শ্রমিক ধর্মঘটে অ্যাম্বুলেন্স আটকা পড়ে শিশুর মৃত্যু
পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটে রাস্তায় আটকে মারা গেছে একটি অসুস্থ শিশু। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নের চান্দগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরিবহন শ্রমিকদের বাধায় আটকা পড়া অ্যাম্বুলেন্সে সাত দিনের ওই কন্যা শিশু মারা যায়।
শিশুটির পরিবারের অভিযোগ, বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়নের অজমির গ্রামের কুটন মিয়ার সাত দিনের শিশু কন্যাকে অসুস্থ অবস্থায় রবিবার সকালের দিকে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন।
শিশুর অভিভাবকরা অ্যাম্বুলেন্সে করে সকাল ১০টার দিকে শিশুটিকে নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হন। যাওয়ার পথে বড়লেখা উপজেলার পুরাতন বড়লেখা বাজার, দাসেরবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে অ্যাম্বুলেন্সটি পরিবহন শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়ে। অ্যাম্বুলেন্সটি চান্দগ্রাম নামক স্থানে গেলে পরিবহন শ্রমিকরা গাড়ি আটকে চালককে মারধর করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টা অ্যাম্বুলেন্সটি আটকা থাকে। দুপুর দেড়টার দিকে গাড়ি ছাড়া পেলে শিশুটিকে পাশের সিলেট জেলার বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত শিশুর চাচা আকবর আলী ওরফে ফুলু মিয়া বলেন, ‘আমার ভাতিজী মায়ের দুধ খাচ্ছিল না। এজন্য তাকে বড়লেখা হাসপাতালে নিয়ে যাই। ডাক্তাররা তাকে সিলেট ওসমানীতে রেফার করেন। সঙ্গে সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে সিলেট রওনা দিই। প্রথমে দাসেরবাজারে গাড়ি আটকে চালককে মারধর করেন পরিবহন শ্রমিকরা । পরে অনুরোধ করলে গাড়ি ছাড়ে। চান্দগ্রামে আবার অ্যাম্বুলেন্স আটকে গাড়ির চাবি নিয়ে যায়। ৫০০ টাকা দাবি করে। প্রায় দেড় ঘণ্টা এখানে আটকে ছিলাম। এখানে মেয়েটা মারা গেছে। আমরা বড়লেখা থানায় গিয়ে অভিযোগ দিছি।’
সিএনজি পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন বড়লেখা উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন সন্ধ্যায় বলেন, ‘সিএনজি শ্রমিকরা যেখানে যেখানে ব্যারিকেড দিয়েছিল। সকালেই তা তুলে দিয়েছি। অ্যাম্বুলেন্স আটকানোর সঙ্গে কোনো সিএনজি শ্রমিক জড়িত না।’
বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জসীম সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বলেন, ‘একটি শিশু মারা যাওয়ার কথা লোকজন বলাবলি করছে। সিলেটে যাওয়ার পথে রাস্তায় আটকা মারা গেছে। এরকম কথা উঠেছে। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’