পুলিশের সঙ্গে ছবিতে অর্ন্তবাস পরিহিত ব্যক্তিটি কে ?
রাজধানীর পোস্তগোলায় গত শুক্রবার বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রথম বুড়িগঙ্গা সেতুকে টোলমুক্ত করার দাবিতে আন্দোলনরত পরিবহন শ্রমিকদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এসময় অস্ত্র হাতে সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি ও অর্ন্তবাস পরিহিত এক ব্যক্তিকে দেখা গিয়েছিল। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মিডিয়া ও সাধারণ মানুষের মানুষের মাঝে ছিল নানান কৌতুহল।
অবশেষে পুলিশই তার পরিচয় নিশ্চিত করল। তিনি দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার কনস্টেবল এবাদত বলে জানা গেছে। ঘটনার সময় শ্রমিকরা তাকে আটকে রেখে তার পরিহিত পুলিশের ইউনিফর্ম খুলে নেয়ার পর অস্ত্র নিয়ে দৌঁড় দিয়ে আক্রমনকারীদের প্রতিহত করেছিলেন তিনি। এমন ছবিই বিভিন্ন মিডিয়া এসেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার শাহ মিজান শফিউর রহমান। শনিবার (২৭ অক্টোবর) বিডি২৪লাইভের কাছে অস্ত্রধারী সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি ও অর্ন্তবাস পরিহিত ব্যক্তিটি পুলিশেরই সদস্য বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, সাদা স্যান্ডো গেঞ্জি ও অর্ন্তবাস পড়া ব্যক্তিটি দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানার একজন কনস্টেবল। এমন অবস্থায় অস্ত্র হাতে থাকায় মিডিয়া ও সাধারণ মানুষের মাঝে জন্ম নেয় নানান প্রশ্নের। পরিচয় নিশ্চিত করে অবশেষে সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটালেন ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার।
তিনি আরো বলেন, সংঘর্ষের সময় শ্রমিকরা এবাদত নামে এক পুলিশ সদসকে আটকে তার পড়নে পুলিশের ইউনিফর্ম খুলে নিয়ে মারধর করে। এক পর্যায় তাকে ধারালো ছুরি দিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। তারপর অস্ত্র হাতে অর্ন্তবাস পরিহিত অবস্থায় দৌঁড় দিয়ে পালিয়ে আসে। তারপর কাছের একটি আনসার ক্যাম্প থেকে একটি লুঙ্গি সংগ্রহ করে আবার পুলিশের সাথে যোগ দেয়। কনস্টেবল এবাদত বর্তমানে রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানান তিনি।
লুঙ্গি গেঞ্জি পরিহিত লোকটি তাদের পুলিশ সদস্য এটা নিশ্চিত করে এসপি মিজান বলেন, পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ অবস্থা ছিল। এলোপাথারি চর্তুদিক থেকে ইট পাটকেল মারা হচ্ছিল। পুলিশ শ্রমিকদের কন্ট্রোল করতে হিমসিম খায় সে সময়। অস্ত্র নিয়ে যখন দৌঁড় দেন পুলিশ সদস্যটির এক পর্যায়ে লুঙ্গি খুলে যায়। পরে এই ছবিই বিভিন্ন মিডিয়ায় আসে।
তিনি বলেন, শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টা থেকে থেমে থেমে বেলা ১টা পর্যন্ত ঢাকার কেরানীগঞ্জের পোস্তগোলা ব্রিজের ঢালে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে ওসিসহ ৩০জন পুলিশ আহত ও ব্যাপক গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এই ব্যাপারে মামলা প্রক্রিয়াধীর আছে বলেও জানায় পুলিশ।সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষেও ঘটনায় ৯ জন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। আরো শতাধিক আহত হয়। ঘটনা স্থলেই মারা যায় সোহেল নামে এক শ্রমিক।
ঘটনাসূত্রে জানা যায়, প্রথম বুড়িগঙ্গা সেতুর টোল নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগের দুর্নীতিকে দায়ী করে। শ্রমিক নেতাদের অভিযোগ ছিল বরাবরই এই সেতুর টোল নির্ধারণ নিয়ে সড়ক বিভাগ সিন্ডিকেটের আশ্রয় নিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাত করে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও লাখ লাখ টাকা ঘুষের বিনিময়ে একটি অনভিজ্ঞ প্রতিষ্ঠানকে টোল আদায়ের দায়িত্ব দেয়। টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানকে অবৈধ সুবিধা দিতে অসামঞ্জস্যপূর্ণ টোল নির্ধারণ করায় শ্রমিকদেও মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। এই টোল কমিয়ে আনার দাবিতেই গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ করছিল পরিবহন শ্রমিকরা।