একদিন স্ত্রী তার স্বামীকে পরীক্ষা করার জন্য সিদ্ধান্ত নিলো, স্বামীর ঘরে ঢোকার শব্দ পেয়ে স্ত্রী খাটের নিচে লুকিয়ে পরল…….
#একদিন এক স্ত্রী তার স্বামীকে পরীক্ষা করার জন্য সিদ্ধান্ত নিলো !
স্বামীর ঘরে ঢোকার শব্দ পেয়ে স্ত্রী খাটের নিচে লুকিয়ে পরল !
পাশেই একটা টেবিলে একটা চিঠি দেখতে পেয়ে ভদ্রলোকটি পড়তে শুরু করলেন …
**********
স্ত্রী : তুমি এখন আর আমাকে মতো কেয়ার করো না…ভালোবাসোনা… সময় দাওনা.. মনে হচ্ছে তোমার জীবনে অন্য কোনো মেয়ের আগমন ঘটেছে !
দূরে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছো !
তোমার আর কষ্ট করা লাগবেনা !
আমি ই তোমার কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছি! ভালো থেকো তুমি !
চিঠি টা পড়ার পড়ে স্বামী পকেট থেকে মোবাইল টা বের করে কানে দিয়ে ই বলতে শুরু করলো…
জানু… আপদটা বিদায় হয়েছে..এখন রিলাক্সে থাকতে পারব !
আমি এখন ই আসছি তোমার সাথে দেখা করতে… ! এসব বলে ফোনটা কেটে দিয়ে ড্রেস চেইঞ্জ করে রুম থেকে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে পরল !
এসব শুনতে শুনতে স্ত্রী মুখ চেপে কান্না করতে লাগলেন !
স্বামী চলে যাওয়ার পরে বিছুক্ষণ পরে খাটের নিচ থেকে বেরিয়ে এলেন !
খাটের উপর একটি চিঠি পেলো..
লেখাটা পড়ে অবাক হয়ে গেলেন !
তাতে লেখা ছিলো…
পাগলী বউ একটা ! চলে গেছো ভালো কথা। খাটের নিচে তোমার পা গুলো দেখা যাচ্ছে কেনো।
আমি তো তোমার জন্য ই কাজকর্মে যাই..তোমার সুখের জন্য ই তো এত কষ্ট করি ! তবু তুমি ভুল বুঝো !
আমি তোমায় অনেক ভালোবাসি !
আমি কাউকে ই ফোন করিনি !
বাজার থেকে মাংস আনতে যাচ্ছি…
তুমি খাবার রেডি করতে থাকো ..
তারপর একসাথে বসে খাবো কেমন !
আমার পাগলী একটা !
উম্মাহ্ !
লেখাটি দেখে স্ত্রী বসে পরলেন … কাদতে শুরু করলেন ..
কি ভুলটা ই না করতে যাচ্ছিলেন তিনি !
বি.দ্র : ভালোবাসায় সন্দেহ নয় ..বিশ্বাস রাখতে হয় !
একটা ছেলে যত কষ্ট করে তা তার প্রিয়জনকে সুখী রাখার জন্যই করে !।।।।।।।।।।
—————————————–
পোষ্টটি কেমন লাগল জানাবেন
#############################################################
~~সম্মান~~
চার বছরের ছেলে রোহানের হাত ধরে এক কাপড়ে স্বামীর বাসা থেকে ঝগড়া করে নেমে আসলাম।রাত তখন সবেমাত্র একটার কাটায়।চোখে আঁধো ঘুম নিয়ে রোহান প্রশ্ন করলো আমায়,”মামনী,আমরা কোথায় যাচ্ছি?”প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার প্রয়োজন মনে করলাম না।কারণ,কোথায় যাচ্ছি সেটা নিজেও জানিনা।এতরাতে না আছে কোন রিক্সা না কোন মানুষ।শুধু ল্যাম্পপোষ্টের নিবু নিবু আলোয় ঝকমক করছে রাতের প্রহরীগুলো।কিছুক্ষণ হাঁটার পর রোহান বলল,”মামনী আর হাঁটতে পারছিনা”।আমি সযত্নে কোলে তুলে নিলাম কেননা,এই বাচ্চাটাই এতদিন বেঁচে থাকার প্রেরণা যুগিয়েছে।আমি হাজারবার মরতে গিয়েও ফিরে এসেছি এই বাচ্চাটার জন্য।রোহানের মায়াময় মুখ যেন আমায় প্রতিটা পদক্ষেপে বাধা দিচ্ছে।কিন্তু আর নয়।জীবন একটাই।আমি যদি তিল তিল করে মরে যায় তাহলে রোহানের দেখবে কে? যদি রোহানের জন্য বেঁচে থাকা হয় তাহলে ভালভাবেই বেঁচে থাকবো।
****
বাবা – মা বংশীয় এবং আভিজাত্য দেখে আমার অমতে বিয়ে দিয়েছিলেন।আমি কখনও চাইনি তারা কষ্ট পান তাই তাদের ইচ্ছাতেই নিজেকে বলিদান দিলাম।মনে মনে সৃষ্টিকর্তাকে বলেছি,”তুমি যা করো ভালর জন্যই করো”।প্রথম যেদিন বৌ সেজে এসেছিলাম সেদিন আমাকে ঐ মানুষটা বলেছিল, “আমার নাকি তার বৌ হওয়ার কোন যোগ্যতা নেই,আর কোনদিন সে আমাকে বৌয়ের সম্মান দেবে না”কারণটা সেদিন বুঝিনি।কেননা,আমার সর্বশক্তি দিয়ে চেষ্টা করেছি সবার মন যুগিয়ে চলার।কিন্তু একার পক্ষে সম্ভব না যদি সবাই অল্প একটু করে ত্যাগ স্বীকার না করে।কিছুদিন পর জানতে পারলাম আমার স্বামী মাদকাসক্ত।প্রতি ঘন্টায় এক প্যাকেট করে সিকারেট লাগে তার।বন্ধুদের সাথে মদ খেয়ে বাসায় ফিরে।কোন এক মেয়ে তাকে প্রেমেরছ্যাকা দিয়েছে তারপর থেকে সিকারেট, মদ এসব নেশা করে।আমার একটু ভুল হলেই মারধোর,গালি, চড়,থাপ্পড়, বের হয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়।কেননা,তার কাছে মেয়েমানুষ মানেই বিরক্তিকর। পরিবারের চাপে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছে।একদিন কাঁদতে কাঁদতে মাকে এসব ফোনে বললাম।মা আমাকে বললেন,”ছেলেদের একটু আধটু নেশা টেশা থাকে,আর একটা মেয়ের পক্ষে একটা ছেলেকে নিয়ন্ত্রণ করা অসম্ভব কিছু না,আর এমন কিছু করো না যাতে তোমার বাবার সম্মান নষ্ট হয়”।
******
যেখানে জীবনই বাঁচে না সেখানে সম্মান দিয়ে কি করবো।তারপরেও আপ্রাণ চেষ্টা করেছি নেশা থেকে ফিরিয়ে আনার।কিন্তু, দিনদিন অত্যাচার বেড়ে যেতে লাগলো।এরইমধ্যে রোহান এলো।ভাবলাম ছেলের জন্য সবকিছু ছেড়ে ভাল হবে কিন্তু না,তাও হল না।ছেলের সামনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ,মারধোর করে যেতে লাগল।সাহস করে একদিন বাবাকে বললাম,”আমি এখানে আর থাকতে চাই না”। বাবা উত্তরে বলেছিলেন,”মেয়েদের বাবার বাড়ি স্থায়ী নয়,স্থায়ী স্বামীর বাড়ি,নিয়ম এটাই মা!বড় নিষ্টুর নিয়ম”।সেদিন কথাগুলো বুকের মধ্যে তীরের মত বিধেছিল, শুনেই কিছুটা থমকে গিয়েছিলাম।কেননা,যারা আমাকে বিশটা বছর ধরে লালনপালন করলো,এত ভালবাসায় গড়ে তুললো।সামান্য তিনটা অক্ষরে আমি পর হয়ে গেলাম? আমার পরিচয় মুছে গেল?এটা কেমন নিয়ম।যে নিয়মে ভালভাবে বেঁচে থাকার কোন স্বাধীনতা নেই?
*****
এদিকে ঝগড়া লাগলেই স্বামী বলে,”এটা আমার বাড়ি,আমার বাড়িতে আমি যা ইচ্ছা তাই করতে পারি,”।হ্যা, তারই তো বাড়ি।কিন্তু আমার? আমার বাড়ি কোনটা? আমার আশ্রয়স্থল কোথায়? যেখানে নিশ্চিন্তে থাকতে পারি।যেখানে মনখুলে কিছুটাসময় কাটাতে পারি।খুব দরকার আমার।একটা আশ্রয়স্থল।একটা ছোট্র পৃথিবী,একটা সুন্দর জীবন,একটু ভালথাকার কেন্দ্রস্থল।
হাঁটতে হাঁটতে ভাবছি রাতটুকু কোথায় কাটানো যায়।এই ইটের শহরে মানুষের প্রাণ বলতে কিছু নেই।তবুও যদি দেখা মিলে।ফোন করলাম চাচাত বোন শিউলীকে।এদিকে কোথায় যেন সদ্য বিয়ে হয়েছে তার।পরিবারের ঝামেলার কারণে বিয়েতে আসতে পারিনি।যাই হোক, বিপদে পড়েছি,এতকিছু ভাবলে চলে না।ফোন বেজেই চলেছে কিন্তু ধরছে না।তারপর ফোন করলাম বান্ধবী নিলাকে।হোস্টেলে থাকে।প্রায় ছয়বছর আগে দেখা হয়েছিল কোন এক বাসের ভিড়ে।অপরিচিত নং দেখে ফোন তুললো।
*বললাম,নিলা!আমি পল্লী।চিনতে পারছিস?দশম শ্রেনীতে একসাথে পড়তাম।
*কথাটা শুনে চমকে গেল।তুইই…! এতরাতে? কত খুজেছি তোকে!কি খবর? সব ভাল তো?”
*আমি বললাম,”দেখ এতকিছু বলার সময় নেই রে,একটু থাকার জায়গা হবে?খুব বিপদে পড়েছি।শুধু আজকের রাতটা কাটানোর মত”
*কথাটা শুনে কন্ঠটা চেন্জ হয়ে গেল।বলল,”আমি কোন ঝামেলা ঘাড়ে নিতে পারবো না,আমার নিজের একটা সম্মান আছে”।
*অথচ,আমরা একসময় এক প্লেটে ঝালমুড়ি খেতাম।বলার সাথে সাথে ফোনটা কেটে দিল।
*তারপর ফোন করলাম হিমেলকে।একসময় দুজন দুজনকে ভালবেসে প্রাণ বিসর্জন করেছি,আকাশের চাঁদ হাতে এনে দেওয়ার বৃথা কথা দিয়েছিল হিমেল।রিং হতেই ফোন *তুলল।রাতজাগার অভ্যাস আছে তার।
—-হেলো!কে বলছেন?(ভারি কন্ঠে)
—–আমি পল্লী! হিমেল।খুব বিপদে পড়েছি। একটু কি সাহায্য করবে?
—–আমি কি সাহায্যের দানবাক্স খুলে বসেছি?
—–প্লিজ হিমেল।ভালবাসার দাবি নয়,বন্ধুত্বের দাবি রেখেই বলছি।
—–যে আমাকে ঠকিয়ে ভাল থাকার জন্য চলে গেছে তাকে কিসের জন্য সাহায্য করবো বলতে পারো?
—–ঠকিয়েছি? আমি না তুমি?বিয়ের আগের দিনও তোমাকে বলেছি হিমেল, চল আমরা পালিয়ে যাই।তুমি বলেছিলে,পালিয়ে বিয়ে করলে নাকি সম্মান নষ্ট হবে তাই সেদিন আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলে।তখন কোথায় ছিল তোমার ভালবাসা?
—–দেখো,পল্লী। মাঝরাতে এসব নিয়ে আর কথা বাড়াতে চাইনা।সময় বদলে গেছে।সবকিছুরই পরিবর্তন এসেছে।আমার স্ত্রী,কন্যার কাছে আমার সম্মানটা বড় জিনিস পল্লী।সো প্লিজ, বিরক্ত করো না।
কিছু বলার আগেই ফোনটা কেটে দিলো।
*********************************
কিছুক্ষণ পর দেখি শিউলী ফোনটা ব্যাক করলো।বলার সাথে সাথে রাজি হয়ে বাসার ঠিকানা দিল।একটু সস্তির নিঃশ্বাস ফেলে এগিয়ে গেলাম।ওর বাসায় পৌছানোর পর আমাকে একটা অন্ধকার রুমে নিয়ে গিয়ে বলল,”এখানে থাক,ভোর হওয়ার আগে এখান থেকে চলে যাবি!জানিস তো,নতুন বিয়ে হয়েছে, সম্মান বলে একটা কথা আছে আর আমার স্বামী এসব পছন্দ করে না”আমি ওর কাঁধে হাত রেখে বললাম “চিন্তা করিস না”।প্রায় ঘন্টা খানেক পর আবছা আলোয় ওর স্বামীর আসার আভাস পেলাম।বুঝতে বাকি রইলো না যে,সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে ছেড়ে কেন ঐ পুরুষ মানুষটা পাশ কাটিয়ে উঠে এসেছে।গোপনে আবার ছেলেকে কোলে নিয়ে বের হয়ে এলাম।রাত তখন তিনটা।কোথায় যাবো আমি এই রাতে।শিউরে উঠলাম যখন দেখলাম কিছু মাতাল মদ খেয়ে রাস্তা বসে সিকারেট টানছে।হয়তো ওরা আমাকে দেখতে পেলে কুকুরের মত ছিড়ে খাবে।আর আমার বাচ্চাটাকে ওরা মেরে ফেলবে।নেশাখোরদের দ্বারাই সবই সম্ভব।সম্মানের কথা ভেবেই রোহানকে বুকে জড়িয়ে সর্বশক্তি দিয়ে দৌড় দিলাম।
*************************
কিন্তু এভাবে আর কতক্ষণ পালিয়ে বেড়াবো।মেয়েদের নেই কোন ঠিকানা,নেই সম্মান না আছে কোন নিরাপত্তা তার চেয়ে মরে যাওয়ায় ভাল।কিন্তু,কিভাবে মরবো আমি?ট্রেনের নিচে মাথা দিয়ে মরে যাবো নাকি নদীতে ঝাঁপ দিবো।আর বেঁচে থাকা সম্ভব না।কেননা,পৃথিবীতে সম্মানটাই বড় জিনিস।সম্মানটাই চলার পথের শক্তি। বাবা মা সম্মানের জন্য মানিয়ে নিতে বলেছিলেন আর আজ সম্মানের জন্য পালিয়ে বেড়াচ্ছি,মরতে বসেছি।কেননা,আজ আমি ভাল যাই কিছু করি না কেন সবাই শত্রুতার নজরে দেখবে,আমার দোষ ত্রুটি নিয়ে কথা উঠবে আর তখনই সম্মানটা জড়িয়ে থাকবে।
********************
কিন্তু রোহান? ওর কি দোষ?ও কি কখনও আমাকে ক্ষমা করতে পারবে?ছেলেটিকে একপলক দেখে নিলাম।চাঁদের আলোয় ছেলেটিকে কত নিষ্পাপ লাগছে।আমি এই নিষ্পাপ বাচ্চাটাকে কিভাবে মেরে ফেলবো?বাঁচানোর জন্যই তো নিয়ে এসেছি,সুন্দর একটা ভবিষ্যৎ দেওয়ার জন্যই সবকিছু ফেলে চলে এসেছি।বুকে আলতো আদরে জড়িয়ে কপালে একটা চুমু খেয়ে বললাম,”রোহান,তোর জন্যই বেঁচে থাকবো বাবা”,কিন্তু তুই কখনও কষ্ট দিস না,তাহলে যে বেঁচে থাকাটা বৃথা হয়ে যাবে রে”!
***********
ছোট্র ছেলেটি সেই রোহান আজ অনেক বড় হয়েছে।বাবার মত সিকারেটের নেশায় আসক্ত।প্রেম করে কোন এক মেয়েকে বিয়ে করে তুলেছে।মেয়েটির জন্য সে সবকিছু করতে রাজি।যদি অসম্ভব হয় তাও সম্ভব করবে সে।এমনটাই কথা দিয়েছে।মেয়েটি ভালবাসার দাবি নিয়ে রোহানকে বলেছে,”আমাকে তাড়িয়ে দিতে,আমার জন্য থাকতে তার বেশ অসুবিধা হচ্ছে”।তাই রোহান আজ আমাকে বের করে দিচ্ছে তার নাকি কিছু করার নেই,এটা তার ভালবাসা আর সম্মানের প্রশ্ন।আর আমি অবাক হয়েই ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছি,আমার বেঁচে থাকার অনুপ্রেরণা,আমার সংগ্রামের সফলতা আজ তুচ্ছ প্রমাণ করে দিয়ে চলে গেল রোহান।
********
হ্যা,সত্যিই পৃথিবীর নিয়মটা বড়ই নিষ্টুর।যতই ভালবাসো না কেন প্রয়োজন আর সম্মানের জন্য মানুষ সবকিছু করতে পারে।স্বার্থের জন্য, ভালথাকার জন্য,কাউকে ভাল রাখার জন্য সবাই সবকিছুই করতে পারে।অসম্ভব কিছু নয়।আজ আমার চোখে কোন শ্রাবনের বর্ষা নেই, আছে শুধু চৌত্রের খরা।ধুঁ, ধুঁ মরুভূমির মত খাঁ খাঁ রোদ্দুর।হয়তো পৃথিবী আমাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে,কখনও মনে রাখবেনা,ইতিহাসও স্বরণ করবে না।কিন্তু,এই শহরের প্রতিটা ধুলাকনা আজ সাক্ষী, “পৃথিবীতে সম্মানটাই আসল”।
—–পাপড়ি মনি