২৪শে আগস্ট, ২০১৬ ইং, বুধবার ৯ই ভাদ্র, ১৪২৩ বঙ্গাব্দ


চালকের বয়স ৮ বছর, প্রশিক্ষকের ১০


Amaderbrahmanbaria.com : - ২০.০৮.২০১৬

মাহবুব খান বাবুল, সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) থেকে : সরাইলে দিনদিন বাড়ছে সিএনজি চালিত অটোরিকশার সংখ্যা। কিন্তু সেই তুলনায় বাড়ছে না চালক। ৮-১০ বছর আগে যারা টেম্পুর চালক ছিলেন তারাই এখন সিএনজি চালক। আবার কিছু রিকশা চালকও এসে পড়েছে এ পেশায়। অটোরিকশার সংখ্যা বেশী হওয়ায় মালিকরা যাছাই-বাছায় ছাড়াই অটোরিকশাটি তুলে দিচ্ছেন চালকের হাতে। অনুসন্ধানে জানা যায়, সরাইলের বিশ্বরোড মোড় থেকে নাসিরনগর ও ফান্দাউক সড়কে চলছে কয়েক’শ অটোরিকশা। একই স্থান থেকে সরাইল হয়ে অরুয়াইল সড়কে যাতায়ত করছে আরো কয়েক’শ অটোরিকশা। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে উভয় সড়কেই লাইসেন্স বিহীন ও শিশু চালকের সংখ্যা বেশী। সরাইল অরুয়াইল সড়কের শিশু চালকের সংখ্যা উল্লেখ যোগ্য। এ ছাড়া রয়েছে শিশু প্রশিক্ষকও। ফলে মাঝে মধ্যেই এ সড়কে ঘটছে দূর্ঘটনা। আর সকল যাত্রীই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে চলাচল করছে। সম্প্রতি বিশ্বরোড রোডের মোড় থেকে এক শিশু যাত্রীবাহী অটোরিকশা চালিয়ে যাচ্ছে। তার গন্তব্য চুন্টা। ডান পাশে বসে আরেক শিশু তাকে চালানো শেখাচ্ছে। কথা হয় তাদের সাথে। শিশু চালকের নাম আরমান মিয়া (০৮)। আরিফাইল গ্রামের মিলু মিয়ার ছেলে সে। আর প্রশিক্ষক একই গ্রামের জসিম মিয়ার শিশু পুত্র রনি (১০)। তারা জানায় রনি শেখাচ্ছে। আর আরমান চালিয়ে যাচ্ছে। আরমানের সমস্যা হলে ওস্তাদ রনি তো আছেই। তারা প্রত্যেকেই তাদের বাবার কাছ থেকে অটোরিকশা চালানো শিখেছে। সব সময় চালায় না। মাঝে মধ্যে সুযোগ পেলে টিপ মারে। আর বিশ্বরোড থেকে গ্যাস আনতে যায়। যে সময়ে তোমরা পড়া লেখা করার কথা সেই সময়ে অটোরিকশা চালাও কেন? এমন প্রশ্ন শুনে কিছুটা হতকচিত হয়ে পড়ে দুই শিশু। কিছুক্ষণ পর আরমান বলে আমরা গরীব। তাই চালায়। অটোরিকশা চালানোর বয়স তো তোমাদের হয়নি। একথা বলার সাথে সাথে তারা বলে আব্বার সাথে কথা বলেন। এ ছাড়াও এ সড়কে সন্ধ্যার পর এক শ্রেণির চালক যাত্রীদের রেখেই পাশে বসে অটোরিকশা চালানোর প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন নিয়মিত। যাত্রীরা চিৎকার করে প্রতিবাদ করলেও তারা না শুনার ভান করে থাকেন। এ বিষয়ে উপজেলা আইন শৃঙ্খলা সভায় আলোচনা হয়েছে। কিন্তু কোন প্রতিকার হয়নি আদৌ। অতি সম্প্রতি রাত সাড়ে ৭টায়। সরাইল থেকে চুন্টার উদ্যেশ্যে পেছনে ৩জন ও সামনে ২জন যাত্রী নিয়ে রওয়ানা দেয় চালক ভূইশ্বর গ্রামের জাকির মিয়া (৪২)। সরাইল বেপারিপাড়ার ব্রীজ পাড় হওয়ার পরই তার ডান পাশে বসা যুবকটিকে অটোরিকশাটি চালাতে দেয়। আর জাকির একদিকে হাত দিয়ে ধরে রাখেন। একটু পরপর অটোরিকশাটি ডানে বামে দ্রুত চলে যায়। চালক জাকির ষ্টার্ট চেপে ধরেন। বিষয়টি বুঝে যাত্রীরা জাকিরকে এভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। না শুনার ভান করে জাকির তার কাজ চালিয়ে যান। আর বলেন দূর্ঘটনা এত সহজ বিষয় নয়। এভাবেই অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে প্রশিক্ষণ দিতে দিতে ওই চালক গন্তব্যস্থল পর্যন্ত যায়। সরাইল কলেজের অধ্যক্ষ মৃধা আহমাদুল কামাল অধিক সংখ্যক শিশু চালক ও ইচ্ছেমত ঝুঁকি নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমি ভয়ে শিশু চালকদের অটোরিকশায় চড়ি না। যাত্রীবাহী অটোরিকশায় প্রশিক্ষণ এটা তো অনেক বড় ঝুঁকির কাজ। উভয় বিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। কারন মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করার অধিকার কারো নেই। সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ রুপক কুমার সাহা বলেন, এমন বিষয় আমার জানা নেই। তবে নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিব। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দা নাহিদা হাবিবা ২/১ সভায় এ বিষয়ে আলোচনার পর আর সামনে দিকে অগ্রসর হয়নি এমনটি স্বীকার করে বলেন, দ্রুতই আমরা সরজমিনে নেমে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিব।





Loading...


প্রকাশকঃ মোঃ আশ্রাফুর রহমান রাসেল
সম্পাদকঃ জাবেদ রহিম বিজন

Amaderbrahmanbaria.com
email : [email protected] (news)
Phone: +880851 62307
+8801963094563



close