নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামীকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের তৃতীয় পায়রা সমুদ্র বন্দরের বাণিজ্যিক জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের আনুষ্ঠিক কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।বন্দরটি চালুর মধ্য দিয়ে নিরাপদ বাল্কপণ্য নদীপথে পরিবহনের মাধ্যমে আমদানি-রপ্তানি সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বৈরী আবহাওয়ার কারণে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস স্থগিত করা হলেও ইতোমধ্যে সরকারের কোষাগারে জমা হয়েছে রাজস্ব।
দীর্ঘ অপেক্ষার পর পায়রা বন্দরের কার্যক্রম উদ্বোধন হওয়ার খবরে দক্ষিণের জনপদ প্রাণবন্ত হয়ে ওঠেছে। মানুষের মাঝে চাপা আনন্দ লক্ষ্য করা গেছে।
পায়রা বন্দর সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর জাতীয় সংসদে পাস হয় পায়রা বন্দর অধ্যাদেশ ২০১৩। একই বছর ১৯ নভেম্বর বন্দরের ভিত্তি ফলক উন্মোচন করেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অন্য বন্দরগুলোর চেয়ে বাড়তি সুবিধা আর নানা প্রণোদনা দিয়ে অবশেষে সোনালি স্বপ্নের দ্বার উন্মোচন হচ্ছে দেশের তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রার।
পদ্মা সেতুর জন্য ৫২ হাজার ৩৭৯ মেট্রিক টন পাথর নিয়ে গত ১ আগস্ট বাংলাদেশের জল সীমায় সর্বপ্রথম নোঙর করে বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি ফরচুন বার্ড। প্রাথমিকভাবে মাদার ভেসেল থেকে লাইটার জাহাজে পণ্য খালাস করে নৌপথে পরিবহন করা হবে। তাই পায়রা বন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে অন্তত ১৫টি লাইটারেজ জাহাজ।
পায়রা বন্দরের কমান্ডার হাবিবুর রহমান জানান, বড় বড় জাহাজ রামনাবাদ চ্যানেলে নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারে এবং মূল বন্দরের জেটিতে যেন নোঙর করতে পারে এ জন্য নদীর গভীরতা ইতিমধ্যে পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু হবে অচিরেই।
পায়রা সমুদ্র বন্দরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন মো. সাইদুর রহমান জানান, বন্দর এলাকায় চলছে বিরামহীন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড। বন্দরটির অবকাঠোমো নির্মাণে ১৬ একর জায়গার উপর হচ্ছে জেটি ও অত্যাধুনিক কনটেইনার ক্যারিয়ার, পানি শোধনাগার, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শুল্ক স্টেশন, নিরাপত্তা ভবনসহ প্রয়োজনীয় ভবন। নিয়োগ দেওয়া হয়েছে শিপিং এজেন্ট, সিঅ্যান্ডএফ, ফ্রেইট ফরোয়ার্ডও।
এক হাজার ১২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের তৃতীয় এই বন্দর নির্মাণ করে এ অঞ্চলকে বিশেষ একটি অর্থনৈতিক জোন গড়ে তুলতে সরকারের হাতে নেওয়া হয়েছে দীর্ঘমেয়াদী ও চতুর্মুখী পরিকল্পনা।
প্রসঙ্গত, গত ১ আগস্ট পণ্য খালাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ার কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে। তবে ইতোমধ্যে আংশিক রাজস্ব এক কোটি ২২ লাখ ৬৪ হাজার টাকা পারিশোধ করা হয়েছে বলে জানালেন পটুয়াখালী রাজস্ব দপ্তরের উপপরিচালক মো. হাবিবুর রহমান।