এ দিনটির অপেক্ষাতেই ছিলাম : আশরাফুল
জাতীয় ক্রিকেট লিগে ঢাকা মেট্রোপলিশের হয়ে খেলছেন মোহাম্মদ আশরাফুল। আগামীকাল থেকে পঞ্চম রাউন্ড শুরু হবে। আশরাফুলরা বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে ঢাকা বিভাগের। ওই ম্যাচের জন্যই অনুশীলন করছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। তবে, অনুশীলনে থাকলেও অন্য অনেকের মতো তার চোখ ছিল ঢাকায় বিপিএল ড্রাফটে। আশপাশের সবাইকে বলে রেখেছিলেন, তার কোনো খবর হলেই যেন জানায়।
দুপুর ২টার পর প্র্যাকটিস শেষে সুইমিং করছিলেন আশরাফুল। ওই সময়ই ড্রাফটে সপ্তম কলে তাকে কিনে নেয়ার ঘোষণা দেয় চিটাগাং ভাইকিংস। সঙ্গে সঙ্গেই খবরটা চলে গেল আশরাফুলের কানে। ৫ বছর ধরে যে খবরটার অপেক্ষা করছিলেন, অবশেষে সেটা পেয়ে গেলেন তিনি। সুইমিংপুল থেকে উঠেই কথা বললেন নিজের চাওয়া-পাওয়া এবং আবেগ-অনুভূতি নিয়ে। শুরুতেই জানালেন, ‘এই দিনটার অপেক্ষাতেই ছিলাম। খুব খুশি আমি।’
সিলেটের সঙ্গেই নাকি কথা হচ্ছিল আশরাফুলের। তবে, ড্রাফট যেহেতু একটা ভাগ্যের বিষয়। লটারিতে যার নাম আগে আসে, যে কল করার সুযোগ আগে পায়, তারাই খেলোয়াড় পছন্দমতো বাছাই করার সুযোগ পায়। সে কারণে আশরাফুলকে কিনে নিয়েছে চট্টগ্রাম।
আশরাফুল নিজে এসব তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘আমি অপেক্ষায় ছিলাম কখন খবর আসে, আমাকে কোন দল নেয়। যেহেতু প্লেয়ার ড্রাফটে ইচ্ছে করলেই কাউকে নেয়া যায় না, লটারিতে কার সিরিয়াল বা কার কল করার সুযোগ আগে আসে তার ওপর নির্ভর করে অনেক কিছু। তারপরও সিলেটের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। তারা আমার ব্যাপারে উৎসাহ দেখিয়েছিলি; কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাকে নিয়েছে চট্টগ্রা্ম।’
বিপিএলে ডাক পেয়ে আশরাফুল খুব খুশি। আবার তিনি তারকা সমৃদ্ধ কোনো দলেও খেলতে চাননি। আশরাফুল বলেন, ‘আমি খুব খুশি একটা বিশেষ কারণে। আমি ইচ্ছে করেই এমন দলে খেলতে চেয়েছি, যে দলে বিদেশি ও স্থানীয় তারকা তুলনামূলক কম। রংপুর ঢাকা কুমিল্লা ও খুলনার চেয়ে চট্টগ্রামে নামি তারকার সংখ্যা কম। কাজেই আমার বিশ্বাস, আমি খেলার সুযোগ পাবো এবং নিজেকে মেলে ধরার জায়গাও বেশি থাকবে।’
কেন চট্টগ্রামে খেলার সম্ভাবনা বেশি? সেটাও জানালেন আশরাফুল। তিনি বলেন, ‘ওখানে মুশফিক আছে। সে খুব আন্তরিক। এর বাইরে নান্নু ভাই আছেন। তিনি প্রধান টেকনিক্যাল ডিরেক্টর। তিনি আমার সাবেক কোচও। এছাড়া নোবেল ভাই আছেন। তিনি খুব প্রাণখোলা মানুষ এবং আমার অনেক দিনের চেনা।’
এই দিনের অপেক্ষাতেই ছিলেন আশরাফুল। নিষেধাজ্ঞা ফিরে তো ঘরোয়া ক্রিকেটে অনেক খেলেছেন। বিপিএলটা বাকি ছিল। তিনি বলেন, ‘আমি এই দিনটার অপেক্ষাতেই ছিলাম। কারণ, দুবার প্রিমিয়ার লিগ খেলা হয়েছে এবং এনসিএল-বিসিএলও খেলছি। বাকি ছিল বিপিএল। বিপিএলটা এমন এক প্ল্যাটফর্ম, যেটা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের একটা সাজা জাগোনো আসর। বিশ্বের অনেক দেশে এ খেলা সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। সবচেয়ে বড় কথা, আমি মনে করি, বিপিএল হচ্ছে এমন এক ফ্ল্যাটফর্ম- যেটা একজন ক্রিকেটারকে দেশ এবং দেশের বাইরে খুব তাড়াতাড়ি পরিচিতি এনে দেয়। এখানে ভালো খেলতে পারলে একটা অন্যরকম সাড়া পড়ে চারদিকে। তাই আমি সব সময় মুখিয়ে ছিলাম বিপিএল খেলতে। আমার সামর্থে্যর সবটুকু উজাড় করে চেষ্টা করবো সবটুকু মেলে ধরতে এবং আবার সবার চোখে পড়তে।’
কিন্তু জাতীয় লিগে তো আপনার পারফরম্যান্স তেমন ভালো না? এর কোনো প্রভাব কি বিপিএলে পড়তে পারে? আশরাফুলের সোজা সাপটা এবং আত্মবিশ্বাসী জবাব, ‘না না ওরকম কোনো কিছু হওয়ার সম্ভাবনা নাই। কারণ, জাতীয় লিগ চার দিনের ম্যাচ আর ওটা গহচ্ছে ২০ ওভারের ম্যাচ। আমি প্রিমিয়ার লিগে ভালো খেলেছি এবার বিপিএলে ২০ ওভারের ম্যাচেও আশা করি ইনশাআল্লাহ ভালো খেলতে পরবো।’