মঙ্গলবার, ৩০শে অক্টোবর, ২০১৮ ইং ১৫ই কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

সকালেই ৫টি ডিম ১২টি কলা খাচ্ছেন জিন্নাত

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন জিন্নাত আলী এখন ভিআইপি রোগী! জাতীয় সংসদে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সাংসদদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আসার পর কপাল খুলেছে তার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি ব্লকের ১৭ তলায় এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তির পর তাকে আর দশটা রোগীর মতো সকাল, দুপুর ও রাতের খাবার দেয়া হতো। কিন্তু তা খেয়ে জিন্নাত আলীর পেটের সামান্য অংশই ভরতো। বলা যায় অনেকটা অভুক্ত থেকেই দিন কাটতো তার। কিন্তু এখন জিন্নাত আলী পেটভরে খাবার খাচ্ছেন। রীতিমতো ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ অনুসারে বিশেষ ব্যবস্থায় তাকে খাবার দিচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

বর্তমানে জিন্নাত আলীর সকালে নাস্তার মেন্যুতে থাকছে দুটি বড় সাইজের পাউরুটি, পাঁচটি ডিম ও এক ডজন কলা। দুপুর ও রাতের বেলায় তাকে ছয়জন থেকে সাতজন রোগীর সমপরিমাণ খাবার দেয়া হচ্ছে। আগে খাবারের কষ্ট পেলেও বর্তমানে তিনি দৈনিক ১৮ জন থেকে ২০ জন রোগীর খাবার একাই পাচ্ছেন।

বিএসএমএমইউ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আবদুল্লাহ আল হারুন বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তির পর থেকেই জিন্নাত আলীকে অন্যান্য রোগীর চেয়ে বেশি খাবার দেয়া হচ্ছিল। তবে লম্বা ও চাহিদা অনুসারে তার খাবার তালিকা প্রণয়নের জন্য তৃপ্তি নামের একজন ডায়েটিশিয়ানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। দায়িত্বপ্রাপ্ত ডায়েটিশিয়ান জিন্নাত আলীর সঙ্গে কথাবার্তা বলে তার প্রতি বেলা কতটুকু খাবার প্রয়োজন সে সম্পর্কে জেনে আমাদেরকে অবহিত করেন।’

তিনি জানান, জিন্নাত আলীকে হাসপাতাল থেকে প্রতি বেলায় ছয় থেকে সাতজন রোগীর সমপরিমাণ সকালের নাস্তা, দুপুর ও রাতের খাবার দেয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কিম্বা সাংসদদের সঙ্গে দেখা করে আসার পর খাবার বৃদ্ধি করা হয়েছে-বিষয়টি এমন নয় দাবি করে তিনি বলেন, ‘শুরু থেকেই জিন্নাত আলীকে সাধারণ যে কোনো রোগীর চেয়ে বেশি খাবার দেয়া হয়।’

বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা মানুষের দাবিদার কক্সবাজারের জিন্নাত আলীর উচ্চতা ৮ ফুট ৬ ইঞ্চি। গত বুধবার (২৪ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান জিন্নাত আলী। সাক্ষাৎকালে জিন্নাত শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানালে তিনি তার চিকিৎসার দায়িত্ব দেন।

কক্সবাজারের রামু উপজেলার গর্জনিয়া বড়বিল গ্রামে জিন্নাত আলীর বাড়ি। বৃদ্ধ বাবা আমীর হামজার এক মেয়ে, তিন ছেলের মধ্যে জিন্নাত তৃতীয়। অন্য সবার মতো স্বাভাবিক ছিল জিন্নাতের গড়ন। কিন্তু বয়স যখন ১২ বছর, সেসময় থেকেই দ্রুত উচ্চতা বাড়তে থাকে। প্রতিবছর দুই থেকে তিন ইঞ্চি করে আকৃতি বাড়তে থাকে। এভাবে ১০ বছরের মধ্যে প্রায় চার ফুট উচ্চতা বেড়ে জিন্নাত এখন ৮ ফুট ৬ ইঞ্চির এক মানব।