বুধবার, ৩১শে অক্টোবর, ২০১৮ ইং ১৬ই কার্তিক, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

ইমারজেন্সি লেন বনাম অ্যাম্বুলেন্সের গায়ে কালি

২৯ জুলাই কুর্মিটোলায় বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের দুটি বাস রেষারেষি করতে গিয়ে দুই শিক্ষার্থীকে চাপা দেয়। দুজনই ঘটনাস্থলে নিহত হয় ও ১২ জন আহত হয়। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সারাদেশে শুরু হয়েছিল ছাত্রদের সম্মিলিত আন্দোলন। সেই আন্দোলনে অনন্য নজির সৃষ্টি করে স্কুল শিক্ষার্থীরা।

স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও ঢাকার রাস্তায় ইমার্জেন্সি লেন কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। অথচ সেটাই করে দেখায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। মেধাবী এ ছেলে-মেয়েরা ঢাকার রাজপথে চলতি বছরের আগস্টের ২ তারিখে ইমার্জেন্সি লেন তৈরি করে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। আন্দোলনের বিভিন্ন নজির গণমাধ্যমে উঠে আসে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে এদেশের মানুষের মনে যে আশার সঞ্চার করেছিল তা নিভে গিয়ে বিপরীত চিত্র উঠে আসছে। গতকাল শনিবার শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি সংসদ সদস্য ওয়াজিউদ্দিন খান ও সাধারণ সম্পাদক উছমান আলী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৯ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে ‘সড়ক পরিবহন আইন -২০১৮’ পাস হয়েছে। এ আইনে শ্রমিক স্বার্থ রক্ষা ও পরিপন্থী উভয় ধারা রয়েছে। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে গণ্য না করে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আইন পাস করা হয়েছে।

আইনে সড়ক দুর্ঘটনা মামলায় অপরাধী হয়ে ফাঁসির ঝুঁকি রয়েছে। এমনই অনিশ্চিত ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পেশায় দায়িত্ব পালন করা শ্রমিকদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এর কারণে আন্দোলন ছাড়া বিকল্প কোনো আমাদের সামনে খোলা নেই।

আজ রবিবার সারদেশে শ্রমিকরা আন্দোলনে নামে। এরপর থেকেই তারা সড়ক পথে যাত্রীদের হেনস্থা করতে শুরু করে। যার হাত থেকে রক্ষা পায়নি অ্যাম্বুলেন্সও। রাজধানীর শিমরাইল মোড়, শনির আখড়া, চিটাগাং রোডে যাত্রীদের হেনস্থা করা শুরু হয়। চালকদের কালি মাখিয়ে দেয়ার ঘটনা ঘটে। এছাড়াও নারায়ণগঞ্জে শিক্ষার্থীদের বাসে পোড়া মবিল নিক্ষেপ করা হয় বলে জানা গেছে। এছাড়াও রাজধানীর অনেক স্থানে অ্যাম্বুলেন্সও আটকে দেয়া হয় বলে জানা গেছে।

বিআরটিসির বিভিন্ন ডিপো থেকে সরকারি বাস বের হলেও পরিবহন শ্রমিকদের বাধায় বাসগুলো চালানো যাচ্ছে না বলে জানা গেছে।

বিআরটিসির গাজীপুর ডিপোর ম্যানেজার বুলবুল আহমেদ গণমাধ্যমকে বলেন, সকালে আমি কিছু বাস বের করেছিলাম। কিন্তু গাজীপুর চৌরাস্তা এবং বোর্ড বাজারে সেগুলো আটকে দিয়েছে পরিবহন শ্রমিকরা। আমাদের কয়েকজন চালককে পিটিয়েছে। এজন্য এখন বাস চালানো বন্ধ আছে।
সূত্র:কালের কণ্ঠ