গেরি। সেখানকার ওষুধ সংস্থা ইগিস, গেইডেন, রিখটার কাইরন, মেডিম্পেস বাংলাদেশে ওষুধ সরবরাহে রাজি হয়। তারা জানিয়ে দেয়, বার্টার সিস্টেমে বা পণ্যের বিনিময়ে ওষুধ দেবে। এ তো হাতে চাঁদ পাওয়া। হাঙ্গেরিতে যেতে লাগল বাংলাদেশের পাট আর অন্যান্য কাঁচা পণ্য। পরিবর্তে এল ওষুধ।

প্রতিবেদনে এটা লেখা হয়েছে, ‘অন্যের করুণায় বাঁচাটাও তো সম্মানের নয়। ধীরে ধীরে ওষুধ উৎপাদন শুরু বাংলাদেশে। বিদেশি সংস্থার মাথায় হাত। বাংলাদেশের বাজার হারালে যে বিরাট ক্ষতি। ১৯৮২তে অর্ডিন্যান্স জারি করে বিদেশের ওষুধ নিয়ন্ত্রণ। কুঁড়ি থেকে ফুল হওয়ার মতো পাপড়ি মেলল বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প। এই মুহূর্তে বিশ্বের অনুন্নত ৪৮ দেশের মধ্যে ওষুধ উৎপাদনে শীর্ষে বাংলাদেশ। ২৫৭ কোম্পানির ২৪ হাজার ব্র্যান্ডের ওষুধ। বছরে ২৫ হাজার কোটি টাকার ওষুধ দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে যাচ্ছে। রফতানি বাড়ছে দ্রুত। কর্মসংস্থান দু’লাখের। উল্টো দিকে এখন আতান্তরে পাকিস্তান। তাদের ওষুধ শিল্পে ভাটার টান। অভাব মেটাতে বাংলাদেশের কাছে ওষুধ চাওয়ারও মুখ নেই।

এতে বলা হয়, বাংলাদেশের ওষুধ সবচেয়ে বেশি যাচ্ছে মিয়ানমারে। তারপর শ্রীলঙ্কায়। পাঁচ বছরে রফতানি দ্বিগুণ। ১২ মাসে রফতানি ৮ কোটি ডলারের বেশি। কাঁচামাল আমদানিতে এখনও যে খরচ হচ্ছে সেটা বন্ধ হবে ১০ বছরে। বাংলাদেশই তৈরি করবে যা দরকার। তখন রফতানি বেড়ে দাঁড়াবে ৩০০ কোটি ডলারে। বর্তমানে রফতানি বাণিজ্যে সবচেয়ে এগিয়ে পোশাক শিল্প। টাকার অঙ্কে ওষুধ রফতানি তাদেরও ছাপিয়ে যাবে।

ওষুধ রফতানির পথিকৃত বেক্সিমকো। ১৯৯২এ ইরাক, হংকং, ভিয়েতনাম, কোরিয়ায় পেনিসিলিন পাঠিয়ে চমক দেয়। পরের জায়গাটা নেয় প্যারাসিটামল। এবার যাবে কার্ভিডিলোল। আমেরিকার অনুমোদন পাওয়ায় হৃদযন্ত্রের ব্যাধি নিরাময়ের এই দুর্লভ ওষুধটি রফতানিতে কোনো বাধা নেই। আপাতত বাংলাদেশের ওষুধ যাচ্ছে ১৬০ দেশে। চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়ছে। অতিরিক্ত রফতানিতে ডলারের রিজার্ভে আর কোনো সংকট নেই। জীবনদায়ী ওষুধ দিয়ে বিশ্বকে বাঁচাচ্ছে বাংলাদেশ। সেই ওষুধেই বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রাণের জোয়ার।





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদকঃ জাবেদ রহিম বিজন

Amaderbrahmanbaria.com
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563



close