কাবাডি জাতীয় দলে খেলা নারী ফুটবলার যে
স্পোর্টস ডেস্ক : সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলের ফাইনালে মাসুরা পারভীনের গোলেই নেপালকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু কেবল ফুটবলই নয়, বিভিন্ন খেলায় মাসুরার পারদর্শিতা অবাক করে দেওয়ার মতোই। সাতক্ষীরার এই মেয়ে ফুটবলে দেশের জার্সি তো পড়েছেই, পাশাপাশি সে হ্যান্ডবল, ভলিবল, কাবাডি ও অ্যাথলেটিকসে জাতীয় প্রতিনিধিত্ব করেছে। ২০১৩ সালের বাংলাদেশ গেমসে মাসুরা উল্লেখিত প্রতিটি খেলাতেই অংশগ্রহণ করে। ২০১৫ সালের এসএ গেমসে তার সামনে একই সঙ্গে মেয়েদের জাতীয় ফুটবল দল ও কাবাডি দলে খেলার সুযোগ আসে। কিন্তু মাসুরা বেছে নেয় কাবাডিকে। দেশের হয়ে রুপার পদকও জিতেছে সে।
নিজের সামর্থ্যের প্রতি অগাধ আস্থা মাসুরার। ২০১৫ সালে জাতীয় ফুটবল দলে সেরা একাদশে জায়গা পাওয়া নিয়ে কিছুটা সংশয় থাকার কারণেই সে কাবাডি দলকে বেছে নিয়েছিল। তাঁর আস্থা ছিল নিজের ওপর। অনুশীলন কম হলেও তার কাবাডি দলে জায়গা পেতে অসুবিধা হয়নি। কোর্টে নেমে নিজের সেরা খেলাটাই খেলতে পেরেছিল সে।
আগেই বলা হয়েছে ২০১৩ সালে শেষ অষ্টম বাংলাদেশ গেমসে হ্যান্ডবল , ভলিবল , কাবাডি ও অ্যাথলেটিকস সহ মোট চারটি খেলায় অংশগ্রহণ করেছিলেন বর্তমান জাতীয় দলের এই ফুটবলার। তবে এখন ফুটবলই তাঁর ধ্যান- জ্ঞান ও রুটি রুজি। ফুটবলের সুবাদেই বিজেএমসিতে চাকরি হয়েছে। সেখান থেকে পাওয়া বেতনেই চলে মাসুরার সংসার। ভাই নেই , তিন বোনের মধ্যে মাসুরাই সবার বড়। বাড়িতে অসুস্থ বাবার ওষুধ থেকে শুরু করে গৃহস্থালির সব প্রয়োজনই মেটাতে হয় তাকে।
আর আট-দশটা মেয়ের মতোই পারিবারিক শেকল ভেঙে খেলাধুলায় আসা মাসুরার। প্রতিবেশী সাবিনা খাতুনকে ( জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক) দেখেই চতুর্থ শ্রেণি থেকে ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন দেখত মাসুরা। এ জন্য মায়ের কম বকুনি খেতে হয়নি তাঁকে। তবুও থামেনি সে। খেলা চালিয়েই গেছে। এখন সেই বকুনি দেওয়া মাই পত্রিকা, টেলিভিশনে চোখ রাখে মেয়ের খেলার খবর জানান জন্য। প্রতিবেশীরা আগ্রহভরে উপভোগ করে এলাকার মেয়ের খেলা। নেপালের বিপক্ষে সাফ অনূর্ধ্ব-১৮ ফুটবলের ফাইনালে গোল করার পর সবার কী যে আনন্দ।
অবাক করা বিষয় হলো প্রায় চার বছরের ফুটবল ক্যারিয়ারে আগে কখনোই গোল করতে পারেনি মাসুরা। কিন্তু গোলটা সে এমন সময় পেল যখন একটা গোলের জন্য হাপিত্যেশ করে মরছিল পুরো দল। মনিকা চাকমার ফ্রি কিক থেকে হেডে সেই গোলটি করে মাসুরা। গোলটি নিয়েও তাঁর রসিকতা,‘কীভাবে যে মাথায় বল লাগালাম, আমি নিজেও জানি না।’
প্রতিভাবানরা আসলে এমনই হয়! প্রথম আলো