মঙ্গলবার, ৯ই অক্টোবর, ২০১৮ ইং ২৪শে আশ্বিন, ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

মাশরাফির মতো সাকিবও কিন্তু ফাইটার : আকরাম

চোটের বিরুদ্ধে মাশরাফি বিন মুর্তজার লড়াইয়ের গল্প কে না জানে? মাশরাফি নামের অনেকগুলো প্রতিশব্দের একটি হয়ে গেছে ‘যোদ্ধা’। এই যোদ্ধার কাছে বারবার পরাজিত হয়েছে ইনজুরি। পায়ে সাত বার অপারেশন করার পরও এখন পর্যন্ত বল হাতে বাঘের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েন ২২ গজে। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ২৫০ উইকেটের মাইলফলক পার করে হয়েছেন ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী। আর সতীর্থ সাকিব আল হাসান? তিনিও কি যোদ্ধা নন?

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত ত্রিদেশীয় সিরিজে বাম হাতের কনিষ্ঠা আঙুলে চোট পেয়েছিলেন সাকিব। সেই চোট থেকে পুরোপুরি না সেরেই কয়েকটি সিরিজ খেলে ফেলেন। সর্বশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর শেষে পুরোপুরি চোটমুক্তির জন্য অপারেশন করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের ইচ্ছা এবং ফিজিও থিহান চন্দ্রমোহনের সবুজ সংকেত পেয়ে সাকিব খেলতে যান এশিয়া কাপে। এই খেলতে যাওয়াই কাল হয়ে দাঁড়ায় তার জন্য।

ইনজুরিগ্রস্ত আঙুলে বাজে ধরণের ইনফেকশন নিয়ে এশিয়া কাপের মাঝপথেই দুবাই থেকে দেশে ফিরে আসেন সাকিব। ইচ্ছা ছিল পরেরদিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার। কিন্তু সেদিন সকালে আঙুলের অবস্থা ভয়াবহ রূপ নেয়। ফুলে ঢোল হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ছিল প্রচণ্ড ব্যথা। রাজধানীর একটি হাসপাতালে এলে ডাক্তাররা দেখে আঁতকে উঠেন। তারা বলেন, আরেকটু দেরি হলে হাতটাই হয়তো হারাতে হতো সাকিবকে! প্রচুর পুঁজ বের করা হয় সাকিবের হাত থেকে।

আঙুলের জরুরি অবস্থা খানিকটা সামাল দেওয়ার পর শুক্রবার রাতে সাকিব যান অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানে বিশেষজ্ঞ দেখানোর পর অবস্থা বুঝে নেওয়া হবে ব্যবস্থা। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খানের বিশ্বাস, নিজের লড়িয়ে মানসিকতা দিয়েই এবারের চোটকে জয় করবেন সাকিব।

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, সাকিব ব্যথা নিয়ে যে পারফরম্যান্স করেছে, একজন ফাইটার বলেই পেরেছে। মাশরাফির জায়গায় অন্য কেউ হলে, অনেক বড় বড় ক্রিকেটার ইনজুরিতে পড়ে খেলা ছেড়ে দিয়েছে, কিন্তু মাশরাফি সেটা করেনি। সাকিবও কিন্তু ফাইটার, কষ্ট হলেও আশা করছি সে এই পারফরমেন্সই করবে। এখানে গুরুত্বপূর্ণ হল বিষয়টাকে আপনি মানসিকভাবে কিভাবে নিচ্ছেন। ওদেরকে তো ছোটবেলা থেকেই আমি চিনি। মাশরাফি মানসিকভাবে অনেক শক্ত, ইনশাআল্লাহ ওরা আগের জায়গায় ফিরে আসবে।’

আকরাম আরও বলেন, সাকিবকে সম্পূর্ণ সুস্থ করার জন্য সম্ভাব্য সেরা চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া সাকিব দেশে ফিরে আসলে ফিজিও থিহান চন্দ্রমোহনের কাছে জানতে চাওয়া হবে, কেন তিনি এই বিপদের আঁচ আগে থেকেই পেলেন না? ফিজিওর কোনো গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসও দিয়ে রাখলেন সাবেক এই অধিনায়ক।