‘এ মুহূর্তে গাড়ি চালাতে বললে শ্রমিকরা তো আমাকে খুন করে ফেলবে’
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরে আহ্বানে সাড়া দিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী। রোববার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে সকালে রাজধানীর সেতুভবনে ইউরোপিয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই মুহূর্তে আইন পরিবর্তন করে দাবী মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। তিনি পরিবহণ শ্রমিকদের উদ্দেশে বলেন, পরবর্তী পার্লামেন্ট পর্যন্ত তাদের অপেক্ষা করতে হবে। একটু ধৈর্য্য সহকারে তারা অপেক্ষা করবেন, এর মধ্যে কোন ন্যায় সঙ্গত বিষয় থাকে তাহলে পরবর্তীতে আলোচনার মাধ্যমে বিবেচনা করা হবে। ধর্মঘট প্রত্যাহার করুন, মানুষকে কষ্ট দিয়ে কোন লাভ নেই ।
মন্ত্রীর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেবেন কি না জানতে চাইলে শ্রমিক নেতা ওসমান আলী বলেন, ‘এই কথা এখন বলে কেন? ওবায়দুল কাদের সাহেব একথা আমাদের ডেকে আগেও তো বলতে পারতেন। এখন কেন বলছেন এ কথা? আর তার আহ্বানে কি ধর্মঘট প্রত্যাহার হবে? পাশাপাশি উনি আবার বলতেছে আইন পরিবর্তন করা সম্ভব না। কিন্তু এ মুহূর্তে আমি যদি শ্রমিকদের বলি তোমরা গাড়ি চালাও, ওই শ্রমিকরা তো আমাকে খুন করে ফেলবে। শ্রমিকরা বলবে তুমি দালাল। সরকারের কথায় তুমি ধর্মঘট প্রত্যাহার করছো। এই কথাটা আমাদের ডাইকা বললো না কেনো ওই দিন, যেদিন (২৭ সেপ্টেম্বর) ওবায়দুল কাদের সাহেবকে আমি নিজে সবার আগে জানাইছি। কিন্তু উনি বলেন সময় পান না।’
‘অথচ উনি সারা দেশে জনসভা করার সুযোগ পান কিন্তু ৭০ লক্ষ পরিবহন শ্রমিকের সাথে একটা বৈঠক করার সুযোগ পান না। উনি সাংবাদিকদের বললে কি ধর্মঘট প্রত্যাহার হবে ভাই? আবার পাশাপাশি বলতেছে পরবর্তী পার্লামেন্ট পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। কিন্তু এখন কেন এ কথা?’ প্রশ্ন রাখেন ওসমান আলী।
শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এই শ্রমিক নেতা বলেন, ‘উনি আমাদের ডেকে বললো না কেন যে, ঠিক আছে ভাই আপনারা আমাদের সঙ্গে ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে ছিলেন। আমরা আপনাদের অনেক উপকার করছি। আপনারাও আমাদের অনেক উপকার করছেন, এখন যেহেতু আইন হয়ে গেছে তাইলে পরবর্তী পার্লামেন্ট পর্যন্ত আমাদের সুযোগ দেন। বিষয়টা আমরা আরো পর্যালোচনা করে দেখি।’
ওসমান আলী বলেন, ‘এ কথাগুলো বললেও তো আমরা পরিবহন শ্রমিকদের কে বুঝাতে পারতাম। কিন্তু এখন কিভাবে তাদের বুঝাবো। মন্ত্রীর এ সিদ্ধান্ত মানা সম্ভব নয়।’
এখন ফেডারেশন অফিসে বসে সাংগঠনিকভাবে আলোচনা করে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথাও জানালেন এই নেতা।