শাবি ছাত্রলীগ নেতার ইয়াবা সেবনের ছবি ভাইরাল
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তরিকুল ইসলামের ইয়াবা সেবনের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।তরিকুলের বিরুদ্ধে ছাত্রদলকে পৃষ্ঠপোষকতা, ইয়াবাসহ মাদকসেবন ও ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (২৬ অক্টোবর) সকাল থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তরিকুল ইসলামের ইয়াবা সেবনের একাধিক ছবি সংবলিত পোস্ট আসতে থাকে।
ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা এসব পোস্টে ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করেন। শাবি ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবু সাঈদ আকন্দ তার এক পোস্টে উল্লেখ করেন, আমরা যে সময় ক্যাম্পাস ছেড়েছি তখন এতটা বাজে অবস্থা রেখে আসিনি।তরিকুল ফাওখোর, মাদকসেবন যে করবে তা ভাবতে পারিনি। এখন সে মাদকসেবনের পাশাপাশি ব্যবসাও করে। শুনেছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের সঙ্গে তার খুব ভালো সম্পর্ক। পোস্টে তিনি তরিকুল ইসলামকে ইয়াবাসেবন ও ব্যবসায়ী উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
জানা যায়, তরিকুল খুলিয়াপাড়া, আখালিয়া এলাকার এলাহী ৯/এ নং বাসায় বসবাস করতেন। পরে সরকারের মাদকবিরোধী অভিযান শুরু হলে তিনি ওই বাসা ত্যাগ করেন। ওই বাসায় বসেই ইয়াবা সেবন করতেন বলে তরিকুলের একাধিক সহকর্মী নিশ্চিত করেছেন।নাম প্রকাশ না করার শর্তে ছাত্রলীগের একাধিক নেতা জানান, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন অনুসারী হয়ে যেখানে অন্য নেতারা নিজে চলতে পারেন না সেখানে তরিকুল সিলেট শহরে ফ্ল্যাট নিয়ে বসবাস করতেন, দামি দামি মোটর বাইক চালাতেন।
অনেক আগে থেকেই তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। কিন্তু কোনো প্রমাণ ছিল না। এমনকি হলসহ বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ইয়াবা সরবরাহ করত তরিকুল।ছাত্রদলকে পৃষ্ঠপোষকতা: ছাত্রলীগ নেতা তরিকুলের বিরুদ্ধে ছাত্রদলকে পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক খলিলুর রহমান ও ছাত্রলীগ কর্মী শামীম বিশ্বাস ২০১৩ সালের শেষের দিকে ছাত্রদলের মিছিল-সমাবেশে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে।
ছাত্রদলের মিছিল-সমাবেশে অংশ নেয়া খলিল ও শামীমের ছবি ও খবর একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশ হলেও তরিকুলের পৃষ্ঠপোষকতায় ছাত্রলীগে পদ পায় ও রাজনীতি করে। এমনকি বর্তমানে খলিলুর রহমান ছাত্রলীগের মিছিল-মিটিংগুলোতে প্রথম সারিতে অবস্থান করেন।অভিযুক্ত শাবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি তরিকুলের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, এ ছবিটি দুই বছর আগের সিনিয়র সহসভাপতি আবু সাঈদ আকন্দ দুষ্টমি করে তুলেছিলেন। তিনি বলেন, আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করতেই এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে আবু সাঈদ আকন্দের সঙ্গে কথা বললে তিনি যুগান্তরকে জানান, আমি ছবি তুলতে যাব কেন? আমি তো ইয়াবা সেবন করি না। আর এটা দুই বছর আগের নয়, সাম্প্রতিক ছবি। সে যাদের সঙ্গে ইয়াবা সেবন করে তারাই এটা সরবরাহ করেছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তার নজরে আসেনি। তবে মাদকসেবন ও মাদক ব্যবসায় জিরো টলারেন্স দেখাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে, প্রমাণ পাওয়া গেলে সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। সূত্র: যুগান্তর